ডাক্তার নার্স সবই আছে তারপরও হাসপাতালে কারো সহযোগিতা পেলেন না প্রসব বেদনায় কাতর খাইরুন্নেছা। অবশেষে হাসপাতালের মেঝেতেই একাকি সন্তান প্রসব করলেন তিনি। হতভাগ্য নবজাতকটি পৃথিবীর সুন্দর আলো দেখতে না দেখতেই টের পেল কত ভয়ংকর জায়গায় সে এসেছে। তবে হাসপাতালের পাকা মেঝেতে পড়েও সম্পুর্ন সুস্থ রয়েছে শিশুটি।
সোমবার দুপুরে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের দিনমজুর মুজিবুর রহমানের স্ত্রী খাইরুন্নেছার প্রসব ব্যাদনা শুরু হলে তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
যন্ত্রনায় কাতর এ মহিলাকে বিকাল ৪টায় কর্তৃপ হাসপাতালের গাইনী বিভাগের লেবার রোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সময়মত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ডাক্তার নার্স হাওয়া হয়ে যান। মিনিট দশেক যেতে না যেতেই প্রসব ব্যাদনায় কাতর খাইরুন্নেছা কষ্টের তীব্রতায় চিৎকার করতে থাকেন। তার সঙ্গে থাকা স্বামী ও এক ভাই কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সের কাছে শত কাকুতি মিনতি করেও তাদের আনতে ব্যার্থ হয়ে ফিরে আসেন। রোগির ভাই কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমার চউখের সামনে আমার বইন সন্তান জন্ম দের ইটা আমি দেখছি অথচ তাইরে ধরতাম পারছিনা।
আমি রোমর বাইরে থাকি কাচর দরজা বাইদি ই অবস্থা দেইক্কা আমার বুকটা ফাটি গেছে। চিল্লাইয়াও এখটা নার্সও আনতাম পারছিনা”। খাইরুন্নেছার স্বামী মুজিবুর জানান, ডাক্তারের হাতে পায়ে ধরেও আনতে পারিনি।
নির্মম এ অমানবিক ঘটনার খবর পেয়ে কয়েকজন সংবাদকর্মী হাসপাতালে গেলে কর্তৃপরে টনক নড়ে। অভিযুক্ত ডা. জালাল উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে লেবার রোমে গিয়ে দেখেন বাচ্চা ডেলিভারী হয়ে গেছে।
তখন তার আর কিছুই করার ছিলনা।
সাংবাদিকরা অবস্থানকালেই শিশুটিকে দেখতে হাসপাতালে আসেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. অসিত বরন দে। তিনি জানান ঘটনাটি অত্যন্ত নির্মম। দেখে গেলাম কর্তব্যে অবহেলাকারীদের বিরুদ্ধে অবশ্য শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. আশুতোশ দাশ জানিয়েছেন, ডাক্তার ও নার্সেও তীব্র সংকট রয়েছে এ হাসপাতালে।
তাই অনেক সময় ইচ্ছা থাকা সত্বেও সুচিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয়না। হাসপাতালে রোগির চাপ থাকায় এমনটি হয়েছে বলে তিনি জানান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।