আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গোধুলী বেলার শেষ প্রশ্ন?????



আমার বাবার বাড়ীতে কিছুটা অভাব ছিল কারণ আমরা ৬ভাইবোন আর কামাই একা বাবাই করতেন, আমরা সব ভাইবোন ই ছাত্র। শত কষ্টের মাঝেও আমরা বেশ ভালোই ছিলাম। আমি ভাই বোনদেও মাঝে সেজ, আমার বড় দুই ভাই তারপর আমি, আমার পরে ২বোন আর এক ভাই। বেশ চলছিল আমাদের সুখের সংসার। আমি দশম শ্রেণীর ছাত্রী, আমার মেঝ চাচা একদিন মিষ্টি নিয়ে হাজির আমাদের বাসায়, আমরা তো খুব খুশি কারণ এই চাচা আমাদের জানের জান চাচা।

চাচা তম বন্ধু বেশী। চাচার আসার কারণ মা জানতে চাইলেন, চাচার উত্তর” ভাবি এমন এক খবর এনেছি , খুশিতো হবেন ই আমাকে কি খাওয়াবেন??্ । মা বললো এতা ভনিতা না করে বলে ফেলো কি খুশির খবর এনেছো?? চাচা উত্তরে হাসতে হাসতে বললো” ভাবী বাবলির জন্য একটা ভালো প্রস্তার এসেছে, ছেলে ব্যবসায়ি, ঢাকায় বাড়ী গাড়ি সব আছে, ছেলে বাবলীকে রাস্তায় যেতে আসতে দেখেছে, আর বাসায় সবাই রাজি। ” মা তো খুশিতে কি করবে না করবে। আব্বা শুধু বললেন ” ও তো মাত্র দশম শ্রেণীতে পড়ে, সামনে টেষ্ট পরীক্ষা, এই সময় বিয়ে দিয়ে দেব”।

চাচার উত্তর ভাইয়া তুমি যখন বিয়ে করেছো ভাবী তো কতো ছোট ছিল। ভাবীতো ঠিকই ্এইচ,এস.সি পাশ করেছে? আর বাবলীকে ছেলেরা লেখা পড়া করাবে, বলেছে। ” আজ বিকালে ছেলেরা আসবে, আংটি পরাতে। আব্বা বললেন কোন খোজ ই তো নেয়া হয়নি ছেলের ব্যপারে। চাচা বললো ”আমি সব খোজ নিয়েছি, আর ছেলের বড় ভাই আমার সাথে ব্যবসা করে, ছেলের ব্যবসাও মাশআল্লাহ অনেক ভালো, বাবলী রাজ রাণী হয়ে থাকবে।

” আব্বা আর কিছুই বললেন না, কারন মেঝ চাচা খূব পাকা লোক, সারা দুনিয়া চরে বেড়ানো লোক। মেঝ চাচা আমার রুমে এস বললো কিরে বুড়ী বিয়ে তো দিয়ে দিচ্ছি, আমাকে ভুলে যাবি না তো। আমি কেদেঁ দিয়ে ছিলাম। বিকালে ছেলেরা সবাই আসলো , আমাকে আংটি পরিয়ে বিয়ের তারিখ পাকা কওে চলে গেলো, আসলে ছেলে দেখতে খুব সুন্দর, আমার ছোট তিনটা তো খুশিতে লাফ ঝাপ শুরু করে দিল। কারন অনেক দিন পরে এই বাড়ীতে একটা উৎসব হচ্ছে।

ভাইয়ারা আমাকে খেপাতে লাগলো, তুইতো কয়েকদিন পওে বড়লোকের বউ হব,কি আমাদের মনে থাকবে তো। আমি শুধু মনে মনে বলেছিলাম, ভাইয়া তোরা যে আমার জগৎ তা তো জানিস না। বিয়ের তারিখ পাকা করা হলো ১৫দিন পরে। আব্বা বিয়ের সব যোগার পাতি করতে লাগলেন, দেখকে দেখতে বিয়ের দিন এগিয়ে আসতে লাগলো। হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হলো, আমার বান্ধবী রা আর চাচাতো, মামাতো বোনরা আমার কপাল দেভে মনে মনে জ্বলতে লাগলো।

