বাস্তবতার ভার্শন ২.৭.১২ এ আছি। নিয়মিত আপডেট হচ্ছি।
*** এটি ২০১৪ বইমেলায় প্রকাশিতব্য দ্বিতীয় উপন্যাস 'গোধূলি'র ৩য় অধ্যায়। ব্লগের বন্ধুদের সাথে প্রথম শেয়ার করছি। কেমন লাগল জানাবেন।
উৎসাহমূলক প্রশংসাসুলভ মন্তব্যের চেয়ে যৌক্তিক ও গঠনমূলক সমালোচনার জন্য অপেক্ষায় আছি। সবাইকে ধন্যবাদ।
রাগীব স্বপ্নে দেখছে কেউ একজন আহাজারি করে কাঁদছে। ভাঙ্গা ভাঙ্গা ঘুমে সে টের পেলো কান্নার শব্দটা পাশের ঘর থেকে আসছে। স্বপ্নে কেউ আহাজারি করছিল।
আসলে সেটা আহাজারির কান্না না, থেমে থেমে সুর করে কান্না। সাতসকালে কে এভাবে কাঁদতে পারে? রাগীবের মনে হচ্ছে সে এখনো স্বপ্ন দেখছে। স্বপ্নে মনে হয় কোন ঘটনা একটানা অনেকক্ষণ ধরে চলে। এই কান্নার শব্দও সেরকমই অনেকক্ষণ ধরে আসছে। কয়েকবার বালিশ মাথায় চেপে ঘুমোতে চেষ্টা করলো।
ব্যাচেলরদের কাছে সকাল সাতটার ঘুম বেশ আরামের ঘুম। এ ঘুম ভাঙলে মেজাজ খারাপ হয়। রাগীব বিছানা থেকে উঠে বসে। তার রুমে কেউ নেই। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে সকাল আটটা বাজে।
আজম ভাই এতক্ষণে অফিসে চলে গেছে। বাকী দুই রুমের সবাইও নিশ্চয়ই ক্লাসে চলে গেছে। তাহলে এরকম সুর করে কান্না করবে কে?
সাইফুল ভাইয়ের রুমে গত সপ্তাহে নতুন মেম্বার উঠেছে। নাম নীরব। পড়াশোনার বালাই নেই, সারাদিন গিটার নিয়ে বসে থাকে।
মিটিং ডেকে একে মেস ছাড়তে বলতে হবে। প্রথম কয়েকদিন চুপচাপ ছিল। দুই তিনদিন যাবত যতক্ষণ জাগ্রত থাকে ততক্ষণই গিটার নিয়ে গান গায়। গান গায় বললে ভুল হবে। কান্না করে।
প্রথম যেদিন মাঝরাতে এর গান শুনে রাগীব থামতে বলতে গেছিল, সেদিন তার সাথে কথা বলে রীতিমত অবাক হয়েছি। গানের তালিম নাই, ওস্তাদ বা মাস্টারের কাছে গানও শিখে না। গিটার কিনে রাতদিন চিল্লা-পাল্লা। মূলত এ আবেদিন রুনী আর অন্তর খানের একনিষ্ঠ ভক্ত। এই দুইজনের গান তার দুই মোবাইলে অ্যালার্মটোন হিসেবে বাজে।
মানে তার ঘুমই ভাঙ্গে তার এই দুই গুনী শিল্পীর গান শুনে।
-হ্যালো ডুড।
-নতুন উঠেছেন?
-ইয়াপ।
-তা এরকম করে কান্দতেছেন কেন?
-কাঁদতে যাবো কেন? আমি তো জাস্ট গান গাচ্ছিলাম। ?
-কি? এগুলো গান?
-কেন আপনার কি মনে হয়?
-আপনি কি করেন??
-অ্যা’ম অ্যা সিঙ্গার।
-সিঙ্গার, বাটারফ্লাই বুঝি না। গানের প্র্যাক্টিস আছে?
