ইচ্ছেমতো লেখার স্বাধীন খাতা....
গত শতাব্দীর শুরুতে যে কয়জন বাঙালি সাহিত্য চর্চা করে বিখ্যাত হয়েছেন তার মধ্যে এস ওয়াজেদ আলি অন্যতম। সত্য ও সুন্দরের সাধনায় নীতিজ্ঞান ও প্রেমের শাশ্বত মহিমায় তার সাহিত্যকর্ম সমৃদ্ধ। তার লেখায় মার্জিত রুচি ও পরিচ্ছন্ন রসবোধের পরিচয় পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ জন্মের বহু আগেই বৃটিশ আমলে, বাংলাভাষী মানুষকে নিয়ে জাতি গঠন করার স্বপ্ন দেখেন। তার বই 'ভবিষ্যতের বাঙালি'তে এমন স্বপ্নের প্রতিফলন দেখা যায়।
১৮৯০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শ্রীরামপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
এস ওয়াজেদ আলির শিক্ষাজীবন শুরু হয় বড়তাজপুর পাঠশালায়। ১৮৯৮-এ শিলং গিয়ে সেখানে মোখার হাই স্কুলে ভর্তি হন। এ স্কুল ১৯০৬ সালে তিনি স্বর্ণপদক পেয়ে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাস করেন। আলীগড় কলেজ থেকে ১৯০৮ সালে আইএ এবং এলাহাবাদ ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯১০ সালে বিএ পাস করেন।
১৯১২ সালে আইন পড়ার জন্য তিনি ইংল্যান্ড যান। ১৯১৫ সালে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে বিএ ও বার অ্যাট-ল ডিগ্রি লাভের পর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন।
দেশে ফিরে তিনি কলকাতা হাই কোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন। ১৯১৯ সালে একটি ইংলিশ মাসিক পত্রিকা প্রকাশ ও সম্পাদনা শুরু করেন। ১৯২৩-এ তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগ দেন।
১৯২৫-এ তিনি বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯২৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর তার সভাপতিত্বে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় সংবর্ধনা দেয়া হয়। এ সময় তিনি মাসিক সাহিত্য পত্রিকা গুলিস্তা (১৩৩২) প্রকাশ ও সম্পাদনা শুরু করেন। ১৯৪৫-এ তিনি কলকাতার তৃতীয় প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট পদ থেকে অবসর নেন এবং আবার আইন ব্যবসা শুরু করেন।
এস ওয়াজেদ আলির বেশকিছু গল্প ও প্রবন্ধ ও ভ্রমণ কাহিনী বিখ্যাত।
তার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ হচ্ছে জীবনের শিল্প (১৯৪১), প্রাচ্য ও প্রতীচ্য (১৯৪৩), ভবিষ্যতের বাঙালি (১৯৪৩), আকবরের রাষ্ট্র সাধনা (১৯৪৯), মুসলিম সংস্কৃতির আদর্শ, ইকবালের পয়গাম ইত্যাদি। গল্পের মধ্যে রয়েছে গুলদাস্তা (১৯২৭), মাশুকের দরবার (১৯৩০), দরবেশের দোয়া (১৯৩১), বাদশাহী গল্প (১৯৪৪), গল্পের মজলিস (১৯৪৪) ও ভাঙ্গাবাশী। ভ্রমণ কাহিনীর মধ্যে রয়েছে মোটরযোগে রাচির সফর (১৯৪৯), পশ্চিম ভারত (১৩৫৫)। ঐতিহাসিক উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে গ্রানাডার শেষ বীর (১৯৪০)।
১৯৫১ সালের ১০ জুন তিনি কলকাতায় মারা যান।
আজকে ৮ সেপ্টেম্বর এস ওয়াজেদ আলির জন্মদিন উপলক্ষে ওনার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
[নোট- বাংলা একাডেমীর চরিতাভিধান অনুযায়ী এস ওয়াজেদ আলির জন্মদিন ৮ সেপ্টেম্বর কিন্তু উইকিপিডিয়া অনুযায়ী ৪ সেপ্টেম্বর। সঠিকটা কারো জানা থাকলে শেয়ার করার অনুরোধ রইলো]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।