বিয়ে হয়ে গেল, আমার পুরো শরীর গয়না দিয়ে সাজানো, মা তো কাদতে লাগলেন আমার এতা ভাল ভাগ্য দেখে, এতো বড় ঘরে আমার বিয়ে হবে, মা ভাবতেই পারেন নি। বিয়ে হয়ে গেল , আমি শ্বশুড় বাড়ী চলে গেলাম। আমার স্বামী সবার ছোট , তার বড় ৩ভাই আর ২বোন। আমি হলাম ছোট বউ, আদরের বউ। সবাই আমাকে নিয়ে এত আনন্দ করছিল, যে আমি লজ্জায় নত হয়ে যাচ্ছিলাম।

প্রথম রাতে আমার স্বামী আমার সাথে কতো কিছু যে শেয়ার করেছেন, সাথে বললেন তুমি আমার চেয়ে বয়সে অনেক ছোট, আমি তোমার পুরো যত্ন রাখবো। আরো কত কিছু। আমি বেশ সুখেই দিন কাটাতে লাগলাম, স্কুলে যাই গাড়ীতে করে, বান্ধবীরা জ্বলে যায়। আমার স্বামী ব্যবসার কাজে প্রায়ই ঢাকার বাইরে যান, ৫/৭দিনের জন্য। যখন আসেন কতো কিছু নিয়ে আসেন আমার জন্য।

একদিন উনি ঢাকান বাইওে আছেন, দুপুর বেলা আমরা সবাই রেষ্ট নিচ্ছি, এমন সময় গার্ড এসে আমার শ্বাশুড়ীকে বললেন, একজন মহিলা এসেছেন, তার সাথে দেখা করতে। আমার শ্বাশুড়ী বললেন উনাকে ড্রয়িং রুমে বসাতে। আমরা সবাই মিলে শ্বাশুড়ীর সাথে গেলাম ড্রয়িং রুমে। মহিলা বেশ সুন্দরী। মহিলা সরাসরি আমাদের বললেন ” আমি রাজশাহী থেকে এসেছি, আমি আপনার ছোট ছেলে, সাগরের বউ, আমরা অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম মহিলার দিকে, আমার শ্বাশুড়ী বললেন, তুমি আমাদের সাথে কি ফাজলামি করছো, আমাকে দেখিয়ে বললেন ” এ হলো সাগরের বউ, প্রায় দুই মাস হলো ওদের বিয়ে হয়েছে” ।

মহিলা হেসে বললো আমি জানি, আর এ জন্য আমি এসেছি। আপনার ছেলে আমাকে বিয়ে করেছে ৩বছর আগে, আর প্রতিমাসে সাগর রাজশাহী আসে, আমাদের সংসার আছে ওখানে আর আমাদের ২বছরের একটা ছেলে আছে। আপনার বিশ্বাস না হলে এই দেখুন কাবিন নামা, আর আপনারা সাগরকে জিগ্গ্সা করুন। আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম, আমার মাথা ঘুরে উঠলো, আমার শ্বাশুড়ী আমাকে বললেন” ছোট বউ তুমি তোমার রুমে যাও”। আমি চলে এসেছিলাম।

এর পর যা হবার হলো। আমার সব হারিয়ে গেল। আব্বু আর চাচা এসে আমাকে নিয়ে গেলেন। সাগর সব স্বিকার করলো আর বললো বাবলীর কোন অর্মযাদা হবে না। ও ওর জায়গায় থাকবে আর তার ওই বউ তার জায়গা।

