কাগু ক্যান স্টার্ট অ্যা ফায়ার ইউজিং জাস্ট টু আইস কিউবস
পর্ব-১ পর্ব-২ পর্ব-৩ পর্ব-৪
১০ : নো ট্রু স্কটসম্যান (তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিম)
এইটা নিয়ে আগের পর্বেও ব্যাখ্যা ছিল, কিন্তু বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে আমি এই কুযুক্তিটির মুখোমুখি এত বেশী হয়েছি যে, ব্যাখ্যা করে সবসময় একটু অতৃপ্তি থেকেই যায় ।
যাই হোক, এটি একটি বাইন মাছের মত পিছলে যাওয়া যুক্তি । ফলাফল ধরে কোনো মতবাদের সমালোচনা করতে গেলে যুক্তি দেয়া যে আলোচ্য ক্ষেত্রে মতবাদটি বিশুদ্ধরুপে প্রয়োগ করা হচ্ছে না, এতটুকু পর্যন্ত ঠিকাছে । কিন্তু একটি একটি করে ক্ষেত্র বিবেচনা করে গিয়ে শেষ পর্যন্ত যখন দেখা যায় কোনো ক্ষেত্রেই মতবাদটি ফলাফল উৎপাদন কর্তে পারে নাই, তখনও মতবাদটি ঠিক কিন্তু প্রয়োগে ভুল বলে বসে থাকাটাই হল ঘোড়ার ডিম ফ্যালাসি ।
এই পর্যন্ত প্রযুক্ত সব ক্ষেত্রে যে মতবাদ ব্যার্থ সেইটারে আঁকড়াইয়া ধইরা বইসা থাকার কোন কারণ নাই ।
এছলামি সুশাসন, কমিউনিজম এইগুলা এধরনের মতবাদের মধ্যে পড়ে ।
ব্যাপারটা এরকম, বিএনপি কি করছে সেটা দিয়ে নয় বরং বিএনপির গঠনতন্ত্রে কি আছে সেটা দিয়েই বিএনপিকে যাচাই করা উচিৎ । ওরকম করতে গেলে বাংলাদেশের কোনো দলকেই খারাপ বলার চান্স নেই । জামাত হওয়া উচিৎ সামান্যতম এছলামের ছিঁটেফোঁটা যাদের মধ্যে আছে তাদের ফেভারিট দল ।
১১ : আপিল টু কনসিকিউয়েন্স : (হায় হায় সব রসাতলে যাবে এবার, অথবা সত্যের মতো বদমাশ)
একটি সত্য বলে ধরে নেয়া ব্যাপার যদি মিথ্যা হয় তাহলে তার প্রভাব খুবই খারাপ হবে, অতএব ঐ সত্যটি কোনোভাবেই মিথ্যা হতে পারে না, জাতীয় কুযুক্তি হচ্ছে "রসাতলে যাবে সব" জাতীয় কুযুক্তি ।
ঈশ্বর নাই ধরে নিয়ে, ধর্ম না থাকলে লোকজন সব চুরি ডাকাতি লুটপাট ধর্ষণ রাহাজানি শুরু করবে এই ভয়ে ঈশ্বরের সিস্টেমটাকে টিকিয়ে রাখার পক্ষে যুক্তি শোনা যায় অহরহ । বিশেষ করে মডারেট মোছলেমদের পক্ষ থেকে । যারা যৌক্তিকভাবে ঐশ্বরিক ধারনাটিকে মেনে নিতে না পেরে, প্রতিক্রিয়া কি হবে সেটা ভেবে নিজেদের ভয় দেখিয়ে আবার এছলামের সুশীতল ছায়াতলে নিজেদের ফিরিয়ে আনেন । বা নিজেরা অতটা সিরিয়াসলি না মানলেও অন্যদের যে ঈশ্বরকে মানা দরকার আছে সেটা নিয়ে লেকচার দেন । তাদের আবার নিজ চরিত্রের উপর অগাধ আস্থা কিন্তু অন্যের চরিত্রের উপর আস্থা নাই বিন্দুমাত্র ।
প্রস্তাবিত প্রতিক্রিয়ার মডেলটি ঠিক না বেঠিক সে আলোচনায় না গিয়েই, এটি যে একটি আখাম্বা কুযুক্তি তা বোঝা যায় । সত্য কনসিকিউয়েন্স এর উপর নির্ভর করে না, বরং কনসিকিউয়েন্স তৈরী করে । সেটা কখনো খারাপ হয় কখনো ভালো হয় । সেখানে সত্যের বা সত্য আবিষ্কারকারীর কিছু করার থাকে না ।
ইউরেনিয়াম পরমানুকে নিউট্রন দিয়ে আঘাত করলে বিপুল শক্তি উৎপাদিত হবে, এর সাথে তার ফলশ্রুতিতে হিরোসিমা নাগাসাকিতে নরক নেমে আসা বা না আসার কি সম্পর্ক ?! হিরোশিমায় বোমা ফেলা হবে কি না হবে তারও কোটি কোটি বছর আগে থেকেই ইউরেনিয়াম পরমানুর ধর্ম ঐরকমই আছে ।
আমার ক্যান্সারের খবর যদি সত্য হয় তাহলে, আমার আম্মা শুনে মারাই যেতে পারেন, আমার পরিবারে ঝড় বয়ে যেতে পারে । কিন্তু এর উপর তো আমার ক্যান্সার হওয়া না হওয়া নির্ভর করবে না ।
১২ :আপিল-টু-পপুলারিটি দশে মিলি করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ)
একটি প্রস্তাবিত ধারনা বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর মধ্যে সত্য বলে প্রচারিত, শুধু এই তথ্যের ভিত্তিতে ধারনাটিকে সত্য বলে যুক্তি দেখানো হচ্ছে, আপিল-টু-পপুলারিটি কুযুক্তি ।
ইনতারনেতের বিভিন্ন ফোরামে প্রায়ই এই কুযুক্তিটি দেখি । ১.৬ বিলিয়ন লোক যে কোরানকে সত্য বলে মানে তারা কি হুদাই মানে ? কোরান সত্য না হলে কি তারা মানত ? এই জাতীয় কুযুক্তি অহরহ ।
১.৬ বিলিয়ন লোকের মধ্যে ঠিক কত কোটি লোক তার একটা অক্ষর বুঝে সে হিসাবে না গিয়েও এটা একটা কুযুক্তি সেটা বোঝা যায় । সত্য কথা সাধারনভাবে অজনপ্রিয় হয়ে থাকে । মাত্র কয়েকশ বছর আগেও পৃথীবিব্যাপি সবাই বিশ্বাস করত পৃথীবিটা চ্যাপ্টা আর তারপাশে সূর্য ঘুরছে । কিন্তু সবার বিশ্বাস পৃথীবি সংক্রান্ত সত্যের ব্যাপারে কিছু করতে পারে নি । কেবল তার বের হয়ে আসাকে দেরি করাতে পেরেছে ।
এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে অনেক লোক-কাহিনী , লৌকিক বিশ্বাস, কুসংস্কার প্রচলিত আছে, যার বিশ্বাসীর সংখ্যা হিসাব করলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১.৬ বিলিয়ন এর বেশীও হতে পারে । কিন্তু সরাসরি কার্যকারন সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করার আগ পর্যন্ত সেটা বিশ্বাসীদের সংখ্যাধিক্যের কারনে সত্য হয়ে যায় না । (আবার মিথ্যাও হয়ে যায়না , মোট কথা ঐটার সত্যাসত্য নির্ভর করবে ঐটার নিজের উপর , কতজন বিশ্বাস করলো কি করলোনা তার উপর না )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।