আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ওল্ড ইজ গোল্ড

বাংলাদেশ ব্লগারস এসোসিয়েশন সদস্য নং: ১০ । facebook.com/milton3d

এবার ঈদে কিছুই নেয়া হয়নি। বাচ্চার জন্য শুধু একটা ড্রেস কিনেছি। আমি বা আমার স্ত্রী কোন কাপড় চোপড় ইচ্ছা করেই নেইনি কারণ এবার সেই টাকা দিয়ে ড্রইংরুমের সোফাটা মেরামত করছি। ইচ্ছাটা আমার স্ত্রীর।

সোফার সবই ঠিক ছিল কিন্তু কাপড়গুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। একেতেই বাচ্চারা সারাক্ষন খচাখচি করে। তার ফলে কয়েক জায়গায় কাপড় একটু ছিঁড়ে বা ফেঁসে গিয়েছিল। আমার একটা বাজে স্বভাব হলো ঘরের কোন পুরোনো জিনিস ফেলে দিতে মায়া লাগে। ইচ্ছা করলেই নতুন একটা সোফা কিনতে পারতাম বোধ হয়।

কিন্তু বাবা মায়ের সংসারের ফার্নিচার। নষ্ট করতে মায়া লাগে। তাই ওটাকেই আবার নতুন কাপড়, ফোম, তুলা, কাগজ, সুতা ইত্যাদি উপাদান দিয়ে নতুন করে বাঁধিয়ে নিলাম। কাজ করছে উর্দুভাষী দুজন মিস্ত্রী। একজন আমার বয়সী।

সে হলো বস। আরেকজন তার কর্মচারী। খুবই এক্সপার্ট হাত। দেখে মনে হচ্ছে এই সোফাটি যখন বানানো হয়েছিল সেই-ই বানিয়েছিল। কোথায় কি আছে, সে সেটা জানে।

যাই হোক কাজ করার সময় আমি তার সামনে দুই একসময় বসে ছিলাম কাজ দেখছিলাম। আর ঐ হেড মিস্ত্রীর সাথে গল্প করছিলাম টুকটাক। দেখলাম মুখের ভিতরে একগাদা পেরেক নিয়ে সেটা জিভ দিয়ে একটা একটা করে বের করে আনছে আর একহাত দিয়ে ধরে অন্য হাত দিয়ে হাতুড় মারছে। চমৎকার নৈপুন্যতা। কোথাও কোন ফাঁক নেই।

একটা মুহুর্তের জন্যও বসে নেই। সুন্দর কাজ করে চলছে। আমি আমার কোলের বাচ্চাকে তাকে দেখিয়ে বললাম, এই যে বাচ্চা দেখছেন, আমি যখন এমন ছিলাম তখন নাকি আমার বাবা মা এই সোফাটা কিনেছিলেন। আমি তাকে একটু অবাক করে দেওয়ার জন্য এই ভাবেই সত্য কথাটা বললাম যে দেখো, কত আগের সোফা। আমাকে আশ্চর্য করে দিয়ে মিস্ত্রী সাহেব বলল, তাতে কি? আপনি এই সোফাতেই বসে আপনার এই ছেলের বিয়ের কথা বার্তা পাকা করতে পারবেন আপনার হবু বিয়াই এর সাথে।

তখনও এই সোফা এই রকমই থাকবে। শুধু মাঝ খানে একবার আবার কাপড় তুলা চেইঞ্জ করে নিবেন। আসলে এটাই সত্যি। কারন ভিতরের কাঠামোটাই আসল। ওটার উপরই নির্ভর করে সোফার লংজিভিটি।

ভিতরের কাঠ এতই মজবুত যে সেটাতে এতদিনেও কোন ঘুন ধরেনি। আর আরো ৩০/৩৫ বছর নাকি এমই থাকবে যদি ভাল ভাবে রক্ষনাবেক্ষন করা যায়। আসলেই ওল্ড ইজ গোল্ড। আমি হ্যাপি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।