আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাদার অ্যান

বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্‌উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ

মাদার অ্যান লি। নারীরুপী খ্রিস্ট বলে যিনি নিজেকে দাবী করেছিলেন। শেকারদের ধর্মসাধনায় সংগীত অপরিহার্য।

এজন্য অসংখ্য গান কম্পোজ করে তারা। গানের সঙ্গে নাচ; উপাসনায় প্রয়োজন হয় গান। শেকার সম্প্রদায়ে গানের প্রতিভা কে মনে করা হয় ঐশ্বরিক। তাদের গানের রয়েছে নিজস্ব স্বরলিপি -যা অনেকটা গ্রিক স্বরলিপির মতন দেখতে। Many of the lyrics to Shaker tunes consist of syllables and words from unknown tongues, the musical equivalent of glossolalia. It has been surmised that many of them were imitated from the sounds of Native American languages, as well as from the songs of African slaves, especially in the southernmost of the Shaker communities, but in fact the melodic material is derived from European scales and modes. তো কারা Shaker? শেকারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশিস্ট ধর্মসম্প্রদায়।

এদের পুরো নাম: the United Society of Believers in Christ's Second Appearing, যদিও ১৭৫০ সালের দিকে ইংল্যাল্ডের ম্যানচেস্টারে শেকারদের সূত্রপাত জেন এবং জেমস ওয়ার্ডলির বাড়িতে । তবে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে শেকারস-দের পথিকৃৎ হলেন মাদার অ্যান লি। এক দুঃসময়ে জেন এবং জেমস ওয়ার্ডলির সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল মাদার অ্যান লি-র। মাদার অ্যান লি-র জন্ম ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৭৩৬ খ্রিস্টাব্দে। ম্যানচেস্টারে।

আট ভাইবোনের মধ্যে অ্যান লি ছিল ২য়। কেমন দেখতে ছিল অ্যান লি? গড়ন ছোটখাটো, তার মানে বেঁটে, তবে ফরসা, নীলাভ চোখ, বাদামী চুল। তৎকালীন ম্যানচেস্টারে এতই হতদরিদ্র ছিল যে ম্যানচেস্টারেকে বলা হত ব্যাঙের গলি । আসলেই তাই। নোংরা।

ঘিঞ্জি। করকারখানা থেকে ভুরভুর করে সালফারের দুর্গন্ধ বেরুচ্ছে। এমনই এক অসহনীয় পরিবেশে বেড়ে উঠছিল। বালিকা অ্যান লি। অ্যান লির বাবার নাম জন লি; পেশায় কামার।

সামান্য আয়। টেনেটুনে সংসার চলছে। অ্যান লি লেখাপড়া শিখবে কি? কিশোরী বয়েসে ম্যানচেস্টারে একটা টেক্সটাইল মিলে কাজ নিল-কী খাটুনি! কটা বছর কাটল মিলে। বছর কুড়ি বয়স হলে ওখানকার কাজে ইস্তফা দিয়ে প্রথমে হাসপাতালে তারপর পাগলাগারদে রাঁধুনির চাকরি নিল। ম্যানচেস্টার শহরে ভালো লাগত না অ্যান লি-র।

ভিড়। রাস্তাগুলি ছিল নোংরা। যত্রতত্র বর্জ্য। আর মদের ছড়াছড়ি। ম্যানচেস্টারে বেশ কটা জিন মিলের ছিল।

দরিদ্র শ্রেণিতে বেশুমার মদ গেলার চল ছিল। কিন্তু, অ্যান লি-র হৃদয় ছিল অন্যরকম। মদ্যপ মানুষ দেখে ওর ভালো লাগত না। অ্যানের কেমন দিশেহারা দিশেহারা লাগত। ম্যানচেস্টার শহরটার চারিদিকে পাপ, ব্যাভিচার, অনাচার আর দারিদ্র।

