আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিবিরের নৃশংসতা মারুফ কি পঙ্গু হয়ে যাবে?

দেশটা মানুষে রক্ত দিয়ে স্বাধীন করছে কথা বলার সময় বা ফেসবুক ষ্ট্যাটাস দেবার সময় আইন অনুযায়ি চলার জন্য নয়, আঁর ষ্ট্যাটাস আঁই দিয়ুম, যেনে খুশি য়েনে দিয়ুম, আঁই কেনে ষ্ট্যাটাস দিয়ুম ইয়ান কি তুরারে কয় দন পরিবুনা !!!

শিবির ক্যাডাররা ড্রিল মেশিন দিয়ে শরীরের হাড় ফুটো করে দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামুদ্রিক বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র কাজী মারুফুর রহমানকে। স্থায়ী পঙ্গুত্বের শংকা নিয়ে বর্তমানে রাজধানীর ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন ছাত্রলীগের এই কর্মী। তার ডান পা কেটে ফেলতে হতে পারে বলে আশংকা করছেন চিকিৎসকরা। শিবিরের এই নৃশংসতা প্রথম শুরু হয়েছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েই। তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদের মাথা ফুটো করে দেওয়া হয়েছিল সেবার।

বর্তমানে তিনি অপ্রকৃতস্ট জীবনযাপন করছেন। গত ১৪ মে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ ও শিবিরের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সময় শিবির ক্যাডাররা টার্গেট করে মারুফের ওপর হামলা চালায়। তার ডান পা ও বাম হাত ভেঙে দেওয়া হয়। রড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে দুই পায়ের একাধিক জায়গায় গর্ত করা হয়। ড্রিল করে ক্ষত করা হয়েছে তার দুই পায়েই।

আঘাত করা হয়েছে তার মাথায়। সেখানে ৪টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। শরীরজুড়ে আঘাতের চিহ। মারুফের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মহাজোটের বিজয়ের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে তিনিই প্রথমে আবাসিক হলে ওঠেন। গত ২ জানুয়ারি মারুফ তার আবাসিক হলের (শহীদ আবদুর রব) ১১৭ নম্বর কক্ষে ওঠেন।

মারুফের সাহস দেখে শিবির ক্যাডারারও তখন বিস্মিত হয়। তার ওপর হামলার উপলক্ষ খুঁজতে থাকে। গত ১৪ মে টার্গেট করে মারুফের ওপর হামলা চালায় শিবির ক্যাডারা। ছাত্রশিবিরের একক আধিপত্য থাকা সত্ত্বেও হলে ওঠায় শিবির নেতাকর্মীরা মারুফকে টার্গেট করে। এর আগে ১৯৯৯ সালে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ে শাহজালাল হলের ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ আবুল কালাম আজাদের ওপর নৃশংস হামলা চালায় শিবির।

ড্রিল করা হয় তার মাথায়। ওই ঘটনায় সে সময় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। তার পরিবার সহৃত্রে জানা যায়, সেই ঘটনার পর বর্তমানে আজাদ মানসিক রোগী। এছাড়া সম্প্রতি তার ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়েছে। আজাদের ওপর হামলার কারণও ছিল হলে ওঠা।

আজাদই প্রথম কোনো নেতা, যে দলীয় কিছু নেতাকর্মী নিয়ে শাহজালাল হলে উঠেছিল। গতকাল ট্রমা সেন্টারের ৩০২ নম্বর কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, মারুফের নিথর দেহ হাসপাতালের সাদা চাদরের ওপর পড়ে আছে। মাথার কাছেই নীরবে কাঁদছেন তার মা রওশন আরা। মারুফের পায়ের কাছে রাখা দুটি বালিশেই ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। হাত ও পায়ে ব্যান্ডেজ বাঁধা।

ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে মারুফ নিচু কণ্ঠে বলেন, ওরা (শিবির ক্যাডাররা) রুমে ঢুকেই আমার মুখে কাপড় চেপে ধরে। রুমের বাইরে কয়েকজন পিস্তল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। প্রথমে আমার দু’পায়ে রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। যন্ত্রণায় আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না। এরপর শুরু হয় রড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে পায়ে গর্ত করা।

তখন আমি প্রায় অজ্ঞান। কখন আমার মাথায় আঘাত করা হয়েছে তা মনে করতে পারছি না। মনে হচ্ছিল মৃত্যু আমাকে ডাকছে। আমার ওপর হামলার সময় ওদের কয়েকজনের হাতে ড্রিল মেশিনের মতো কিছু যন্ত্র দেখেছি। হামলার পর মারুফকে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

মেডিকেল কলেজের শিবির ক্যাডারদের প্রতিরোধের মুখে সেখানে চিকিৎসা হয়নি মারুফের। পরে তাকে চট্টগ্রামের সেন্ট্রাল কোয়ালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় গত ১৭ মে তাকে ট্রমা সেন্টারে নিয়ে আসা হয়। টাকা জোগাড় হওয়ার পর গত বুধবার ট্রমা সেন্টারে ৫ ঘণ্টাব্যাপী তার অস্ত্রপচার হয়। এখনও তার ডান পা দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার মা জানান, চলতি মাসেই ছেলেটার ফাইনাল পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। টাকার জোগাড় না হওয়ায় অস্ত্রপচার করতে বেশ কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হয়। এখন পর্যন্ত আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিদিন ৬ হাজার টাকার ইনজেকশন লাগে। ট্রমা সেন্টারের ডাক্তার কামরুজ্জামান সমকালকে বলেন, এটি খুবই সিরিয়াস কেস।

প্রাথমিকভাবে অস্ত্রপচার সফল হয়েছে। তবে এখনও সে ঝুঁকির মধ্যে আছে। তার পা কাটতে হবে কি-না এখনই বলা যাচ্ছে না। আমরা তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি। ছাত্রশিবিরের বক্তব্য : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ১৪ মে মধ্যরাতে ছাত্রলীগ কর্মী মারুফের ওপর হামলাকে শিবিরের পহৃর্বপরিকল্কিপ্পত নয় বলে দাবি করেছে চবি ছাত্রশিবির।

গতকাল শুত্রক্রবার শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি মোঃ জাকির হোসাইন সমকালকে বলেন, কেউ যদি দেয়ালে ঘুষি মেরে হাত ফাটিয়ে দেয়ালের দোষ দেয়, তা সমর্থনযোগ্য নয়। ১৪ মে শিবিরের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে ছাত্রলীগের ক্যাডাররাই। আমাদের দলীয় কর্মীরা সে হামলা প্রতিরোধ করেছে মাত্র। ১৯৯৯ সালে ছাত্রলীগ শাহজালাল হল শাখার সভাপতি আবুল কালাম আজাদের ওপর হামলার ধারাবাহিকতায় এ হামলা হলো কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৯৯৯ সালে ছাত্রলীগের কোন নেতার কী হয়েছিল তা আমার জানা নাই। ছাত্রলীগের বক্তব্য : ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন সমকালকে বলেন, মারুফ চবি ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী।

সে রব হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তাকে সে রাতে অস্ত্র ঠেকিয়ে রব হলের শিবির সভাপতি নেছার ও সোহরাওয়ার্দী হলের শিবির সভাপতি মনসুরের নেতৃত্বে বহিরাগত ক্যাডাররা মারাত্বকভাবে আহত করে। এক পর্যায়ে তাকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। সে রব হলে ছাত্রলীগের প্রকাশ্য রাজনীতি করার কারণে শিবিরের চক্ষুশহৃল হয়ে ওঠে। সূত্র: http://www.shamokal.com/details.php?nid=114190


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.