-আমি যে ধাঁচের গান করি, সে ধাঁচের গান কোন ওস্তাদের কাছে শেখা যায় না। রবীন্দ্রনাথ কি কারোর কাছে গান শিখে গান লিখেছিলেন বা সুর দিয়েছিলেন? আমার গানগুলোও সেরকমই।
সেদিনের মতো রাগীব আর কথা বাড়ায়নি। কিন্তু আজ একটা বিহিত করতে হবে।
তবে রাগ করে না। ঠাণ্ডা মাথায় কাজ সারতে হবে। মানুষ বাঁশ খেতে পছন্দ করে না, কিন্তু দিতে পছন্দ করে। যারা বোঝে না যে সে বাঁশ খাচ্ছে, তাদের বাঁশ দিয়ে মজা আছে। রাগীব তাঁকে গোপনে বাঁশ দিবে।
- নীরব ভাই, তা এখন কি নিয়ে গান করছেন?
- একটা ফিল্মে মিউজিক ডিরেক্টর হিসেবে চান্স পেতে পারি।
- সিনেমার নাম কি? আর সিনেমার কাহিনীটা কি?
- নাম এখনো ঠিক হয়নি। কাহিনী জানি না।
- আপনি কি শুধু গাইবেন না ডিরেকশন দিবেন?
- একটায় গাইতে পারি, তবে ডিরেকশন দিবো না। এ. আর. ভাই ডিরেকশন দিবে।
তার কাছ থেকেই শিখবো।
- এ. আর. ভাইটা আবার কে?
নীরব রাগীবের দিকে অবাক হয়ে তাকায়। যেভাবে শিক্ষক সিম্পল কোন প্রশ্নের পড়া না পারা ছাত্রের দিকে রাগী চোখে তাকায়।
-এ. আর. ভাই হলেন আবেদিন রুনী ভাই। বাংলাদেশের এ. আর. রহমান।
রাগীবের চোখ আরো ভড়কে যায়। বাঁশ কি সে দিতে এসেছিল না খেতে এসেছে তার মাঝে ধোয়াশার মতো লাগে। এ. আর. ভাইয়ের সান্নিধ্যে কাজ করার কথা শুনে নয়, এ. আর. মানে আবেদিন রুনী যে বাংলাদেশের এ. আর. রহমান এটা জানা ছিলনা। নতুন জিনিস আবিস্কার করায় তারদিকে চমকে তাকায়। অবাক হওয়াটা চেহারায় গোপন রেখে তাড়াতাড়ি কনভার্সেশন শেষ করাটাকেই বুদ্ধিমানের কাজ মনে করে।
- ও। বেশ ভালো তো, চালিয়ে যান।
এই বলে অন্যান্য কথাবার্তা শেষ করে যখন সে চলে যেতে ধরলো, পিছন থেকে নীরব ডাক দিয়ে বললো,
- ভাই আমার অটোগ্রাফ নিয়ে যান?
- সঙ্গে তো কোন কাগজ নাই। পরে আরেক সময় নিবোনি।
-আপনার রুম থেকে কাগজ আনেন।
-আসলে এখন তেমন কোন ভালো কাগজ নেই। আপনি যে সে মানুষ না। বিখ্যাত গায়ক। যে সে সাধারণ কাগজে অটোগ্রাফ নিলে হবে?
নীরব বিরস মুখে তাকায়। যেন খুব অন্যায় কিছু হয়ে গেছে।
যেহেতু তার মনে হচ্ছে রাগীব অন্যায় কিছু করেছে, তাই রাগীবের মাঝেও কেমন যেন খচখচানি করতে লাগলো। একটা বুদ্ধি হঠাৎই খেলে গেল।
-আচ্ছা আপনি কি চান, আপনার অটোগ্রাফ শুধু আমি একাই নিবো?
- না তা কেন হবে?
- এমন যদি হয়, যে আপনার অটোগ্রাফ সবাই পাবে, তাহলে কেমন হয়?
সে খুবই পুলকিত হয়ে রাগীবেরর দিকে তাকালো। আগের মতো বিরক্তিকর ভাবটা আর নেই। মুখটা শরতের আকাশের মতো একদম ফকফকা।
দেখলেই ভালো লাগে।
- সেই দিন আর বেশি দূরে নাই।
- হুমম, আপনি চাইলে একদিনের মধ্যেই সেই দিন চলে আসবে।
- কিভাবে?
