আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিরিশিরি ও রানিক্ষং এর পথে সোমেশ্বরী নদীতে..



গত বছরের মার্চ মাসে আমি আর সোহেল ঠিক করলাম কোথাও ঘুরতে যাবো, উপলক্ষ ২ টা। ওর নতুন সনি ডিএসএলআর আলফা২০০ ক্যামেরা দিয়ে কিছু ছবি তোলা ঢাকার বাইরে আর আমার পাগলামির নতুন সংযোজন ইনফ্লেটেবল নৌকা টা চালিয়ে পরীক্ষা করা। ঘুরতে যাবো শুনে অফিসের এক কলিগ সায়রা বার বার অনুরোধ করাতে ঠিক করলাম বিরিশিরি যাবো, কখনো যাই নি, বিজয় স্বরণি তে গ্রামীনফোনের একটা বিলবোর্ডে বিরিশিরির নদীটার ছবি দেখে মনে গেঁথে ছিল। খোঁজ নিয়ে জানলাম মহাখালি বাস টার্মিনাল থেকে সকালে বাস ছাড়ে। দিনক্ষন দেখে ২৬ তারিখ সকালে আমি, সোহেল, টিটু আর ওর বৌ কেকা উঠে বসলাম বিরিশিরির বাসে (সায়রা মাইনাস হয়ে গেছে ওর স্বভাব মতো)।

হেলে দুলে ওখানে আমরা পৌছুলাম ১২টার দিকে, হেটে হেটে খুজতে লাগলাম ওয়াই-ডাব্লিউ-সি-এ র গেস্ট হাউজ। বড় রাস্তা থেকে একটু ভেতরে বেশ সাজানো গোছানো জায়গা, জিনিশ পত্র রেখে একটু ফ্রেশ হয়ে গেলাম আবার বাজারে, খুজতে লাগলাম "রুটিন" এর হোটেল। আগে থেকে জেনে গেছিলাম যে এখানে খাওয়া ভাল, নাম শুনে যদিও প্রথমে মনে করেছিলাম এখানে রুটিন মাফিক খাওয়া দাওয়া হয়, পরে জানলাম উপজাতী মালিক এর নাম "রুটিন"। পেট ভরে ঝাল মুরগির সাথে গরম ভাত আর ভাজি খেয়ে গেস্ট হাউজ এ ফিরে এসে ঝামেলা লাগলো সোহেল এর সাথে। আমি চাই একটু ঘুমাতে কিন্তু ও চায় নদীর ধারে যেতে, শেষে মাঝামাঝি সমঝোতা হল, আমি মিনিট বিশেক ঘুমানোর আনুমতি পেলাম, তারপর রোদ কমলে যাবো নদীর ধারে।

টিটুদের কনো মতামত নাই, ওরা ঢাকার বাইরে আসতে পেরেই খুশি। ছবি: শফিউল ইসলাম (সোহেল) ২০ মিনিট কে টেনে টেনে ঘন্টা খানেক পার করে (যারা আমাকে চেনে তারা খুব ভালো করে যানে আমাকে বিছানা থেকে তুলা কত কষ্টের) রওনা দিলাম নদীর উদ্দেশ্যে, সঙ্গে রাবারের নৌকা আর একটা বিচ্ শেলটার। রিক্সা নিয়ে নদীর তীরে এসে দেখি বিশাল চর। নদীর ধারে বালির উপর প্রথমে শেলটার টা লাগিয়ে ব্যাগ, ক্যামেরা রেখে হাত দিলাম নৌকা টাতে। সন্ধা পর্যন্ত ভালোই কাটলো নদীর বুকে নৌকা চালিয়ে।

সূর্য ডুবার পর ফিরে আসলাম ঘরে। ঐ দিন অনেক রাত পর্যন্ত গল্প করে সবাই ঘুমাতে গেলাম, সকালে যাবো রানিক্ষং। পরদিন সকালে রুটিন এর হোটেল এ নাস্তা করে (সাথে দুপুরের জন্য নিয়ে নিয়েছি পরাটা, মুরগি আর ভাজি) নৌকা নিয়ে রওনা দিলাম রানিক্ষং এর দিকে। রানিক্ষং রিক্সা, মটরবাইক এবং নৌকাতে যাওয়া যায়, আরামপ্রিয় আমি স্বভাবতই নৌকাতে যেতে আগ্রহী। অসাধারন সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে চললাম নদীর মাঝ দিয়ে।

রানিক্ষং এ স্কুল এর ঘাটে নেমে এবার রিক্সা নিলাম চীনা মাটির খনি তে যাওয়ার জন্য, পথে পড়ল একটা স্মৃতিসৌধ্য, কিসের মনে নাই এখন। ছবি: শফিউল ইসলাম (সোহেল) ছবি: শফিউল ইসলাম (সোহেল) ছবি: শফিউল ইসলাম (সোহেল) ছোট ছোট পাহাড়ের মাঝে চীনা মাটি তুলে তুলে এখানে বিশাল খাদের সৃষ্টি হয়েছে, অনেক গভীর এই খাদের পানি শীতে একদম নীল থাকে, মার্চের শেষে পানি সবুজাভ। আমি আর টিটু ঝাপিয়ে পড়লাম এই পানিতে, পানি দেখলে মাথার ঠিক থাকে না। এখান থেকে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল মিশনারি দের নাকি একটা খুব সুন্দর বিদ্যালয় আছে সেখানে, কিন্তু সবাই পরিশ্রান্ত থাকায় নৌকায় ফিরে যাওয়া ঠিক হলো। আসার সময় বেশ রোদ ছিল, যাওয়ার সময় বেশ আরাম, রোদ কম আর মৃদু বাতাস।

চীনামাটির পাহাড়: ছবি: শফিউল ইসলাম (সোহেল) রাতে দেখি শেষ পর্যন্ত রুটিন সাহেব হাঁস ম্যানেজ করতে পেরেছেন, ঝাল হাঁস আর ভাত...... উফ্ফ খিদা লেগে গেলো এখন আবার। ছবি: শফিউল ইসলাম (সোহেল) ছবি: শফিউল ইসলাম (সোহেল) মাছ না, কয়লা ধরার জাল: আরো ছবি দেখতে দেখুন আমার ফেসবুকের পাবলিক এলবাম .. বিরিশিরি

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।