বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
Shinto beliefs and ways of thinking are deep in the subconscious fabric of modern Japanese society. The afterlife is not a primary concern in Shinto; much more emphasis is placed on fitting into this world, instead of preparing for the next.
বৌদ্ধধর্ম জাপানে পৌঁছেছিল ষষ্ট শতকে।
তারপর থেকেই তথাগতর ধর্মটি ওই দেশটিতে আদৃত হয়ে আছে।
তার অনেক আগে থেকেই জাপানের নিজস্ব ধর্ম ছিল।
শিন্টো।
আজও দুটি ধর্মই পালন করে জাপানিরা। জাপানের নিজস্ব আদি ধর্ম শিন্টো। আদি ধর্মকে কি এত সহজে ভোলা যায়? বাংলাদেশের মুসলিম সমাজে কি লোকায়ত উপাদান নেই? আছে।
শিন্টো ধর্মের কথা হচ্ছিল।
পরে এই ধর্মটিকে জাপানি শাসকগন রাষ্ট্রীয় ধর্ম করেছিল হয়েছিল। বাংলাতেও তাই হয়েছিল। পালেরা বৌদ্ধধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম করেছিল।
শিন্টো ধর্মে “কামি” বা আত্মার উপাসনা করা হয়। সে প্রসঙ্গে আমরা পরে আসব।
আগে দেখি শিন্টো শব্দের কি অর্থ।
শিন্টো শব্দটি দুটো শব্দ মিলে তৈরি হয়েছে। “শিন” এবং “টো”। শিন মানে আত্মা। টো মানে পথ।
সুতরাং, শিন্টো শব্দের অর্থ দাঁড়ায়: আত্মার পথ।
এখানে বলে রাখা ভালো যে শিন শব্দটি কিন্তু আদৌ জাপানি শব্দ নয়-বরং চৈনিক। এমন হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। আমাদের বাংলায় কত কত উত্তর ভারতীয় শব্দ ঢুকে গেছে।
লাতিন শব্দ ANIMA মানে আত্মা বা জীবন।
তো, শিন্টোর আলোচনায় লাতিন কেন?
বলছি। এক ধরনের বিশ্বাস এ গ্রহে প্রচলিত প্রাচীন কাল থেকেই প্রচলিত যে- পশু উদ্ভিদ কি অন্যান্য বস্তুর ভিতরে রয়েছে প্রাণ। এই ধারনা কে বলে Animism. ওই লাতিন ANIMA শব্দ থেকেই Animism শব্দের উদ্ভব।
শিন্টো,বলাবাহুল্য, অনিবার্যভাবেই এক ধরনের Animism.
আবার এটি এক ধরনের শামানবাদী ধর্ম।
তে, শামানবাদী ধর্ম কি?
যে ধর্মে নানা রকম অর্চনার মাধ্যমে আত্মার জগতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় তাই শামানবাদী ধর্ম।
এটিও মানবসভ্যতার অতি প্রাচীন বিশ্বাস। শিন্টোতে তাও হয়, মানে আত্মার জগতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তখন বললাম না যে শিন্টো ধর্মে “কামি” বা আত্মার উপাসনা করা হয়।
শিন্টোর শিক্ষা এই যে- এ গ্রহের সবেতে কামি রয়েছে। কামি হল, আগে বলেছি, আত্মা।
এই আত্মা বা কামি রয়েছে প্রতিটি পাথরে, কাঠবেড়ালিতে; প্রতিটি জীবন্ত কি মৃত প্রাণিতে । উপরোন্ত, কামি পবিত্র ও স্বর্গীয়।
শিন্টো ধর্মের মূল প্রতিপাদ্য চারটি। (আসলে শিন্টোর কোনও নিয়মকানুন নেই। এসব পরে সংযোজিত হয়েছে।
)
১) পরিবার ও ঐতিহ্য। এ দুটোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। এটা কমন। অন্য ধর্মেও আছে।
২) প্রকৃতির প্রতি প্রেম।
প্রকৃতি পবিত্র। প্রকৃতির সঙ্গে যোগ মানেই কামির সঙ্গে যোগ। প্রাকৃতিক বস্তুকে পবিত্র জ্ঞান করে উপাসনা করা হয়।
( বিশ্বের চারটি প্রধান ধর্মের সঙ্গে কামিবাদীরা এখানেই পৃথক। মার্কসবাদীদের সঙ্গে কামিপন্থিদের তফাত লক্ষনীয়।
সব মানুষের জন্য কল্যাণকর সমাজের জন্য মার্কসবাদীরা প্রকৃতিকে বদলাতে চায় । শিন্টোবাদীরা বলে যে, প্রকৃতি যেমন আছে তেমনই থাকুক। বিশ্বের চারটি প্রধান ধর্মে সেভাবে, মানে কবির চোখে নিরপেক্ষভাবে প্রকৃতিবন্দনা কই। যা আছে তা হল, দেখ প্রকৃতি কি জিনিস। যে এইটা বানাইছে সে কি চিজ!)
