সবকিছুই চুকিয়ে গেছে গালিব! বাকি আছে শুধু মৃত্যু!!
জীবনের চাওয়া আর বাসনাগুলো জন্মাবার আগেই হত্যা করতে হবে। ঝামেলা বিহীনভাবে বাচার এটাই প্রথম শর্ত। সত্য কথা বলা যাবেনা। যদি একান্তই বলতে হয় তবে নিজের কাছে অস্ফুট স্বরে বলবেন। দেয়ালে বা বাতাসে শুনলেও সমস্যা হবে।
মাটির দিকে তাকিয়ে হাঁটার অভ্যাস আপনাকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে রপ্ত করতে হবে। সেটা যত তাড়াতাড়ি রপ্ত করতে পারবেন ততোই কম হোচট খাবেন। চোখের সামনে কোন অন্যায় হতে দেখলে পাশ কাটিয়ে যেতে হবে। খুব খারাপ লাগলে চোখ বন্ধ করে রাখবেন। আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে গেলে এই অন্যায়ের পরবর্তী শিকারটা যে আপনি হচ্ছেন তার শতভাগ নিশ্চয়তা আছে।
আপনার প্রথম ও একমাত্র কাজ হচ্ছে নিজের অস্তিত্বকে রক্ষা করা। সম্ভবনার ভাবনা, মতামতের ভাবনা, ভবিষ্যতের ভাবনা সব কিছুকে শিকেয় তুলে প্রতিনিয়ত আপনাকে ভাবতে হবে কিভাবে আপনি টিকে থাকবেন।
আপনি জানেন এই লোকটি মাস্তান পোষেন, চাঁদাবাজিকে নিয়ন্ত্রণ করেন, সরকারি সম্পত্তি দখল করেন তথা সহজভাবে বলতে গেলে সমাজের যাবতীয় অপকর্মগুলো তাঁর পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ অবদানে সম্পন্ন হয়। তবুও আপনার তাঁকে কোন কিছু বলা উচিত হবেনা। সর্বদা তার সম্মুখে নতমুখে কথা বলবেন, আগে সালাম দিবেন।
কারণ একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনিই আপনার ছেলের চারিত্রিক সনদপত্র প্রদান করবেন। আপনি বা আপনার ছেলে সমাজবিরোধী কিনা তা নির্ধারণ করবেন। ছেলের চাকরির তদবিরে আপনি তার কাছেই যাবেন। মহোদয় প্রসন্ন হলে আপনার ছেলের জন্য সুপারিশ করতেও পারেন। আপনার কলেজ পড়ুয়া বিবাহযোগ্য তরুণী কন্যাটি পাড়ার বখাটে ছেলেদের উৎপাতে বাড়ি থেকে বের না হতে পারলে আপনি তার কাছেই নিরাপত্তা চাইবেন।
মহোদয় প্রসন্ন হয়ে তার সোনার ছেলেদের থামতে বললে আপনার মেয়ে এ যাত্রা এ জ্বালা থেকে নিস্কৃতি পেতেও পারেন। তবে এ বিষয়ে সার্বিক কোন নিশ্চয়তা নেই। ভবিষ্যতে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার একটা সম্ভাবনা সব সময় থেকেই যাবে।
এমন অভিজ্ঞতার পরে আপনি হয়তো ভাবতে পারেন আমাদের সমাজ বা রাষ্ট্রব্যবস্থা আপনার প্রতি অতিমাত্রায় নিষ্ঠুর আচরণ করছে। না, মোটেও তা নয়।
গণতান্ত্রিক সমাজ এবং সমাজের মৌলিকত্ব-কে টিকিয়ে রাখতে আপনার নিজের স্বার্থেই আপনাকে এসব প্রথা বা নিয়ম মেনে চলতে হবে। সার্বিক বিবেচনায় সমাজ বা রাষ্ট্রের আরো কঠোর হওয়ার সুযোগ থাকলেও আমাদের সদাশয় মহোদয়রা কিন্তু সে সুযোগটি নেননি। বরং আপনার প্রতি সদয় হয়ে এই দুর্মুল্যের বাজারেও সম্পুর্ণ বিনামূল্যে আপনাকে স্বপ্ন দেখার একটা সুযোগ করে দিয়েছেন। তবে সুযোগ বা অধিকারের সাথে দায়িত্ব বা সচেতনতার বিষয়গুলো সব সময়ই জড়িত থাকে। ঠিক সে কারণে ফ্রিতে বিলানো স্বপ্ননামক বস্তুটিকে ধারণ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।
যেমন এখন স্বপ্ন দেখতে হলে আপনাকে ঠিক সেই স্বপ্ন দেখতে হবে যা বর্তমান নেত্রীর বাবা আপনার জন্মের পূর্বে বা আপনি যখন শিশু ছিলেন তখন দেখে গেছেন। স্বপ্নের বাইরের অবয়বে জলতরঙ্গের কিছুটা ছোয়া অবশ্যই থাকতে হবে। আর যদি ক্ষমতার পালাবদল হয় এবং ভিন্ন মেরুর মহোদয়রা ফিরে আসেন তবে আপনার স্বপ্নটাকে পুরোপুরি বদলে দিতে হবে। তখন স্বপ্নের চোখে লাগাতে হবে রঙ্গিন সানগ্লাস আর বাইরের অবয়বে দিতে জলপাই রঙ্গের ছোয়া।
দেশের একজন সুনাগরিক হিসেবে তথা গণতান্ত্রিক বোধকে সমৃদ্ধ করার মানসে, সর্বোপরি নিজের স্বার্থেই আপনি বর্ণিত বিষয়গুলো-কে ধারন, প্রতিপালন এবং লালন করবেন আমাদের সমাজব্যবস্থা আপনার কাছ তাই আশা করে।
আশা করি সমাজ ও রাষ্ট্র এ বিষয়ে আপনার কাছ থেকে সর্বাত্মক সহায়তা পাবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।