কোথায় যিশুর শিক্ষা? মানুষের নৈতিক অবক্ষয় দেখে দেখে অ্যান লি প্রায় পাগলপ্রায় হয়ে উঠেছিল । যৌনতার প্রতি কেন যেন বিতৃষ্ণা জন্মেছিল। তাঁর জীবনীকার লিখেছেন- So great was her sense of its impurity, that she often admonished her mother against it, which, coming to her father's ears, he threatened and actually attempted to whip her; upon which she threw herself into her mother's arms and clung around her neck to escape his strokes. মানুষের সমস্ত দুভোর্গের জন্য কামকেই দায়ী করল অ্যান লি। পন করল বিয়ে করবে না। আগের একটা লেখায় আমি জর্জ ফক্স-এর কোয়েকার আন্দোলন নিয়ে লিখেছিলাম ।

সেই আন্দোলনে, যা হয়, ভাঙ্গন ধরেছিল। ছোট একটা দল বেরিয়ে গিয়েছিল জর্জ ফক্স-এর কোয়েকার আন্দোলন থেকে। যারা বেরিয়ে গিয়েছিল-তাদের বলা হত শেকিং কোয়েকারস। শেকিং কোয়েকারস সঙ্গে কোয়েকারদের মিল ছিল: উভয় দলই ব্যাক্তিগত আলোকপ্রাপ্তির কথা বলত। মূলত তারা দুদলই ছিল প্রেটেস্টান্ট।

ক্যাথলিক পোপ কিংবা গির্জা মানত না। শেকিং কোয়েকারসরা আবার ফরাসী আধ্যাত্মিক দলের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। সেই ফরাসী রহস্যবাদীদের বলা হত কামিসার। কামিসারা বিশ্বাস করত- যিশূর ২য় আগমন নাকি দূরে নয় আসন্ন। এবং, যিশু পুরুষ বলে তাঁর ২য় আবির্ভাব হবে নারীরুপে! শেকিং কোয়েকারসরা এই দুটি বিশ্বাসই গ্রহন করে জর্জ ফক্স-এর কোয়েকার আন্দোলন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।

জেন এবং জেমস ওয়ার্ডলি ছিলেন ইংল্যান্ডে শেকিং কোয়েকারস প্রবক্তা। তাদের বাড়িতেই নিয়মিত শেকিং কোয়েকারসরা সমবেত হত। প্রার্থনার সময় তারা ভীষন কাঁপত; গান গাইত; কর্কস গলায় চিৎকার করত আর নাচত। এসব কারণেই তাদের নাম হয়েছিল শেকিং কোয়েকারস! অ্যান লি জেন এবং জেমস ওয়ার্ডলির সংস্পর্শে এল। অ্যান লি নিজের জগৎ খুঁজে পেল।

জেন এবং জেমস ওয়ার্ডলিও বুকে টেনে নিল অ্যান লিকে। অ্যানের লি-র মুখটি ছিল নমনীয় এবং অভিব্যাক্তিপূর্ন। গম্ভীর প্রশান্ত। দৃষ্টি ছিল তীব্র, তীব্র ও প্রবেষক। জেন এবং জেমস ওয়ার্ডলির মনে হল-এই সেই নারীরুপী যিশু নয় তো-যার অপেক্ষায় রয়েছে জগৎ।

ওদিকে অ্যান লির বাবা অ্যান লিকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিল। মানুষের সমস্ত দুভোর্গের জন্য কামই দায়ী বলে মনে করত অ্যান লি। পন করেছিল বিয়ে করবে না। বাবা গায়ে হাত তুলল। এ আর নতুন কি।

মেয়েবেলা থেকেই মার খেয়ে আসছে। মি: ষ্টানডেরিন ছিল বাবার বন্ধু। সেই অ্যান লিকে বিয়ে করতে চায়। যা হোক বিয়ে হল। দেখা গেল ষ্টানডেরিন লোক হিসেবে খারাপ না।

অ্যান লিকে বোঝার চেস্টা করে। শেকিং কোয়েকারসদের সঙ্গে অ্যান লি-র ঘনিষ্টতা সহজ ভাবে নিয়েছে। বিয়ের পর পরপর ৪ সন্তান জন্মাল অ্যান লি-র। সবাই অল্প বয়েসেই মরে গেল। প্রবল অনুতাপে ভুগতে শুরু করল অ্যান লি।

