যে কোন প্রয়োজনে স্বরণ কইরেন: hopelessduniya@yahoo.com এই আইডি তে..এড কইরেন...
সৌন্দর্য মন্ডিত আমাদের এই বাংলাদেশ তা আমরা, সবাই জানি এবং তাই বলি । কিন্তু মন থেকে মনে হয় আমরা অনেকেই দেশের বাইরে যেতে পছন্দ করি। কিন্তু আমাদের এই ছ্ট্টো দেশেই যে কত সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে তা আমাদের অনেকেরই অজানা । তবে আমি আজ বাংলাদেশের যে রূপের বর্ননা করতে যাচ্ছি তা মনে হয় কারও অজানা নয় । আর এর রূপ সম্পর্কে আমরা মোটামুটি সবাই জানি।
তা হল কক্সবাজার । এটি চট্টগ্রাম বিভাগে অবস্থিত বাংলাদেশের তথা পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর স্বাস্থ্যকর স্থান । এটি চট্টগ্রাম থেকে ১৫২ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থিত। যার আয়তন ২৪৯২ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় ১ মিলিয়ন । পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত হল আমাদের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।
যা দৈর্ঘ্যে ১২০ কি.মি.। বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতি বছর পর্যটকগণ শুধুমাত্র এই কক্সবাজারের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য ছুটে আসেন বাংলাদেশ। ‘‘ওয়াটার ফেস্টিভ্যাল” নামক একটি উৎসব অনুষ্ঠিত হয় এখানে প্রতি বছর ১৩-১৮ ই এপ্রিল । শুধু সমুদ্র সৈকত নয় । কক্সবাজারে আছে দর্শনীয় আরো স্থান যা মানুষের মনকে দোলা দেয় ।
সে সমস্ত দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অন্যতম হল- হিমছড়ি, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালি, সোনাদিয়া, রামুর বৌদ্ধ মূর্তি, কুতুবদিয়া বাতিঘর ইত্যাদি । কিন্তু সুন্দর এই কক্সবাজার এক সময় এত সুন্দর আর স্বাস্থ্যকর ছিল না। এই পুরো জায়গাটি ছিল বড় বড় মশায় পরিপূর্ণ এক গভীর জঙ্গল। কোথাও ছিল না কোন সমতল স্থান। সমগ্র এলাকার আবহাওয়াটা ছিল বন্য ।
এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ই আজ হয়ে গেছে সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর স্থান। আজকের এই কক্সবাজারের ইতিকথা বড় চমৎকার।
১৭৯৭ সাল যখন এদেশে ছিল ইংরেজ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাজত্বকাল। ক্যাপ্টেন কক্স নামক একজন ইংরেজ, বার্মার রাজদরবারে কোম্পানির দূত হিসেবে কাজে নিযুক্ত হোন। বার্মায় তথন অসংখ্য বাঙ্গালি বসবাস করত এবং তারা বিভিন্ন চাকুরি, চাষাবাদ এবং ব্যবসা- বাণিজ্যে রত ছিল।
বার্মার আকরাকা এলাকায় হঠাৎ করে ভীষন গোলোযোগ দেখা দেয় সেখান থেকে বাঙ্গালি বিতারিত করা শুরু হয়। সেই সমস্ত বিতাড়িত বাঙ্গালি বর্তমান কক্সবাজার, উখিয়া, গুনডুম প্রভুতি এলাকাতে এসে কোন রকম আশ্রয় নেয়। এই সব শরণাথীদের দেখাশোনা করা এবং ত্রান সমগ্রী বিতরণের জন্য সেই বার্মার ইংরেজ দূত ক্যাপ্টেন কক্স কোম্পানির নির্দেশে নিজেই ছুটে যান। তখন এই সাগরের পাড়ের নাম কক্সবাজার ছিল না, এর নাম ছিল ফালকিং ।
প্রথমেই বলা হয়েছে যে, সুন্দর এই কক্সবাজারের পরিবেশ তখন কতটা প্রতিকুল ছিল মানুসের বসবাসের জন্য ।
ঠিক সেই কারণেই কক্স সাহেব দীর্ঘদিন থাকার পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন । কারণ এরকম প্রতিকুল পরিবেশে থাকার কোন অভ্যাস তাঁর ছিল না । কিন্তু তবুও তিনি শরনার্থীদের ফেলে কখনও চলে যান নি। ক্রমে তাঁর স্বাস্থ্য আরও ভেঙ্গে পড়ে এবং অবশেষে ১৮০২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কক্সবাজারেই মারা যান। এবং তাঁরই নামানুসারে আজকের এই সুন্দর স্থানটির নাম হয়েছে কক্সবাজার।
কিভাবে যাবেন ঃ
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভরপুর এই কক্সবাজারের সৌন্দর্য অনেকেই উপভোগ করেছেন। কিন্তু সবারই সেখানে যাবার সুযোগ হয়ত বা হয়নি। এখনো যারা যান নি বা যারা যেতে ইচ্ছুক তারা কিভাবে যাবেন সে সম্পর্কে কিছু তথ্য দিতে চাই। রংপুর থেকে যাত্রা শুরু করলে চট্টগ্রাম হয়ে সরাসরি কক্সবাজার যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে রংপুর থেকে চট্টগ্রাম বাসযোগে ভাড়া লাগবে মাত্র ৪৫০/- থেকে ৬৫০/- এবং চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজার বাসযোগে ভাড়া লাগবে মাত্র ১৫০-৬০০/- (প্রায়) ।
যদি কেউ রংপুর থেকে ঢাকা হয়ে যেতে চান সেক্ষেত্রে ভাড়া একটু বেশি লাগবে। এক্ষেত্রে রংপুর থেকে ঢাকা বাসযোগে ভাড়া লাগবে ২৫০-থেকে ৫০০/-, তারপর ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বাসযোগে ভাড়া লাগবে ২৫০/- থেকে ৬৫০/- এবং এরপর চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি পৌছে যাবেন কক্সবাজার । এছাড়া ঢাকা থেকেও সরাসরি ও কক্সবাজার যেতে পারেন। তবে অনেকে একটু আরামদায়ক যাত্রার জন্য যেকোন স্থান থেকে কক্সবাজার যাওয়ার জন্য বাস বা মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে যেতে পছন্দ করেন। গন্তব্যস্থলে পৌছে থাকার ব্যপার নিয়েও খুব উদ্বিগ্ন হওয়া, বিভিন্ন পর্যটকগণের জন্য সেখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের আবাসিক হোটেল, খরচ হিসেবে যার মূল্য প্রতি রাত ২০০/- থেকে ২০০০/- মধ্যে ।
*ভাড়া সর্ম্পকিত যে কোন তথ্যাবলি পরিবর্তনযোগ্য ।
সূত্র: সায়েন্স-জোন ২য় এডিশন
অঃটঃ সায়েন্স-জোন ৪র্থ এডিশনের জন্য লেখার আহবান করা হচ্ছে আপনিও আপনার মূল্যবান লেখা আমাদের পত্রিকায় দিয়ে আমাদের পথ চলায় সাহায্য করতে পারেন
http://www.science-zone.tk/
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।