- সামনে তো ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, প্রেসে প্রচুর বিজনেস। একটা ব্যানার বানাতে খুব বেশী খরচ এখন হবে না।
আপনার কাছে কি এক হাজার টাকা হবে?
- কেন?
- একটা ব্যানার বানাতাম, ঐখানে লেখা থাকতো আপনার নাম, আর আপনার নিজ হাতের অটোগ্রাফ। বামপাশে আপনার ছবি। ছবিটা হবে নির্বাচনী পোস্টার টাইপের। ঐ যে থাকে না, এলাকার নেতার প্রমোটিং ব্যানার। একপাশে এলাকার নেতার ছবি, তার একপাশে দলীয় নেতা, আর আরেকপাশে দলের প্রতিষ্ঠাতা নেতার ছবি।
সে বুঝতে পারলো, রাগীব কি বলতে চাচ্ছে। শরতের আকাশ মুহুর্তের মাঝেই আষাঢ়ের আকাশের মতো থমথমে হয়ে গেল। বৃষ্টি এখনো পড়ছে না, তবে মেঘ ডাকার মতো ফোঁসফোঁস শব্দ করে নাক ডাকছে। রাগীবের বাঁশ কাজে দিচ্ছে।
- দেখুন একটা জিনিস, আপনার এই ব্যানার যদি ক্ষিলখেত ওভারব্রীজের উপরে টাঙিয়ে দেওয়া যায়, তখন সবাই আপনার অটোগ্রাফ দেখবে।
জিনিসটা খুব ভালো হবে না? আইডিয়াটা কেমন?
এবার তার মুখ থেকে বৃষ্টি ঝড়লো। কান্না হয়ে না, রাগ হয়ে। একবাক্যে কথা শেষ।
- I’m not your friend’s of year. Get out.
বাঁশ কাজে দিয়েছে। এভাবে আরো দুই একদিন বাঁশ দিলেই মাল নিজেই খালাস হয়ে যাবে।
ঘর থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর রাগীবের মাথায় শেষ লাইনটা ঘুরপাক খাচ্ছে। I’m not your friend’s of year এর মানেটা কি? গুগল ট্রান্সলেট হলে এটাকে কি বলতো? সে তার বছরের বন্ধু না? বছরের বন্ধু আবার কি জিনিস।
টেবিলের উপর একটা খাম রাখা আছে। বাসা থেকে এসেছে। বাবা পাঠিয়েছে।
চিঠি-চালাচালির যুগ পার হয়েছে তাও প্রায় বছর দশেক হল। মোবাইলে যখন কথা বলা যায়, সে যুগে তার বাবা কেন চিঠি পাঠাবে? খাম খুলে চিঠিটা হাতে নিল। তার বাবা লেখাপড়া জানে না। কাকে দিয়ে লেখাতে পারে চিঠিটা? যাকে দিয়েই লেখাক, লেখার হাত একেবারে জঘন্য। ডানদিকের একেবারে উপর থেকে শুরু হয়ে বামদিকের একেবারে নিচে নেমে গেছে সব লেখাগুলো।
সাধু, চলিত, আঞ্চলিক সব ভাষার মিশ্রণে পুরো চিঠি লেখা। চিঠিতে সম্বোধন রবি বলে। বাবা রাগীব নামটাকে পছন্দ করে না। বলে হিন্দুয়ানী ভাব নাকি আছে। তার আসল নাম রবিউল আউয়াল।
সেখান থেকে সংক্ষেপে রাগীব এল কিভাবে কে জানে?