৩) সূচিতা-শুদ্ধতা: স্নান।
হাত ধোওয়া। কুলি করা। শিন্টোবাদীরা এসব নিয়মিতভাবেই করে। এটাও কমন। অন্য ধর্মেও আছে।
৪) মাটসুরি। প্রতি বছর বেশ কয়েবারই কামি-কে ঘিরে উৎসব হয় । ওটাই মাটসুরি।
(আপনারা অনেকেই জাপানি কম্পেজার কিটারোর নাম শুনে থাকবেন। এঁর মাটসুরি নামে চমৎকার একটি কম্পোজিশন আছে।
নেটে সার্চ করে শুনবেন। )
যা হোক। শিন্টো ধর্মের আসলে নিদিষ্ট মতবাদ নেই, পবিত্র স্থান নেই, মানে তীর্থ নেই, কোনও পবিত্র ব্যাক্তি নেই, মানে ধর্মব্যবাসা নেই, নেই নির্দিষ্ট প্রার্থনা । বরং রয়েছে কিছু শামানবাদী কৃত্য, রয়েছে কামির সঙ্গে যুক্ত হবার পদ্ধতি। ধর্মটি যেহেতু এক ধরনের Animism.
সবচে জরুরি প্রশ্ন প্রাচীন জাপানের মানুষ ওভাবে ভেবেছিল কেন?
কে বলতে পারে?
জাপানের আদিম মানুষ চোখ মেলে প্রকৃতি দেখেছিল।
জাপানের প্রকৃতি তো সুন্দর। ছেলেবেলায় আমি নীল রঙের একটি জাপানি স্ট্যাম্প দেখেছিলাম। কি এক পাহাড় ছিল। সেই নীলাভ রঙের স্মরণে আজও শিউরে উঠি। তো, আদিম জাপানিদের
এমন মনে হওয়া বিচিত্র নয় যে সেই সুন্দর প্রকৃতিতে রয়ে গেছে আত্মা।
কামি।
সে যাই হোক। জাপানের উন্নতির সহায়ক হয়েছিল শিন্টো ধর্ম।
শিন্টো ধর্ম অহেতুক পরলোকপন্থি নয়। ধর্মব্যবসায়ী নেই এতে।
জগতে বাস করে জগৎকে অস্বীকার করা হয়নি কামি-অর্চনায়।
শিন্টো ধর্মের এই দিকটা আমার ভালো লাগে।
আমার তো শিন্টো ধর্মকেই জগতের শ্রেষ্ট ধর্ম বলে মনে হয়।
হয়তো তথাকথিত সভ্যতার প্রভূত ভারে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি বলে।
আজকাল ভীষন নুব্জ বোধ করছি বলে।
আদিম অরণ্যে ফিরে যেতে চাই বলে।
এককালে নিষাদেরা যেখানে বোঙ্গা দেবতার...
লিঙ্ক:
http://en.wikipedia.org/wiki/Shint�
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।