কাগু ক্যান স্টার্ট অ্যা ফায়ার ইউজিং জাস্ট টু আইস কিউবস
নারীবাদের আন্দোলন ব্যাপকতার দিক থাইকা ঝিমাইয়া পড়ছে । বিশ্বব্যাপী পরিবেশ আন্দোলন, সন্ত্রাসবাদ, অর্থনৈতিক সমস্যা এইগুলার চাপে নারীবাদ নিয়া উচ্চকিত হৈলে , যুগের হাওয়া ধরতে না পারার কারণে লোকের বাঁকা চোখের সামনে পড়তে হয় বৈলা সম্ভবত । ষাইটের দশকের সেই দিনগুলা এখন অনেকটা স্বপ্নের মত হৈয়া পড়ছে।
অনেক মতবাদের মতই নারীবাদের প্রথম ধাপেই বিরোধীরা যেই জিনিস নিয়া জল ঘোলা করে সেইটা হৈল এর সংজ্ঞা ও পরিসীমা নিয়া । যদিও যারা সিরিয়াসলি চিন্তা করেন এইসব নিয়া তাদের কাছে সংজ্ঞাটা ক্লিয়ার, কিন্তু কুসংস্কারে তুষ্ট বিশাল জনগোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়াশীলতা শুরু হয় সংজ্ঞাকে আক্রমণের মধ্য দিয়াই ।
"বর্তমান সমাজ এবং মূল্যবোধ কাঠামোতে, মানুষ হিসাবে নারীর যেইসব অধিকার এবং সুবিধা পাওয়ার কথা সেইগুলা ঠিকমত দেয়া হৈতাছে না । এর বিপরীতে তার উপর যেইসব দায়িত্ব পড়ার কথা তার চাইতে বেশি পরিমাণ দায়িত্ব তার উপর চাপাইয়া দেয়া হৈছে, বিনা সুবিধায় । অতএব এই ব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার , এবং দায়িত্ব ও অধিকারের সীমা পুনঃনির্ধারণ করা দরকার" । সোজা কথায় নারীবাদের সংজ্ঞা হৈল এই । এইখানে একটা শব্দ হাইলাইট করা দরকার সেইটা হৈল *মানুষ* হিসাবে ।
এখনকার পরিস্থিতিতে মানুষের অধিকারের সীমা নিয়া তাত্তিক পূর্ণতায় মোটামুটি আসা গেছে বলা যায় । এইজন্যই মানুষের জন্য যেই অধিকার বরাদ্দ বা যেই মাপকাঠিতে বরাদ্দ সেইটা নারীর ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করার কথা আসে । অথবা অধিকারের সীমা নিয়া পূর্ণতা না আসলেও, এখন যেই সীমা আছে, সেই সীমার মধ্যেই নারী পুরুষ দুইদলকেই যদি বৈষম্যবিবর্জিতভাবে বিচার করা হয়, তাইলেও , বর্তমান কাঠামোতে নারীর উপর সুবিচার করা হৈতাছে না , এইটা নিশ্চিত ।
যেকোন সংস্কার বা নতুন মতবাদের তিনটা মৌলিক ধারা থাকতে হয় ।
১ . বর্তমান ব্যবস্থার সমস্যা কোথায় ।
২ . এই সমস্যার উৎপত্তির কারণগুলার বিশ্লেষণ এবং সমাধানের জন্য করনীয় কি ।
৩ . সমস্যা সমাধানের পর টোটাল সিস্টেমের অবস্থা কি রকম হবে তার মডেল প্রস্তাবনা ।
এই ধারা তিনটা বিস্তৃতি অতিব ব্যাপক । সামাজিক, অর্থনৈতিক থাইকা শুরু কৈরা প্রযুক্তিভিত্তিক গবেষণাতেও নতুন তত্ত, মতবাদ, পেটেন্টের এই তিনটা মৌলিক ধারা ।