সুপুত্র রবিউল আউয়াল,
তোমাকে কথাটা বলিতে বড় শরম লাগিতেছে। কিন্তু না বলিয়াও পারিতেছি না। তুমি জানিয়া থাকিবা যে, তোমার পড়াশোনার খরচ চালাইয়া লওয়া আমার পক্ষে সম্ভবপর কোন কালেও ছিল নহে। কিন্তু পুত্রের শখ প্রতিটা বাবা-মা’ই পূরণ করিতে চায়। উহা মাথায় রাখিয়া, তোমার কোমল মুখখানার দিকে তাকাইয়া দুঃসাহস করিয়াছিলাম জমি জিরাত বেচিয়া হইলেও তোমার লেখাপড়ার খরচ চালাইবো।
আফসোসের বিষয় সবার পড়াশোনা শেষ করিতে লাগে ৪ বছর। তোমার এখনো ৬ বছর চলিতেছে। বিগত ৬টি বছর কোনমতে জমি-জিরাত বিক্রি করিয়া, বন্ধক রাখিয়ে তোমার খরচ চালাইছিলাম। জানা থাকা ভালো এই যে, আমাদের আর কোন জমি আর আমাদের হাতে নাই। তোমার মাস চালানোর খরচও দিতে পারিব কি না জানি না।
অসহায় পিতা হিসেবে তোমার নিকট আরজি, আমারে তুমি ক্ষমা করিয়া দিও। তোমার কোন রকমের খরচই আমি চালাইতে পারিব না। নতুন ফসল না উঠিবা পর্যন্ত আমরাও কোনমতে খাইয়া না খাইয়া আছি। তোমারে আর কি পাঠাইবো? তুমি নিজের পথ নিজে দেখিয়া নিও। যদি পারো, তো নিকুঞ্জে আমার এক দূর সম্পর্কের ভাতিজা হেদায়েতের শরণাপন্ন হইয়ো।
শুনিয়াছি সে বহু পয়সার মালিক হইয়াছে। তার হইতে টাকা ধার করিয়া এইবারের সেমিস্টার ফি চালাইয়া লইয়ো। ইঞ্জিনিয়ার পাশ দিয়া, চাকরী করিয়া সময় মত তার টাকা ফেরত দিয়া, বন্ধক থাকা জমিগুলাও উদ্ধার করিবা বলিয়াই আমার বিশ্বাস।
আমাদের অবস্থা বুঝিতেই পারিতেছ। তাই এ মুহুর্তে আর কিছুই বলিলাম না।
আল্লাহর কাছে দু’হাত তুলিয়া প্রার্থনা করি, সহি-সালামতে নিজেকে সামলায় রাখিবা।
ইতি
তোমার হতভাগা পিতা।
হেদায়েত ভাইয়ের সাথে তার পরিচয় ঢাকায় আসার পর থেকেই। ভার্সিটির ফ্রেণ্ডদের সাথে প্রায়ই আড্ডা দিতে নিকুঞ্জে আসা হয়। একদিন নিপুনদের সাথে নিকুঞ্জের ১০ নাম্বার রোডের মাথায় বসে আড্ডা দিচ্ছিল।
হঠাৎ পাগল কিসিমের একজন লোক এসে তার দিকে তাকিয়ে বলল,
-তুমি রবিউল না?
-জ্বি। আপনি?
-আমি হেদায়েত। তোমার বাবা আমার দূরসম্পর্কের চাচা হন।
-ও।
-আচ্ছা আসি, পরে দেখা হবে।
সেদিন লোকটা যেরকম হুট করে এসেছিল, তেমন হুট করেই চলে গেল। পরে আরো বেশ কবার দেখা হয়েছিল। দূর থেকে যদি কোন জট পাকা চুল, ময়লা কাপড় পড়া উদ্ভ্রান্ত এলোমেলো ভঙ্গিতে হাটতে হাটতে কেউ এগিয়ে আসে, সেইসঙ্গে কাছে আসার সাথে সাথে গা থেকে কটু দুর্গন্ধ নাকে ভেসে লাগে, রাগীব ধরেই নেয় এই লোকটা হেদায়েত ভাই'ই। এটুকু দেখেই যে কেউ বুঝে নিতে পারে হেদায়েত ভাই কোন জীবন যুদ্ধে পরাজিত একজন মানুষ। কিন্তু আসলে তা না।
