আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নারীবাদ নিয়া কয়েক পাতা -৩

কাগু ক্যান স্টার্ট অ্যা ফায়ার ইউজিং জাস্ট টু আইস কিউবস

প্রথম পর্ব দ্বিতীয় পর্ব পণ্যায়িত হৈয়াও সামাজিক ও মানসিক শোষন থাইকা নারীর বাইর হৈয়া আসাকে যারা ধনাত্নক হিসাবে নিতে চান, তাগো যুক্তি হৈল, একবার বাইর হৈয়া আসলে পরে আস্তে আস্তে সম্মান ও মর্যাদা নিয়া ভাবা যাইব । এখন যেই অবস্থা, সেই অবস্থা পুরাটা একলগে চাইলে আম ছালা দুইটাই যাওনের সম্ভাবনা ব্যাপক । অন্যদিকে যারা এইটারে ঋণাত্নক প্রভাব হিসাবে মনে করেন তাদের যুক্তি হৈল, সম্মান ছাড়া মুক্তি মূলত মুক্তি না বরং একটা ইল্যুশন এবং পুরুষতান্ত্রিকতার একটা মায়াময় ছলনা ছাড়া আর কিছুই না । অর্থাৎ এই মেকি মুক্তি মূলত নারীবাদের আন্দোলনরে বাইন্ধা রাখারই একটা প্রচেষ্টা । ব্যাপারটা উপাত্ত দিয়া যাচাই করার মত , অথবা উপাত্ত থাইকা উল্লেখযোগ্য কোন ট্রেন্ড বাইর করার মত যথেষ্ট পরিমাণ উপাত্ত হাতে নাই ।

যার মূল কারণ প্রক্রিয়াটি এখনো অল্পবয়স্ক । যার বয়স অনেকটা টেকনোলজিকাল বা তথ্য বিপ্লবের সমান । স্পেকুলেশন ছাড়া এইখানে নিরপেক্ষতার খুব বেশি জায়গা নাই । পণ্যায়িত, মুক্ত নারী নিয়া নারীবাদীগো ভিতরের দুইটা অস্বস্তিকর ইস্যু হৈল পর্নোগ্রাফি এবং পতিতাবৃত্তি । পর্নোগ্রাফি নিয়া আবার পশ্চিমের নাক উঁচা নারীবাদী এবং প্রাচ্যের নারীবাদীগো ভিতেরেও মতভেদ আছে ।

দুই গ্রুপ অবশ্য পর্নোগ্রাফি একটা বিকৃতি এইবিষয়ে একমত । কিন্তু পশ্চিমের নাক উঁচা নারীবাদীরা বিশেষঃত ইন্টারনেট পর্নের সুপার মহামারির আগ পর্যন্ত প্রাচ্যের অতিরিক্ত যৌন রক্ষণশীলতা এবং অবদমনকেই পর্নোগ্রাফি শিশুনির্যাতনসহ সবরকমের বিকৃতির একমাত্র কারণ বৈলা দাবী করতেন । কিন্তু প্র্যাকটিকাল ডাটা থাইকা দেখা যাইতাছে মোটামুটি অবাধ যৌনতার পশ্চিমে যৌনতা সংক্রান্ত ট্যাবু এবং অবদমনগুলা সৈরা যাওয়ার সাথে সূচকীয় গতিতে বাড়ছে পর্নোগ্রাফি এবং পতিতাবৃত্তি । অনেকটা ধর্মবেত্তাদের , স্লিপারি স্লোপ ভবিষ্যৎবাণীই সঠিক হৈতে চললো । অর্থনৈতিক অগ্রগতির সাথে পতিতাবৃত্তি বৃদ্ধির পরিসংখ্যানভিত্তিক কোন সম্পর্কস্থাপনপ্রচেষ্টা হৈছে কিনা জানা নাই ।

তবে গত শতকের শেষ অর্ধাংশে রকেট বা ট্রেন গতিতে অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করা কিছু দেশে পতিতাবৃত্তির বিস্তার এবং সামাজিক কমিউনিকেশন গ্যাপের বিস্তার এই দুইটা নিয়া একটা স্পেকুলেশন মডেল খাড়া করানি যায় । এইটারে স্বাভাবিকই ধৈরা নেয়া হয় যে, নগরায়ন এবং নগর জীবনের বিস্তারের সাথে ছোটখাট সংযুক্ত সমাজের ধারণাটা আস্তে আস্তে ভাইঙা পড়ে । বড় শহরে মানুষের বিচ্ছিন্নতা নিয়া বড় বড় সামাজিক রিসার্চ, সরকারি উদ্ধুদ্ধকরণ আন্দোলন এইগুলা হামেশাই দেখা যায় । অন্তর্মুখী বা সময়হীন মানুষ যেইটা একসময় কেবল পুরুষদের মধ্যেই দেখা যাইত, তারা স্বাভাবিকভাবেই বড়, সম্পর্কবিহীন , কাজ-বেইসড সমাজে দীর্ঘমেয়াদি কমিটমেন্টের মাধ্যমে সঙ্গী খুঁইজা নিতে ব্যর্থ হয় । যার ফলাফল , মাল মাথায় উঠলে খানকিপাড়া গমন ।

