ভীষন চাপের মাঝে দিনিতিপাত করছি। এমন এক পেশায় আছি যা ভীষন কাঠখোট্টা রকম রুটিনে বাঁধা। অফিস ছুটির পরে আমার স্বপ্ন পূরণের যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া। এর সাথে পরিবারকে সময় দেয়াতো আছেই যা আমার জন্য বিশাল একটা ব্যাপার। এসব কিছুর পরে নিজের জন্য একান্ত কিছু সময় যা আমার শখের পাওনা তা দিতে গেলে কিছুই আর কুলিয়ে ওঠেনা।
প্রথমতঃ করি প্রাইভেট ব্যাংকে চাকুরী। অফিস ছুটি হতে হতে সন্ধ্যা গড়াবেই। সন্ধ্যার পরে যাই আইবিএ তে এমবিএ'র ক্লাশ করতে। ফিরতে ফিরতে রাত। এরপর এক-আধ ঘন্টা পরিবারের জন্য বরাদ্দ।
তারপর আবার পরদিনের প্রস্তুতি।
এত কিছুর মাঝে আমার প্রিয় শখ বা নেশা, গান গাওয়া, তার জন্য সময় দেয়া অসম্ভব, অথচ সেটা ছাড়া আমার নিজেকে কখনোই পরিপূর্ণ মনে হয়না। যদিও গান ভাল গাই তা না তবুও মনে হয় এটা যেন আমার জীবনের এক অচ্ছেদ্য অংশ। তই চেষ্টা করি শুক্রবারটা একটু শখের পেছনে ব্যায় করতে, কিন্তু তাতে আমার সংসারের প্রতি অবিচার করা হয়, কারণ সারা সপ্তাহ আমার মেয়ে ও তার মা অপেক্ষা করে এই দিনটির জন্য। তাই তাদের ছেড়ে বাইরে যাওয়াটা মোটেই পছন্দ না তাদের।
ক'দিন আগে একটা অফার পেলাম পুরোনো বন্ধুদের কাছ থেকে, আসছে ৭ই নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করা লাগবে। সলিল চৌধুরীর সব গান; কোরাস, সলো। শুনেই লাফিয়ে উঠলাম, কিন্তু সময় যে আর পাইনা। সব কিছু আমাকে এমন আষ্ঠেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে যে! শুধু মনে পড়ে ক্যাম্পাস জীবনের কথা। আবহমান সাংস্কৃতিক গোষ্ঠির সাথে কাজ করতাম।
কত প্রোগ্রাম করেছি। রাতের পর রাত রিহার্সাল। শীতের সময় নিজে গান লিখে, সুর করে সেই গান গেয়ে সবাই মিলে শীতার্তদের জন্য চাঁদা তুলে শীত বস্ত্র কিনে মাঝ রাতে বস্তিতে বস্তিতে গিয়ে কাপড় বিলিয়েছি। বন্যার সময় ভ্যানে. ট্রাকে চড়ে গান গেয়ে ফিরেছি...... কোথায় গেল সে সব দিন! ভাবলেই কষ্ট লাগে, বাস্তবতা আজ কি নিদারুন এক শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে ফেলেছে।
তবু বন্ধুদের কথা ফেলতে পারিনি, অন্তরের গভীরের ডাক উপেক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
কথা দিয়েছি অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠব। সেই সাথে ভীষণ উত্তেজনা কাজ করছে মনে মনে, কত দিন পরে স্টেজ শো, কে জানে কেমন হয়!
আমার কর্তব্য, স্বপ্ন আর শখের যেন সঠিক কম্বিনেশন করা সম্ভব হয় (যার সবগুলোর ব্যাপারেই আমি ভীসণ সিরিয়াস ওডেডিকেটেড); ব্লগার বন্ধুরা আমার জন্য দোআ করবেন আশা করি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।