আমার আব্বু, আম্মু আর চাচারা কেউ রাজি হলেন না। বাসায় আমি ফেরৎ আসলাম, আম্মা শুধু কান্না কাটি করতে লাগলেন, আর আমি যেনো এক পাথর মানুষ হয়ে গেলাম। কয়েকদিন পরে হঠাৎ আমার শরীর খুব খারাপ লাগলো আম্মু আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন, ডাক্তার আমার কিছু পরীা দিলেন করার জন্য, সব পরীক্ষা শেষে যে রেজাল্ট এলো তার জন্য আমরা কেউ তৈরী ছিলাম না, আমি মা হতে যাচ্ছি, বাসার সবাই বললো বাচ্চা ফেলে দিতে, আবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো আমাকে কিন্তু ডাক্তার আমাকে ভালোভাবে চেক আপ করে বললেন অনেক দেরী হয়ে গেছে বাচ্চা নষ্ট করা যাবে না আর আমি নিজেও রাজি হলাম না, মাকে বললাম মা এই বাচ্চার কি দোষ আসুক না দুনিয়াতে আমি ওকে বড় করবো, মানুষের মতো মানুষ করবো। আমি আস্তে আস্তে নরমাল হতে শুরু করলাম, সামনে পরীক্ষা তার উপরে শরীর খারাপ, তবু পড়াশোনা চালিয়ে যেতে লাগলাম আর আব্বা আমার ডিভোর্স এর সব ব্যবস্থা করে ফেললেন, বাচ্চা হবার পরে ডিভোর্স হবে কারন, গর্ভবতী অবস্থায় নাকী ডিভোর্স হয়না। আমার শ্বশুড় বাড়ীর লোকজন আমাকে অনেক বোঝালেন যেনো ফিরে আসি কিন্তু আমি নিজে ঔ লোক কে আর সহ্য করতে পারলাম না, আমার এই ছোট একটা জীবনে উনি যে কতো বড় দাগ দিয়েছে উনি কি তা বোঝেন??? দেখতে দেখতে পরীক্ষা এসে গেল, আমি পরীক্ষা দিতে লাগলাম আর টের পাচ্ছিলাম আমার ভেতরে একজন বেড়ে উঠছে, পরীক্ষা হলে ম্যাডামরা আমার অনেক খেয়াল রাখতেন ।

পরীক্ষা শেষ হলো তখন আমি ৭মাসের গর্ভবতী, পরীক্ষার রেজাল্ট হলো আমি ২য় বিভাগে পাশ করেছি, সবাই খুশি, কারন এতা কিছুর পরেও যে আমি পাশ করেছি। রেজাল্টের কিছুদিন পওে আমার ব্যথা উঠলো, আব্বা আর আম্মা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন, আমার একটা মেয়ে হলো রাতের বেলায়। আমি ওর কান্না শুনতে পেলাম, ডাক্তার হেসে আমাকে বললেন একটা ফুটফুটে মেয়ে হয়েছে তোমার, আমার কোলে এনে দিলেন, আমি অবাক হয়ে দেখলাম ” এটা আমার মেয়ে?? এথো সুন্দর"”। বাসার সবাই খুশি, আব্বা আম্মা, ভাইয়ারা, আমার ছোট ভাই বোন রা, সবাই। এময়ে হবার এক সপ্তাহ পওে আমার ডিভোর্স হয়ে গেল।

আমার শ্বাশুড়ী, আমার জা আর ননাস রা মেয়ে দেখে গেলেন আর আমার কাছে মাফ চেয়ে গেলেন। আমান প্রাক্তন স্বামী সন্তানের জন্য কোর্টে আপিল করলেন, কিন্তু কোর্ট সব শুনে সন্তানকে তার মায়ের কাছে রাখবার পারমিশান দিল সাথে মেয়েকে শুধু তার বাবা দেখতে পাবে সপ্তাহে একদিন আর মেয়ের সব ভরন পোশণ দিতে হবে এই আদেশ দিলেন । দেখতে দেখতে আমার মেয়ে বড় হতে লাগলো, আমি কলেজে ভর্তি হলাম, কাস করি ওকে আম্মার কাছে রেখে, আর ওর বাবা মাঝে মাঝে ওকে দেখে যায়। এভাবেই চলছিল। আমি এইচ,এস.সি পাশ কওে ইউনিভার্সিটি ভর্তি হলাম আর মেয়ে অনেক বড় হতে লাগলো আর কি পরিমান যে আদুরী বাসার সবার, সবাই তাই ওকে ডাকতো বাবুনী বলে।

