সব হৃদয়ের গল্প বলি, রংধনুটাকে রং করি, নির্ঘুম চোখের কথা নিয়ে বৃষ্টির মত ঝরে পড়ি
"তোলাপোকা " অতি পরিচিত একটি শব্দ। আমরা সবাই এই জীবটিকে বহুবার বহু স্থানে দেখেছি। অনেকে আছেন যে তেলাপোকা দেখলে ম্যারাথন দৌড় লাগান অথবা চেঁচিয়ে এলাকার লোক জড় করেন। আমিও প্রায় এই পর্যায়ে পড়ি।
এবার মূল ঘটনায় আসা যাকঃ
আমি ২০০৭ সাল থেকেই উপরের Canon iP1700 ব্রান্ডের প্রিন্টার ব্যবহার করে আসছি নিশ্চিন্তভাবে।
মাঝে মাঝে শুধু কালি চেন্জ করার প্রয়োজন হলে প্রিন্টারের উপরের কাভার খুলে কালি ইনজেকশনের মাধ্যমে রিফিল করতাম। এভাবে আমি ৭ দিন আগেও এই প্রিন্টার দিয়ে প্রিন্ট আউট করেছি। এরপর গতঃরাতে ১২ টার দিকে একটা কাজের জন্য প্রিন্ট করা জরুরী হয়ে পড়ে। তো নিয়মনুযায়ী প্রিন্টার অন করলাম আর তখনই দেখলাম প্রিন্টারের সবুজ বাতির পরিবর্তে লাল আলো জ্বলছে আর নিভছে। বুঝতে পারলাম হয়ত কোন সমস্যা হয়েছে।
আবার পিসি রিস্টার্ট দিয়ে নতুন করে প্রিন্টার ওপেন করলাম তাতেও দেখি কোন কাজ হয় না। এরপর প্রিন্টারকে খুলে নিয়ে পর্যবেক্ষন করতে বসলাম। প্রিন্টার নিয়ে উল্টো করে নাড়া দিতে গিয়ে দেখি প্রিন্টারের ভিতর থেকে এক ধরনের ছোট ছোট কালো পদার্থ ফ্লোরে পড়ছে। আমি ভাল করে দেখে বুঝতে পারলাম যে এটা তেলাপোকার বিষ্ঠা। ভাবলাম তেলাপোকা মহাশয় হয়তো আমার প্রিন্টারকে তার টয়লেট হিসেবে ইউজ করেছেন।
তাই ময়লাগুলো পরিষ্কার করে আবার প্রিন্টার অন করে দেখি অবস্থা আগের মতই। এবার আমি একটু ঘাবড়ে গেলাম। কি জানি কি হয় পিসি সম্পর্কে তো মোটামুটি ভালই ধারণা আছে কিন্তু প্রিন্টার সম্পর্কে ধারণা যে অতি ক্ষুদ্র। এখন কি করি ???
ভাবছি আর প্রিন্টার নিয়ে নাড়াচাড়া করছি... হঠাৎ প্রিন্টারের ডান পাশে দেখলাম এক মহাশয় (তেলাপোকা) জগিং করছেন। তো লেগে গেলাম এই মহাশয়কে ধরার কাজে।
কিন্তু আমাকে ফাঁকি বারবার তিনি প্রিন্টারের ভিতরের দিকে ঢুকে যাচ্ছেন। ভাল মুষ্কিলে পড়লামতো বাবা .. এখন কি করি। এদিকে আমি নিজে কোনদিন প্রিন্টার পুরো খুলিনি। এদিকে এসব করতে করতে রাত ৩.১৫ বেজে গেল কিন্তু তেলাপোকা ও সরি মহাশয় আর বাহিরে আসেন না। শুধু মাঝে মাঝে উঁকি দিয়ে দেখেন যে আমি আছি কি না !
তো আর কি করা অনেক কষ্টে প্রিন্টারটি নাট বল্টু খুলে ফেললাম ..
এবার তুই পালাবি কোথায়
শালার তোলাপোকা আমারে এত রাইত পর্যন্ত জাগায়া রাখছস"-- মনে মনে এসব বলছি।
অবশেষে খুলে তেলাপোকা মহাশয়কে বের করে দিলাম তার পটল তুলে।
এরপর খুশি মনে আবার সব ঠিক করে প্রিন্টার অন করলাম। কিন্তু বিধি বাম। আবার সেই সমস্যা রেড লাইট। মেজাজ তখন প্রচন্ড খারপ হয়ে গেল,, বলি এত কষ্ট কি সব বৃথাই গেল ??
হঠাৎ শুনি মসজিদ থেকে ফজরের আযান দিচ্ছে।
হায় হায় কি অবস্থা এই তোলাপোকার জন্য আজ রাতের ঘুম হারাম হল !!
তখন প্রিন্টারের চিন্তা বাদ দিয়ে ঘুমুতে গেলাম।
সকাল ১১ টায় ঘুম থেকে উঠে নাস্তা খেয়ে চললাম মাল্টিপ্লান কমম্পিউটার সিটিতে। সেখানে গিয়ে দেখি শুধু ক্যাননের একটা শোরুম আছে।
তাদের হাতে প্রিন্টারটি সপে দিয়ে বললাম রোগীর রোগ ভাল করেন। তারা প্রিন্টারটি তখন খুলল এবং
হঠাৎ আবারও একটি তোলাপোকা বের হল!!
আমি তো পুরা হতভম্ব হয়ে গেলাম এটা কি করে সম্ভব ?? এরপরে আমার জন্য আরো চমক অপেক্ষা করছিল।
একটা বের হতে না হতেই ও পাশ থেকে দেখি আরো একটা বের হচ্ছে। তখন শোরুমের লোকটি প্রিন্টারের মধ্যে ACI স্প্রে দিতে লাগল .... ওমা এ দেখি দেখি তেলাপোকার মিছিল বের হচ্ছে !!!
দ্রুত দোকান এর বিভিন্ন স্থানে তেলাপোকা ছোটাছুটি করতে লাগল। তখন এই শোরুমের লোক জন + পাশের শোরুমের লোকজন মিলে তেলাপোকা মারতে লেগে গেল। সে এক সেইরকম মজার দৃশ্য।
যাই হোক এর রোগীর(প্রিন্টার) অবস্থা সম্পর্কে ডাক্তার (শোরুমের লোক) বললেন এর হার্ট (মেইনবোর্ড) এবং লিভার (ইন্ক কার্টিজ) নষ্ট হয়ে গেছে তেলাপোকার অবাধ আক্রমনের ফলে।
আমার প্রিন্টারটির দাম নিয়েছিল ৩১০০/-
আর এখন ঠিক করতে খরচ হবে মোট ৩৫০০/-
অথচ এখন ৩২০০/- টাকায় ক্যানন আইপি১৯৮০ মডেলের প্রিন্টার পাওয়া যাচ্ছে যা আই.পি ১৭০০ এর থেকে অনেক গুন ভাল।
তো এখন কি করা যায় তা নিয়েই ভাবছি।
আপনারা একটু সু পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করেন।
আর হ্যা তেলাপোকা থেকে প্রিন্টার সাবধান !!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।