আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পোশাকশ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

পোশাকশিল্পে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের চাকরি ও কর্মস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা, স্থায়ী মজুরি বোর্ড গঠন ও নূন্যতম মজুরি নির্ধারণ করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এক গোলটেবিল আলোচনায় এসব বিষয় উঠে আসে। গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র ‘গার্মেন্ট শ্রমিক হত্যাকাণ্ড, শিল্পের পরিস্থিতি ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির কার্যকরী সভাপতি সাদেকুর রহমান শামিম।


আলোচনায় অংশ নিয়ে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের প্রধান উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খান বলেন, পোশাক কারখানার শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে বিভিন্ন কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠন নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো থেকে মনে হচ্ছে, দেশে শ্রমিকদের লাশ নিয়ে ব্যবসা হচ্ছে। তাই তিনি সরকারের পক্ষ থেকে একটি ওয়েবসাইট খুলে সেখানে সাভারের ধসে যাওয়া রানা প্লাজায় হতাহতসহ ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য কত টাকা উঠেছে, কত টাকা তাঁদের জন্য খরচ করা হচ্ছে এবং তাজরীনের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের কত টাকা দেওয়া হয়েছে, তা সঠিকভাবে ওই ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার দাবি জানান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে নারীনেত্রী খুশী কবির বলেন, কাজ করার অধিকার, কাজ পাওয়ার অধিকার শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার। এই অধিকার নিশ্চিত করতে হলে শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

তাঁদের ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতা রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, পোশাকশ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে হলে তাদের চাকরির নিরাপত্তা, কর্মস্থলের নিরাপত্তা, মজুরির নিরাপত্তা, আইনের নিরাপত্তা ও বিচারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এসব অধিকার আদায়ে শ্রমিকদের শক্তিশালী সংগঠন থাকা জরুরি।
পাঁচ দফা দাবি
আলোচনায় পাঁচ দফা দাবি পেশ করা হয়। এগুলো হলো: তাজরীন ও রানা প্লাজার হত্যাকাণ্ডের জন্য সব দায়ী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

রানা প্লাজার পোশাক কারখানাগুলো ও তাজরীন ফ্যাশনসের নিহত, আহত, পঙ্গু শ্রমিকসহ সব শ্রমিকের নামের তালিকা প্রকাশ করতে হবে; সব ঝুঁকিপূর্ণ কারখানা শনাক্ত করে স্থানান্তর করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের মাধ্যমে নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে হবে; আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ অনুসারে অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সে লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন করা জরুরি; ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা ও সব গ্রেডে আনুপাতিক হারে মজুরি বাড়াতে হবে। পিসরেটের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধিসহ প্রোডাকশনের আগে মজুরি নির্ধারণ নিশ্চিত করতে হবে ও শ্রমশক্তি রক্ষায় সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রেশনিং, বাসস্থান, চিকিত্সা, শিক্ষা, যাতায়াত, বিমাসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। সব ধরনের দমননীতি বন্ধ করে শ্রমিকদের সঙ্গে ভদ্র ও মানবিক আচরণ করতে হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ কত হবে তা ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে হবে।

কারখানাগুলোর ঝুঁকি ও ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণে প্রথমেই একটি কমিটি গঠন করতে হবে। কোন কোন আইন পরিবর্তন করতে হবে, তা চিহ্নিত করতে হবে। একই সঙ্গে বাস্তবায়নে সমস্যা কোথায়, তা চিহ্নিত করে সমাধান করতে হবে।
আকাশ বলেন, শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মালিকদের মুনাফার মাত্র পাঁচ শতাংশ দিয়ে একটি তহবিল গঠন করা যেতে পারে। এই তহবিল থেকে শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া যেতে পারে।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.