বাবলীর মেয়ে বাবুনী। আমি অনার্স শেষ করলাম আর আমার মেয়ের বয়স ৬বছর হয়ে গেল। তার বাবার সাথে খুবই খাতির। বাবার সাথে বাইরে যায়, কেনা কাটা করে। স্কুলে ভর্তি কওে দেয়া হলো।

পড়াশুনায় অনেক ভালো ছিল আমার বাবুনী। একদিন বাবা এসে আমাকে বললো” মা তোর আবার বিয়ে ঠিক করেছি” এবার সব খবর নিয়েছি আর ছেলে বাড়ীর বাবুনীকে নিয়ে কোন অসুবিধা নাই” আমি রাজি হলাম না। আম্মা আব্বা কান্না কাটি করতে লাগলেন আর আমি পওে রাজি হয়ে গেলাম। আমার ২য় বিয়ে হয়ে গেল। বাবুনীকে ছেড়ে আমি প্রথমদিন ঔ বাড়ীতে গেলাম।

কথা ছিল বাবুনীকে আমি কিছুদিন পওে নিয়ে যাবো। আমার নুতন স্বামী বাবুনীকে বেশ সহজ ভাবেই নিয়েছে। আমার বিয়ের এক সপ্তাহের মাথায় আম্মা আমাকে ফোন কওে বললেন বাবুনীর বাবা এসেছে ওকে বাইরে নিয়ে যাবে। আমি বললাম যেতে দেও। আমি বুঝতেও পারিনি বাবুনীর সাথে আমার আর কখনো কথা হবে না।

বাবুনীর বাবা আর মেয়ে ফেরৎ দিবেন না। কোর্ট থেকে এই পারমিশান করিয়ে এনে ছিলেন । কারণ ওর মার তো ২য় বিয়ে হয়ে গেছে। আমি কিছুই করতে পারিনি। আমার নুতন স্বামী অনেক দৌড়াদৌড়ি করেও বাবুনীকে আনতে পারেন নি।

এভাবেই চলছিল আমার জীবন, প্রতি বছর বাবুনীর জন্মদিন আসে আমি মনে করে কাদি আর বছর গোনি বাবুনীর বয়স কতো হলো। আমার আব্বা মারা গেলেন, ভাইয়ারা চাকরী করতে লাগলেন, বোনদের বিয়ে হলো। সবই চলছিল যার যার নিয়মে। শুধু আমি ছাড়া। সবাই আমাকে দেখে ভাবে আমি কতো সুখী, হ্যা আমি সুখী আমার ২য় স্বামী অনেক ভালো সাথে আমার শ্বশুড় বাড়ীর লোকজন , আমাকে খুবই আদর করে সবাই।

এভাবে কেটে যেতে লাগলো বছর। আমি স্বামীর উৎসাহে মাষ্টর্স পাশ করে একটা স্কুলে জয়েন করলাম। আমার বিয়ের ৫বছর পার হলো, আমরা ববোর একটা সন্তানের চেষ্টা করলাম। ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ শুরু করলাম, কিছু পরীা নিরিা কওে ডাক্তার আমার স্বামীকে বললেন আমার কিছু প্রবলেম আছে, আমি মা হতে পারতে ও পারি আবার না ও পারি। চান্স কম।

আমার স্বামী একটু কষ্ট পেয়েছিলেন, কিন্তু আমার দিকে তাকিয়ে কিছুই বললেন না। শুধু বললেন সবার কি বাচ্চা হয়। আমাদের না হয় হবে না। এটা কোন ব্যপার না। তুমি ট্রিটমেন্ট চালিয়ে যা, দেখা যাক কি হয়।

এভাবেই কেটে গেল ১০টি বছর। আমি আর মা হতে পারিনি। আজ আমার বাবুণীর জন্মদিন। আমার বাবুনী ১৭তে পা দিলো। বয়স অনুযায়ী ওর এস.এস.সি দেয়ার কথা।

আমি জানি না । আমি অনেক ভাবে চেষ্টা করেছিলাম ওর সাথে দেখা করতে, প্রতিবার ই ওর বাবার হাতে অপমানিত হয়ে ফিরে আসতে হয়েছে। একবারতো আমাকে মেরে ফেলার ধমক ও দেয়া হলো। আমার স্বামী আমাকে বাবুনীর খোজ নিতে মানা করে দিলেন। আমি কষ্ট বুকে চেপে থাকি।

