আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এবারে চমক দেখালেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী

অশুভ শক্তির মুখোশ উন্মোচনেই তৃপ্তি

ধীরে ধীরে মুখোশ উন্মোচিত হচ্ছে আওয়ামী লীগের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চমকে ভরা মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা দেশবাসীকে চমকে চমকে স্তম্ভিত করে তুলছেন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রীরা নির্বাচনকে প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবিত করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছে খোদ নির্বাচন কমিশন। এ ব্যাপারে মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে মামলাও ঠুকেছে ইসি। আর এবারে চমক দেখিয়েছেন সরকারের বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী।

দু’জনের নামেও দারুণ মিল। সে যাই হোক, মাননীয় বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গত ৮ ফেব্র“য়ারি টেক্সটাইল প্রদর্শনীর উদ্বোধন করতে যান। অনুষ্ঠানের শুরুতেই নিয়মমাফিক কুরআন তিলাওয়াত করবার কথা থাকলেও বাধ সাধেন মন্ত্রী মহোদয়। তিনি আপত্তি জানিয়ে বলেন, এটি একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। তাই কুরআন তেলাওয়াত না করলেও কোনো সমস্যা নেই।

বাংলাদেশ অসা¤প্রদায়িক দেশ হওয়ায় এখানে কুরআন তেলাওয়াত করলে অন্যান্য ধর্মগ্রন্থও পাঠ করতে হবে বলে কুরআন তেলাওয়াতের কর্মসূচিকে তিনি অপ্রয়োজনীয় বলে উল্লেখ করেন সেখানে। মাননীয় মন্ত্রীর এই বক্তব্যে প্রথম যে প্রশ্নের সৃষ্টি হয় তা হলো, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানগুলোতে যেখানে এখন পর্যন্ত কুরআন তিলাওয়াতের রীতি বহাল আছে, সেখানে একজন মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে তা তেলাওয়াত করা হলে সমস্যা হবে কেন? দ্বিতীয় প্রশ্নটি হলো, সংবিধান পরিবর্তন করার আগেই মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় বাংলাদেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলার অধিকার রাখেন কি? আওয়ামী মন্ত্রীরা যদি মনে করেন বিপুল সংখ্যক আসনের অধিকারী হওয়ায় তারা এরই মধ্যে সংবিধানের ঊর্ধ্বে উঠে গেছেন এবং জনগণের কাছে তাদের কোনো দায় নেই, তাহলে তারা বোধ হয় ভুল করবেন। মন্ত্রীর এই বক্তব্য যদি দেশপরিচালনায় আগামী দিনে আওয়ামীলীগের কর্মনীতির প্রতিফলন হয়ে থাকে তবে তা আওয়ামী লীগের জন্যে নেতিবাচক হতে বাধ্য। কেননা, এদেশের জনগণ যদি সত্যি তাদের ইশতেহারের প্রতি আস্থা রেখে এবারের নির্বাচনে ভোট দিয়ে থাকে, তবে সেই ইশতেহারে ইসলামবিরোধী কোনো আইন প্রণয়ন না করবার অঙ্গীকারও যে ছিল সেটি আওয়ামী লীগের মনে রাখা প্রয়োজন। দেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত করা কিংবা বাহাত্তরের সংবিধানে প্রত্যবর্তনের মাধ্যমে সংবিধান থেকে ইসলামের উপাদানগুলোকে তুলে দেয়া হলে তা অবশ্যই সেই ইশতেহারের বিরুদ্ধাচরণ হবে।

আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করছি যে, নির্বাচনে বিস্ময়করভাবে বিজয়ী হবার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার নেতাকর্মীদের বক্তব্যে পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগলেও সময় যত গড়াচ্ছে, আওয়ামী চরিত্রের আসল রূপ ততোই প্রকাশিত হচ্ছে। নির্বাচনপূর্ব প্রতিশ্র“তির সরাসরি অস্বীকার, ড. কুদরত-ই-খুদা শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের উদ্যোগ, ঢাবিসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে দলীয়করণ এবং সার্বভৌমত্ববিরোধী চুক্তি সম্পাদনে আগ্রহ প্রকাশের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ তার মূল চরিত্রের দিকেই যেন ফিরে যাচ্ছে ক্রমশ। নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা আওয়ামী নেতাকর্মীদের মাঝে দায়িত্বানুভূতি জাগিয়ে তোলার পরিবর্তে যদি অতীত প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোভাব আর ইসলামবিরোধী চরিত্রের প্রত্যাবর্তন ঘটায়, তবে তা আওয়ামীলীগের জন্যে অত্যন্ত বিপজ্জনক হবে। আমরা চাই দেশকে এগিয়ে নেবার যে প্রত্যয় আওয়ামীলীগ গ্রহণ করেছে, সেটি বাস্তবায়নে সরকার দেশের মানুষের মতামতকেই গুরুত্ব দেবে সর্বাগ্রে। একটি টেকসই উন্নয়নের জন্যে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সবশেষে আবারো বস্ত্রমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর সেই বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তার সেই বক্তব্য যেন আগামী দিনের রাষ্ট্রপরিচালনার উপাদান না হয় সেই প্রত্যাশাই সবার।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.