অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক, জ্যোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই
সেদিন আমাদের বাসায় একজন আপা আর একজন আন্টি আসলেন। পুতুল আপার নতুন একটা মেয়ে বাবু হয়েছে। বাবুমনিটাকে দেখতে আমি আর আম্মু হাসপাতালে গিয়েছিলাম, তখন এই এতটুকুন ছিলো। সাত মাস পরে দুইদিন আগে আবার দেখলাম। অবাক কান্ড, এতটুকুন বাবুটা অনেকখানি বড় হয়ে গেছে! পট করে আমার কোলে চলে আসলো, কান্নাকাটি মোটেও করেনি।
তবে ফায়েজা মনিটা অনেক পাজি আছে, আমি ওকে কোলে নিয়ে বসলেই কান্না শুরু করে দিতো। সবাই তখন টুকটাক নাস্তা করছে, এমন সময় আমি ঐটারে কোলে নিয়ে সোফার উপর বসলাম, পাশেই ছিলো ওর আম্মু ব্যাগ। সে অনেক কষ্টে আছড়ে পাছড়ে ব্যাগটাকে ধরতে পারলো, আর ওমনি টেনেটুনে ব্যাগ মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে চাইলো!
ভাবটা এমন যে সবাই খাচ্ছে আমাকে কেনো কেউ কিছু খেতে দিচ্ছে না-ব্যাগটাই মনের দুঃখে খেয়ে ফেলতে চাইলো।
সবাই তখন মাগরিবের নামাজ পড়ছিলো, ঐটারে কোলে নিয়ে আমি বসে আছি। বাবুটার তখন এত্ত খিদে পেয়েছে যে ও তার হাত খাওয়া শুরু করছে আর একটু পর ওয়া ওয়া করে কান্না করে।
আর আমি একটু পর পরই মুখ থেকে হাত সরিয়ে দিচ্ছি ওর। এক সময় পিচকিটা আমার দুগাল নরম দুহাত দিয়ে ধরে হা করে আমার নাক আর গাল খেতে লাগলো। এটা কি আদরের ঠেলা নাকি খিদার চুটে করলো বুঝতে পারলাম না। তবে, অনেক সুইট লাগছে বাবুটারে। আমি মনে মনে বললাম- যা খেয়ে ফেল তুই আমারে।
এক সময় কাঁদতে কাঁদতে, আর আমাকে, ওর হাত খেতে খেতে টায়ার্ড হয়ে ঘুমিয়ে গেলো আমার কোলেই
(মাত্র ২০-২৫ মিনিট কোলে নিয়ে ছিলাম, এতটুকুতেই দেখি হাত ব্যাথা হয়ে গেছে। বুঝছি বাচ্ছা টেইক কেয়ার করা আমার কাজ না )
*****************************************************************
সেদিন আরেকটা আপার সাথে গেলাম শপিং করতে। আপার একটা মেয়ে আছে সুফিয়া- সেও গেলো। প্রায় তিন বছর বাচ্চাটার বয়স। পুরা ঘাড় তেরা।
একদমই আমার কাছে আসে না।
আমি যখনই সুফিয়াকে আমার কাছে আসতে বলি কিংবা বাবু বাবু কথা বলতে চাই ওর সাথে, সে তখনি বলবে "যা"। যার মানে দাঁড়ায় "ভাগ, তুই গেলি?" (যা টা সে এমন ভাবে বলে যে মনে হয় যাহ বলছে) শপিং-এ যাবার আগে সে ওর মাকে বলছে "কুন, আম্মু কুন" মানে সে কুন আইসক্রিম খেতে চায়। আমাদের বাসায় আইসক্রিম ছিলো, তো আমি বললাম, চলো আমার সাথে, আইসক্রিম দিবো। যাই হোক, সে আমার হাত ধরে কিচেনে গেলো, আমি আইসক্রিম ওর হাতে ধরিয়ে দিলাম।
আমিতো মনে মনে ভাবতে লাগলাম যাক সুফিয়ার সাথে এখন ভাব হয়ে গেছে। ওমা! একদম না। আইসক্রিম নিয়ে সে ওর মার কাছে এসে বসে রইলো, আমাকে মোটেও পাত্তা দেয়না। ইচ্ছে করছিলো এই জীবন আর রাখবোই না, কচু গাছ থাকলে সোজা গিয়ে গলায় দড়ি দিতাম।
এরপরে গাড়িতে সে আর আমি পিছনের সিটে বসলাম।
ওর আম্মু গাড়ি চালাচ্ছিলো, ওর হাতে একটা পুতুল ছিলো। সে এখন আর পুতুল দিয়ে খেলবে না তো সে ওর আম্মু ডাকছিলো পুতুল দেয়ার জন্য। ওর আম্মু ড্রাইভ করতে করতে কোনমতে বললো যে পাশে রাখতে পুতুলটা আর সেও রাখবে না, আম্মু আম্মু ডাকতেই লাগলো। যাইহোক আমি বললাম যে, আমাকে পুতুলটা দাও, আমি রেখে ব্যাগে রেখে দিচ্ছি। আবারও সে আমাকে বলে "যা!" কেমন লাগে! আমি কি ওর পুতুলটা নিয়ে যাবো নাকি!!! ওর আম্মু না থাকলে ঐটারে সেদিন আমি সাইজ করতাম।
ওরা চলে যাবার আগে আমি বললাম ওকে-থাকো আমাদের এখানে। তোমার আম্মু চলে যাক।
ও বলে "আম্মু বাসা যাবো" মানে আম্মুর সাথে বাসায় চলে যাবে। থাকতে চায় না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।