তার অঢেল সম্পত্তি আছে। কিন্তু স্বভাব বা খাটি বাংলায় খাসলত খুব ভয়ঙ্কর জিনিস। আল্লাহর হেদায়েত কেবল হেদায়েত ভাইয়ের টাকা পয়সার উপরেই পড়েছে খাসলতের উপরে পড়েনি।
হেদায়েত ভাইকে সে যে অপছন্দ করে তা না, তবে লোকটার এই মলিন বেশভূষার জন্য তার কাছে ঘেষতে তার ঘেন্না লাগে। সবথেকে বেশি ঘেন্না লাগে তার নখের দিকে তাকালে।
বিশাল সাইজের নখগুলো নিয়ে লোকটা যখন হাত নেড়ে নেড়ে কথা বলে, তখন রাগীব দেখতে পায় হেদায়েত ভাইয়ের দুই হাতের নখই হলুদ। তিনি তরকারীতে হলুদ বেশি খান, এজন্য ডান হাতের নখের নিচে হলুদ দাগ বসতে পারে, কিন্তু বাম হাতের নখগুলোর হলুদ রহস্যই তার গা গুলিয়ে দেয়।
হেদায়েত ভাইয়ের কাছে যেতে হবে। মানুষের কাছে টাকা ধার করতে রাগীবের কাছে এখন আর লজ্জা কাজ করে না। তবে ধার করার ক্ষেত্রে কিছু ঝক্কি-ঝামেলা আছে।
কেউ আজকাল কাউকে বিশ্বাস করে না। এটাও অবশ্য অমূলক না। যে দেশের অনেক কিছুই নিয়মের বাইরে, সেখানে দেনাদার পাওনাদারের সামনে নিয়ম মোতাবেক হাজির হতে পারেন না। এটাই নিয়ম। মানুষের অসহায়ত্ব দেখে অনেকেই মজা করতে ভালোবাসেন।
সে মজার মাঝে প্রাঞ্জলতা নেই, আছে সূক্ষ্ম অহং বোধ।
টেবিলের উপরে রাখা মোবাইল থেকে রিং আসছে। নাদিয়ার কল এসেছে। রিসিভ করবে না করবে না করেও রিসিভ করে ফেলল।
-রাগীব ভাইয়া, আপনি কোথায়?
-মেসে।
-আমাদের এদিকে আসবেন একটু?
-কেন বাসা খালি নাকি?
-ছি! কি অসভ্য কথা।
-জানতে চাইলাম খালি কি না, খালি থাকলে আসতেও পারি।
-সত্যিই খালি থাকলে আসতেন?
-ঠিক নাই।
-তাহলে কি খালি করবো?
-না।
-আপনি এমন হেয়ালি করে কথা বলেন কেন? আপনি কি মেয়ে?
-আমি মানুষ।
-যাই হোক, আমি কিন্তু এখনো আমার জবাব পাইনি। আমি কি তুমিতে নামতে পারি?
-তোমার ইচ্ছা।
-আমার ইচ্ছা হলেই কি সব হবে?
-ভালোটা বাসছো তুমি, আমি বাসছি কি বাসছি না সেটা তোমার ভেবে লাভ নেই। তোমার ভালোবাসা তুমি বেসে যাও। আমি তো মানা করিনি।
-আপনি কি আমাকে ভালোবাসেন না?
-না।
-কেন? অন্য কেউ কি পছন্দের আছে?
-হুম।
-কে
-শাবনূর।
-আমি ফোন রাখলাম।
-ইচ্ছা হলে রাখো।
-না রাখবো না। কথা বলবো, আপনাকে যন্ত্রণা দিব।
-দাও।
আপনি এরকম গম্ভীর কেন?
-আমি গম্ভীর না। আচ্ছা দাঁড়াও একটা জোকস বলছি।
নাদিয়া কোন কথা বলে না। চুপ করে থাকে। লোকটা ওদিকে একই জোকস বারবার বলে যাচ্ছে। তার কান্না পাচ্ছে। ভয়ঙ্কর রকমের কান্না।
আদিম সহজাত প্রবৃত্তির কারণে, মানুষ প্রত্যাখ্যাত হওয়ার যন্ত্রণা সহ্য করতে পারে না। রাগীবের জন্য নাদিয়ার অসম্ভব রকমের কষ্ট হচ্ছে। অথচ লোকটার কিছুই হচ্ছে না। মানুষ ভালোবাসার অপব্যবহার কেন করে? একজন প্রচণ্ড ভালোবাসবে, অপরজন তার অবমাননা করবে!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।