আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যুক্তির ফ্যালাসি, কুযুক্তি বা নষ্টামিসমূহ-৬

কাগু ক্যান স্টার্ট অ্যা ফায়ার ইউজিং জাস্ট টু আইস কিউবস

পর্ব-১ পর্ব-২ পর্ব-৩ পর্ব-৪ পর্ব-৫ ১৩ : আপিল টু কমন প্র্যাকটিস : (দশজনে করে যাহা তুমিও করিবে তাহে ) এটি সাধারণত বিচার্য কোনো ব্যাক্তি বা সংঘের কর্মকাণ্ডকে ডিফেন্ড করার জন্য ব্যাবহৃত হয়ে থাকে । একটি কাজ, কোনো সমাজে মোটামুটি দৃষ্টিগ্রাহ্য সংখ্যার লোকজন, সাধারণভাবে করে থাকে বলে কাজটিতে খারাপ কিছু নেই বলে দাবী করা হচ্ছে আপিল টু কমন প্র্যাকটিস ফ্যালাসি । সমাজে অনেক অনৈতিক কাজই প্রচলিত ছিল, এবং এখনো আছে । শুধুমাত্র প্রচলিত বলে কাজটিকে ত্রুটিহীন বলে দাবী করা যায় না । হাদিসের বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনার আলোচনায়, এ কুযুক্তিটি প্রায়ই আসে ।

তখনকার সমাজে এগুলো স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল, অতএব এগুলোতে কোনো সমস্যা নাই । যুগের প্রচলিত খারাপ কাজগুলাতে যদি কোনো সমস্যা নাই থাকতো তাহলে খারাপ কাজগুলাতো কখনোই খারাপ বলে গন্যও হতো না । ১৪ : গিল্ট বাই এসোসিয়েশন ( তুই শয়তানের ভাই, তুই চুপ থাক ) ইতিহাসের কোনো কুখ্যাত ব্যক্তি প্রস্তাবনার পক্ষে ছিল, শুধুমাত্র এই কারণে প্রস্তাবনাটি ভুল বলে দাবী করা, হচ্ছে "শয়তানের ভাই " ফ্যালাসি । তুমি কইতাছ ঈশ্বরের অস্তিত্তের পক্ষে কোনো প্রমান নাই, হিটলার স্টালিনও একই কথা কইছে অতীতে, তুমি তাদের পর্যায়ে নাইমা গেলা । তুমার সব কথা ভুল।

এই জাতীয় ধুনফুন সিরিয়াস আলোচনায় সাধারনত আসে না । কিন্তু তাও বলে রাখি । সত্য কারো স্বীকার করা না করার উপর নির্ভর করে না । হিটলার বলেছিল পৃথীবি গোল, সেটা হিটলার অনেক খারাপ লোক বলে মিথ্যা হয়ে যাবে না । ১৫ : গোল্ডেন মিন ফ্যালাসি (উত্তম নিশ্চিতে চলেন অধমের সাথে, তিনিই মধ্যম চলেন যিনি পশ্চাতে) প্রস্তাবনা এবং তার বিপরীত প্রস্তাবনার মাঝামাঝি কোনো অবস্থানে সত্য অবস্থান করে বলে, ' ক্ষেত্র নির্বিশেষে' , সমস্ত প্রস্তাবনার জন্য , এরকম মনে করা হচ্ছে গোল্ডেন মিন ফ্যালাসি ।

বা মধ্যপন্থীর কুযুক্তি বলা যায় । অনেক অবশ্য একে মেরুদন্ডহীনের যুক্তি বলে থাকেন । কিন্তু আমার মনে হয়, দ্বান্দিক বস্তুবাদকে ভালোমত না বুঝে জীবনের সব ক্ষেত্রে ঢালাওভাবে প্রয়োগ করতে যারা চান, তারা এই ফ্যালাসিতে আক্রান্ত হন বেশী । সব সময় মেরুদন্ডহীনতার কারনে নয় । অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান প্রস্তাবে দ্বান্দিক বস্তুবাদ যেমন চমৎকার সহায়ক, তেমনি নৈতিক বা প্রাকৃতিক সত্যের অনেক ব্যাপরেই এর প্রয়োগ অযৌক্তিক ও সত্য সত্যই প্রস্তাবকের মেরুদন্ডহীনতার প্রকাশ ।

দাস-প্রথা খারাপ বলে কিছু লোক, আবার দাস-প্রথা ভালো বলে কিছু লোক, অতএব দাস-প্রথার ভালো দিক এবং খারাপ দিক দুটোই আছে । সুতরাং দাস-প্রথা পুরোপুরি বিলুপ্ত করা ঠিক হবে না । শুনেই বুঝা যাচ্ছে কি ধরনের আখাম্বা কুযুক্তি এটি । এই কুযুক্তিটি আবার অনেক মডারেট মোছলেমের জীবন সংক্রান্ত ভয়কে মোহ দিয়ে মাখিয়ে রাখার একটি অবলম্বন। নাস্তিকরা খোদার বিপক্ষে এবং মূর্তির পক্ষে, আস্তিকরা খোদার পক্ষে এবং মূর্তির বিপক্ষে, অতএব তারা মধ্যপন্থী, দুজনেরই একটি একটি করে দাবী মেনে নিয়ে তারা খোদার পক্ষে এবং মূর্তিরও পক্ষে ।

একইরকমভাবে তারা সত্যকে সরাসরি ফেইস না করে নিজেদের কুযুক্তির ঘর সাজায়, নাস্তিকদের সব কথা সত্য নয় অতএব ঈশ্বর হয়ত আছেন, আবার মৌলবাদিদের সব কথা সত্য নয় অতএব আল্লার আইন আসলে অত কঠিন নয় । এইভাবে তারা মূলত নিজেদের সুবিধার্থে সত্য মিথ্যার হার্ডকোর যাচাই-বাছাইয়ে না গিয়ে, বালিতে নিজেদের মুখ ডুবিয়ে রাখে । ১৬ : পয়জনিং দা ওয়েল (খেলুম না, খেলতেও দিমু না) প্রস্তাবককে তার বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ না দিয়েই, তার উপর ব্যাক্তিগত আক্রমনও গালিগালাজের মহোৎসব চালিয়ে পুরো প্রক্রিয়াটি ভন্ডুল করে দিয়ে বিজয়ীর বেশে সহযোগীরা একে অপরের ***চাটন প্রনালীকে বলা যায় "খেলতে দিমু না " ফ্যালাসি । ব্লগে এটি বহুল প্রচলিত সিস্টেম । যা সংঘবদ্ধ সব শ্রেনীই কম-বেশি ব্যাবহার করে থাকে ।

এখানে যেহেতু যুক্তি-সংক্রান্ত কোনো ব্যাপার নাই, তাই আলোচন নিস্প্রয়োজন । ---------------------------------------------------------------- আগেরবার এইখানে শেষ করছিলাম । নতুন কয়েকটা নিয়া আরেকটা পর্ব হবে এইবার ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.