মানুষের সমস্ত দুভোর্গের জন্য কামই যে দায়ী-এই ধারনা তীব্র হচ্ছিল। তাঁর জীবনীকার লিখেছেন-The tragic experiences of these years not only undermined Ann's health, both physical and mental, but strongly conditioned her views toward sex and the institution of marriage. She saw the deaths of her children as a series of judgments on her "concupiscence." Fearing to stir up the affections of her husband "she began to avoid her bed, as if it had been made of embers." She was afraid to sleep lest she "awake in hell," and night after night she walked the floor, "laboring for a sense of the word of God." স্বামীর সঙ্গে আর শোয় না অ্যান। বরং ধর্মকম্মে মন দিল অ্যান লি। অ্যান লি ততদিনে শেকারদের প্রভাবিত করতে শুরু করেছে। শেকাররা বিয়ের বিরুদ্ধে বলত।

নারীরুপে বিশ্বাস করত। ম্যানচেস্টারের লোকজন শেকারদের উপরে ক্ষেপে উঠল। কর্তৃপক্ষ ভুরু কোঁচকাল। অ্যান লিই এসব আকথা-কুকথার হোতা। অ্যান লিকে গেরেপতার করে কারাগারে নিক্ষেপ করা হল।

কারাগারে দৈবীবানী এল। হ্যাঁ। ঈশ্বর সকন্টে বললেন- "আমার কাছে সবাই সমান। একজন নারীও হতে পারে জগতের পতিত মানুষ সকলের উদ্ধারকর্ত্রী। তুমি তোমার আদিস্ট পথে নির্ভয়ে এগিয়ে যাও।

মৃত্যুভয়ে ভীত হলো না। " যথাসময়ে জেল থেকে বেরিয়ে এলেন অ্যান লি। বললেন, আমিই নারীরুপী যিশু। আমি কী বলি শোন। শোন, প্রথমে তোমরা শান্তিকামী হও।

তারপর জাতিগত ও লৈঙ্গিক বৈষম্যবিরোধী হও। দাসতন্ত্রের বিরোধী। ধনের সমবন্টনও দাবী কর। কী ভয়ঙ্কর কথা! সম্পদের সমবন্টনের কথা বলে এই নারী! কাজেই অ্যান লিসমতে শেকারবিরোধীতা তুঙ্গে উঠল ম্যানচেস্টারসহ খোদ ইংল্যান্ডে। তখনই মার্কিন দেশে আসার কথা ভাবলেন অ্যান লি।

২ ১৭৭৪। মাত্র আটজন সঙ্গী নিয়ে আমেরিকার মাটিতে পা রাখলেন অ্যান লি। স্বামীও এসেছিলেন। স্বামীর সঙ্গে শুতে চান না। ফলে স্বামীর সঙ্গে তিক্ততা বাড়ছিল।

Standerin had made one final attempt to coerce Lee into cohabitation by bringing a prostitute into their bedroom and threatening to marry her if Lee did not consent. When Lee refused to renounce her vows of celibacy, Standerin departed from her company. She never heard from him again. সঙ্গীদের নিয়ে ২ বছর নিউইয়কে থাকলেন অ্যান লি। ভয়ানক কষ্ট করলেন। নিউইয়র্কের লোকজন ক্ষেপে উঠল শেকারদের ওপর। বিয়েকে অস্বীকার করছে। একজন নারী হয়ে নিজেকে প্রফেট দাবি করছে।

লোকজন তো ক্ষেপে উঠবেই। নিউ ইয়র্কে আর টেকা যাচ্ছিল না। ওদিকে ব্রিটিশদের সঙ্গে মার্কিনীদের যুদ্ধও আসন্ন। লোকেরা শেকারদের মনে করলটোরি । টোরি মানে ব্রিটিশদের প্রতি সহানুভূতিশীল।