যদিও পশ্চিমা সমাজের কিছু নারীবাদী এখনো এইটার একমাত্র কারণ হিসাবে যৌনতার বিরুদ্ধে সামাজিক বাধারেই একমাত্র কারণ হিসাবে ধৈরা বৈসা আছেন । দুঃখের বিষয় এখনো এইখাতেও স্পেকুলেশন এর বেশি কিছু করা যাইতাছে না । পূর্ব পশ্চিমের নারীবাদীদের ভিতরে আরেকটা বড় ধরণের মতদ্বন্দ আছে । পশ্চিমের নারীবাদীদের মধ্যে পূর্বের সমাজ কাঠামো নিয়া তৃণমূল পর্যায়ের জ্ঞান ধরতে গেলে নাই বল্লেই চলে । কিন্তু মিডিয়া ও বইপুস্তকে পূর্বের নারীদের সমস্যা নিয়া কথা বলতে গেলে এইটা খেয়াল থাকেনা অনেকেরই ।

মিশরের বিখ্যাত নারীবাদী নওঅল এল সাদওয়ি তার 'হিডেন ফেস অফ ইভ' বইয়ের ইংরেজি সংস্করণের ভুমিকায় এই বিষয় নিয়া বেশ একহাত ঝাইড়া নিছেন । ঐ পুরা ভূমিকাটারে বাংলায় অনুবাদ কৈরা দেয়া গেলে সবচে ভালো হয় । তবে এক লেখার ভিতরে আরেকট উপন্যাস ঢুকাইয়া দেয়ার চাইতে মূল কথাটা বলা যায় । নওঅলের মূল কথা হৈল সুপারফিশিয়াল সমাজ জ্ঞান নিয়া যেসব পশ্চিমা নারীবাদী আরব বা এশিয়ার দেশগুলার পুরুষতান্ত্রিকতা নিয়া সমালোচনা করেন , তাদের কাছে এশিয় নারীর পেটের ভিতরে ভাত আছে কি নাই , তার চাইতে তার পেট বুক দেখা যাইতাছে কি যাইতাছে না সেইটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ হৈয়া যায় । অর্থাৎ আরব নারী ঠিকমত পুষ্টি পাইতাছে কি পাইতাছে না তার চাইতে তারা বেশি মাতামাতি করে তারা কয়হাত বোরখা পরতে বাধ্য হৈতাছে বা তাদের মুখ দেখাইতে পারতাছে কি পারতাছে না এইটা নিয়াই ।

ভাবটা এমন যে, ইরানের নারী যদি খালি পেটে নিদারুন শারিরীক অসুস্থতা নিয়াও, হাফপ্যান্ট আর ব্লাউজ পইরা রাস্তায় বিনা বাধায় হাঁটতে পারে তাইলেই তারা ইরানের নারীমুক্তি হৈছে, মিশন একমপ্লিশড ঘোষণা দিয়া দিবো । কিন্তু সত্যিকার অর্থে হাফপ্যান্ট ব্লাউজ পইরা রাস্তায় হাঁটার স্বাধীনতা না থাকার চাইতে হাজার হাজার গুণ বিশ্রি এবং ভয়ঙ্কর সমস্যা প্রতিনিয়ত ফেস করতে হয় ইরান/এশিয়া/আরবের নারীদের । কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য, পরিবারে বৈষম্য, পুষ্টিহীনতা, ইচ্ছামত শিক্ষা-গ্রহণের অধিকার না থাকা, মূলত এইসব সমস্যাই , আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু, তাদের কাছে যারা , এশিয়ার বিস্তীর্ণ ভুগোলে , তৃণমূল পর্যায়ের নারীর খবর রাখে তাদের কাছে । পশ্চিমের নারীবাদীদের এইধরণের অগভীরতার একটা কারণ , পূর্বের যেসব একটিভিস্ট, সংস্কারবাদী, নারীবাদীদের সাথে তাদের যোগাযোগ হয় , তারা মূলত পূর্বের এলিট গোষ্ঠীর হওয়ার কারণে । অর্থাৎ পশ্চিমের নারীবাদী পূর্বের নারীর যেই সমস্যার কথা অহরহ শুনতে পায়, সেইটা মূলতা পূর্বের এলিট নারীর সমস্যা , সাধারণ নারীর সমস্যা না ।

পূর্বের এলিট নারীকে , পুষ্টিহীনতা, শিক্ষাগ্রহণের অধিকার নিয়া বৈষম্য পোহাইতে হয় না । কারণ বিত্ত এবং সামাজিক স্ট্যাটাসের সেই পর্যায়ে তারা নাই । তাদের সমস্যা অনেক-ক্ষেত্রেই মূলত সেই বুক পেট দেখাইতে না পারার সমস্যাই । তবে আশার কথা, পূর্বের অনেক নিচু পর্যায় থাইকা উইঠা আসা নারীবাদীরাও আস্তে আস্তে লাইমলাইটে উইঠা আসতাছে । যার ফলে পশ্চিমের নারীবাদীরাও আস্তে আস্তে ভিতরের খবর পাওয়া শুরু করছে ।

আয়ান হারসি আলী বা বাংলাদেশের তসলিমা নাসরীন , এই ধরণের প্রচেষ্টার অগ্রবর্তীনি ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.