বর্তমানের সমাজ এবং মূল্যবোধ ব্যবস্থায় নারীর সমস্যার ক্ষেত্র বলতে গেলে অসীম পরিমাণ ।
এই দিকটি সাধারণত নারীবাদের বিরোধী কট্রর মুল্লারা পর্যন্ত স্বীকার কৈরা নেয় । সামগ্রিক অপরাধের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ নারীর বিপরীতে ঘটে । মূলত নারী এইটার প্রতিরোধ করতে পারবে না এই দৃষ্টিভঙি থাইকা । জোরপূর্বক যৌনদাসত্বের স্বীকার পুরুষরাও যে হয় না সেইটা বলা যাবে না, কিন্তু এইজাতীর মোট অপরাধের পার্সেন্টেজ বিবেচনায় নারীর উপর সংঘটিত অংশ, পুরুষের উপর সংঘটিত অংশের কয়েক ডিজিট বেশি হৈব । শ্রম ব্যবস্থায় বৈষম্য, সামজিক সুবিধায় বৈষম্য, মৌলিক ব্যক্তিঅধিকার স্বীকার কৈরা না নেয়া এইজাতীয় উদাহরণ দেয়া যায় হাজার হাজার ।
এইধরণের নারীর বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ এবং বৈষম্যের সাথে সাথে আরেকটি যন্ত্রণা হৈল তার উপর অবাঞ্চিৎ কিংবা অবৈতনিক , আলগা দায়িত্ব চাপানো । বাইরে শ্রম বিক্রি করুক বা না করুক , ঘরের সমস্ত কাজও তার করতে হৈব, পুরুষের উদ্ভট আবদার মানতে হৈব, ভারসাম্য রক্ষা করতে হৈব এইজাতীয় হাবিজাবি দায়িত্ব অনেক আগে থাইকাই তার উপর চাপানো । যথাযথ সুবিধার বিনিময়ে এইগুলা পালন করতে সাধারণত আপত্তি থাকার কথা না । কিন্তু তার উপর এইগুলা চাপানো হৈতাছে তার বায়োলজির উপর ভিত্তি কৈরা, সুযোগ-বিনিময়ের উপর ভিত্তি কৈরা না । যন্ত্রণাটা এইখানে ।
এইখান পর্যন্ত নারীবাদী এবং মোটামুটি বুঝদার নারীবাদ-বিরোধির সাথে সংঘর্ষ তেমনেকটা নাই । সংঘর্ষের শুরু এর পর থাইকা । নারীর উপর বৈষম্যের মূল কোথায়, সেইটা কিভাবে দূর করতে হৈব এইটা নিয়া । এইখানে বিরোধিদের সাথে যেমন ঝামেলা তেমনি নিজেদের মধ্যেও বিভক্তি । এই পয়েন্টে আইসা নারীবাদীরা মোটা দাগে দুইটা অংশে ভাগ হৈয়া যায় ।
ক . মেরামতবাদী বা কাঠামোবদ্ধ নারীবাদী
খ . আমূল নারীবাদী
মেরামতবাদী নারীবাদের মূল কথা হৈল : চলমান সিস্টেমের থিওরী ঠিকাছে, সমস্যা হৈল তার যথাযথ প্রয়োগে । এই বড় গ্রুপের আওতায় বুরখা , টুপি পড়া ইসলামি নারীবাদি যেমন পড়ে তেমনি শান্তিপ্রিয় পলায়নপ্রিয় মধ্যপন্থী, নারীবাদরে তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে না করা নাস্তিকও পড়ে । কোরান, বাইবেল, মনুসংহিতা ঘাইটা ঘাইটা জীবন কাবজাব কৈরা দেয়া মেরামতবাদীরা কৈতে চায়, পুস্তকের লেখা ঠিকাছে মাগার মানুষ সেই পুস্তকের কথামত চলতাছেনা, এই জন্যই সমস্যা । পুস্তকে কুনো ভুল নাই । এদেরকরে এক অর্থ ক্লীব বা মাউরা নারীবাদীও বলা যায় ।