শেকারা আসলে কোনও দলেই ছিল না। এক শুভাকাঙ্খীর মারফত অ্যালবানিতে জায়গা কেনা হল । অ্যালবানি জায়গাটা নিউইয়র্কের কাছেই। অতি নিভৃত স্থান। ১৭৭৬ থেকে অ্যালবানির নিসকিয়ূনাতে বসবাস আরম্ভ করলেন মাদার অ্যান।

ওখানেই শেকারদের প্রথম কমিউনিটি। যপরবর্তীকালে যার নাম হয়েছিল-the United Society of Believers in Christ's Second Appearing, নিউইয়র্ক থেকে সরে এসেও বিপদ কিন্তু ঘুচল না। শেকারদের বলা হল ব্রিটিশ চর। কয়েকজন শেকারকে আটক করে নিয়ে গেল কর্তৃপক্ষভ। যা হোক।

শেকাররা নিরীহ বলে স্থানীয় জনগনের হস্তক্ষেপে ঘটনা বেশিদূর গড়ালো না। অ্যালবানিতে থিতু হওয়ার পর প্রাচারে নামলেন মাদার অ্যান। কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে ঘোড়ার পিঠে চেপে আশেপাশের অঞ্চলে ধর্মমত প্রচার করতে লাগলেন। অনেকেই গ্রহন করল। অনেকই গালিগালাজ করল।

মারধোর পর্যন্ত করল। তবুও ম্যাসাচুসেটসসহ অন্যান্য অঞ্চলের লোকে তাদের কথা শুনল। মত গ্রহন করল। অবশ্য অত সহজে নয়। কয়েকজন শেকারকে চাবুক মারা হল।

মাদার অ্যান কেও একদল উন্মুক্ত জনতা ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বার করে শারীরিকভাবে হেনস্তা করল। প্রচার কার্য শেষে অ্যালবানিতে ফিরে এলেন মাদার অ্যান। শরীর ভেঙ্গে আসছিল। সেপ্টেম্বর ৮; ১৭৮৪। জীবনে নানান কষ্টকর ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন।

এবার মুখোমুখি হলেন মৃত্যুর। Her final days had been spent sitting in her rocking chair "singing in unknown tongues … and holy divested of any attention to material things." Her disciples buried her in a simple wooden coffin, after a rousing Shaker celebration of her life and her passing into the realm of spirit. তাঁর দাবী যাই হোক- শান্তিকামী ছিলেন মাদার অ্যান লি। ছিলেন জাতিগত ও লৈঙ্গিক বৈষম্যবিরোধী; ছিলেন দাসতন্ত্রের বিরোধী। ধনের সমবন্টনও দাবী করেছিলেন মাদার অ্যান। ৩ শেকাররা আজও সাদামাটা জীবন যাপন করে অ্যালবানিতে; ওদের কেউই তেমন ব্যাক্তিগত সম্পদের অধিকারী নয়।

ওদের কমিউনিটিতে ইলেকট্রিসিটি নাই, নিজেরাই পরিশ্রম করে। লাঙল দিয়ে জমি চাষ করে। শেকারদের ঘরদোর-সবই ছিমছাম। সাদামাটা। শেকারদের হাতের কাজ অসাধারণ।

বিশেষ করে কাঠের চেয়ার। আগেই বলেছি। শেকারদের ধর্মসাধনায় সংগীত অপরিহার্য। এজন্য অসংখ্য গান কম্পোজ করে তারা। সেই সঙ্গে নাচ; উপাসনায় প্রয়োজন হয় গান।

কখনও জোছনা রাতে শেকাররা আজও জড়ো হয় অরণ্যের কাছাকাছি কোনও মাঠে। আগুন জ্বালায়। গান গায়। হাত ধরাধরি করে নাচে। অনেক অনেক দূরের নক্ষত্রলোক থেকে সে অপার্থিব দৃশ্য দেখেন মাদার অ্যান।

আরও জানার জন্য দেখুন- http://www.answers.com/topic/ann-lee


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।