আমার বাবুনী কতো বড় হয়েছে। ও কতোখানি লম্বা হয়েছে? দেখতে কার মাতো, গায়ের রং কেমন ?? ওর চোট ছোট হাত গুলো কতো বড় হয়েছে? ও কি গান গায়? ও কি নাচে, বেনী করে, সাজগোজ করে? আরো কতো কিছু ভাবি। কিন্তু উত্তর তো পাই না। আমার স্কুলের সব মেয়েদের মাঝে আমি বাবুনীকে খুজি । যদি একবার দেখতে পেতাম, যদি একবার বুকে নিতে পারতাম, বুকে নিয়ে ওকে বলতাম আমি তোকে একটা দিনের জন্য ভুলতে পারিনি।

একদিন বাবুনীর বাবার সাথে আমার দেখা রাস্তায়। আমি তার কাছে জানতে চাইলাম বাবুনী কেমন আছে??? সে আমাকে বললো তোমার তো সাহস কম না, আমার মেয়ের কথা জানতে চাও??? লজ্জা করে না, আরেকটা বিয়ে করে, আবার মেয়ের খবর জানতে চাও। সাথে আরো বলরো বাবুনী তোমাকে খুব ঘৃণা করে। যে মা সন্তানকে ছেড়ে আবার বিয়ে করতে পারে সেই মাকে আমার মেয়ে ঘৃণা করে। আমি উত্তরে তাকে শুধু বললাম” আপনি মেয়েকে যা শিখিয়েছেন মেয়ে তাই জানে, তবু যদি ও ওর মাকে ঘৃণা করে ভালো থাকে তাতেই ওর মা খুশি” আমি আর কথা না বাড়িয়ে চলে আসলাম।

শুনেছি বাবুনীর বাবার প্রথম স্ত্রী ও তাকে ছেড়ে চলে গেছে, আর এখন যাকে বিয়ে করেছে মহিলা খুবই রাগি ধরনের। তার যা ইচ্ছা হোক, আমি শুধু চাই আমার বাবুনী ভালো থাকুক। কিন্তু আমি জানি বাবুনী ভালো নেই, কেন জানি আমার মন তাই বলে। আমি ওকে স্বপ্নে দেখী সেই ছোটটো বাবূনী, দুষ্টু বাবুনী, যাকে বেধেঁ রেখে আমি পড়তাম, ওর দুষ্টামিতে বাড়ীর সবাই অতিষ্ঠ হয়ে যেত, আবার সবার চোখের মনি ছিল। আমি কোনদিন ওকে মারতে পারিনি, বাসার সবার কারনে।

আজ জীবনের শেষ প্রান্তে এসে শুধু মনে হয় কি লাভ এত লেখা পড়া করে, সমাজে শিতি হয়ে, একটা পুরুষ ২য় বিয়ে করলে কোন সমস্যা নাই, আমি মা হয়ে, প্রতারিত হয়ে ২য় বিয়ে করলাম, আর কোর্ট এই অপরাধে আমার সন্তানকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিল??? টাকার কাছে আমি পরাজিত হয়ে গেলাম। এই আমি ১৬বছর বয়সে প্রতারিত হয়ে একটা সন্তানকে বুকে ধরে তিলতিল করে বড় করলাম, যাকে আমি মারদে পারিনি, আমার জঠরে বড় করেছি,আর আমি কি পেলাম? আজীবনের কষ্ট, সন্তান হারানোর কষ্ট। আমি তো বিচার ও চাইতে পারি না। কে করবে এর বিচার। সবাইতো আমাকেই অপবাদ দেয়, কারণ আমি যে ২য় বিয়ে করেছি।

এই ২য় বিয়েটা কি আমার পাপ, আমার অন্যায়??? বাবুনী" মা আমার ”তুই একদিন মা হবি, তখন বুঝবি মাদের কতো জ্বালা, কতো কষ্ট”। শুধু দেয়া করি তুই ভালো থাক। আমাকে ঘৃণা করেও ভালো থাক।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.