কাঠামোর প্রতি এদের অপরিসীম প্রেম এবং পরিবর্তনের প্রতি ব্যাপক আলস্য মূলত এদের চালিকাশক্তি ।
এদের মাউরা বলার কারণ হৈল পাহাড়প্রতিম প্র্যাকটিকাল উপাত্তের বিপরীতেও পশ্চাৎদেশ দিয়া পাহাড় ঠেলার অর্থ একটাই হৈতে পারে, যেই সিস্টেমে তার অভ্যস্ত সেইটা একশভাগ ঠিকাছে এইটা নিয়া তারা অলরেডি নিশ্চিত । প্র্যাকটিকাল উপাত্ত নগণ্য পরিমান হৈলে সেইখানে এইধরণের এপ্রোচরে তত্তের প্রতি ভালোবাসা দিয়া চালাইয়া দেয়া যায় , যেইটা অনেক বড় চিন্তাবিদ বা বিজ্ঞানিরাও কইরা থাকেন মাঝে মধ্যে । আইনিসটাইনও করছিলেন ।
ইউরোপ আম্রিকা জুইড়া পাব্লিক বাইবেল আর জীবনরে আলাদা কৈরা দেয়ার পরই সেইখানে নারীর মুক্তি , পুরাপুরি না হৈলেও, আসছে ।
বাইবেল খুইজা খুইজা নারী অধিকারের সাপোর্ট বাইর করতে গেলে আরো পাঁচশ বচ্ছরেও পশ্চিমা নারী আজকের অবস্থানে পৌঁছাইতে পারত না । মুসলিমগো মাঝে এখন এই ধারার মাউরা নারীবাদীরা বেশ একটিভ । একদিক দিয়া এদের একটা ভালো গুন স্বীকার না করলেই নয় যে এরা অন্তত নারীর অবস্থার উন্নতি চায় । কিন্তু কোরান ঘাঁইটা বাইর করতে গিয়াই যত সমস্যা । যেখানে জিনিস নাই সেইখানে যত বড় বিশেষজ্ঞ সন্ধানকারীই যাক না কেন লাভ নাই ।
প্র্যাকটিকাল ডেটা থাইকা এইটা ক্লিয়ার , যেইদেশ যত বেশি ইসলামের পথে , সেইদেশে নারীর উপর নির্যাতন তত বেশী । পাকিস্তানে শতকরা ৮০ ভাগ মহিলাই পুরুষ সঙ্গী/স্বামীর হাতে নিয়মিত মাইর খায় । ছৌদি বা ইরানের কথা বলাই বাহুল্য । এই দেশগুলাই সবচে কাছাকাছি আছে ইসলামিক সমাজ-ব্যবস্থার । অবশ্য তাগো এছলাম 'সত্যিকারের ' এছলাম না ।
কোনটা যে সত্যিকারের সেইটা খোদ আল্লাও জানে কিনা সন্দেহ আছে ।
আমূল নারীবাদীদের আক্রমণ টোটাল নর-নারী ডাইনামিকসের ভিত্তিগুলারেই । যেই ভিত্তিগুলা দাঁড়াইয়া আছে কিছু রেটোরিকের উপর । বলা বাহুল্য সেইসব রেটোরিকের জন্ম কোন যৌক্তিক প্রক্রিয়া বা বৈজ্ঞানিক গবেষণা কিংবা নিরপেক্ষ বিচারের ফলাফল থাইকা না । ওভারঅল গোটা বিশ্বে এখনো নর-নারী সম্পর্ক সংক্রান্ত মূল্যবোধগুলার প্রধান অংশটা আসে ধর্মগুলা থাইকা ।
এইকারণে আমূল নারীবাদীদের আক্রমণে সাধারণত প্রথমেই আসে ধর্মের কথা । তবে এইটা ছাড়াও বিভিন্ন লোকায়ত কুসংস্কার, কিছু আউলা দার্শনিকের রেক্টামজাত ফর্মুলার প্রভাবও কম না ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।