বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংস্কৃতির জন্য অপমানজনক কোনকিছু এই ব্লগে লেখা যাবে না।
ছোটবেলায় আমি মোটামুটি শান্ত প্রকৃতির ছিলাম। তবে মাঝে মাঝে যে দুষ্টুমি করতাম না, তা না। একবার মনে আছে একজনের উপর রাগ করে ঘুসি মেরে জানালার কাঁচ ভেঙ্গে ফেলেছিলাম। পরেরদিন আমার স্কুলে কি যেন একটা পরীক্ষা ছিল।
আমি বুদ্ধি করে ঘুসিটি বাম হাতে মেরেছিলাম , কারণ ডান হাতে মারলে তো পরেরদিন পরীক্ষা দিতে পারতাম না।
খেলাধুলার প্রতি আমার বরাবরই প্রবল আকর্ষণ ছিল। স্কুলে থাকতে একবার একটি ফুটবল ম্যাচে আমি গোলরক্ষক ছিলাম। সেই ম্যাচে টাইব্রেকারে আমি প্রতিপক্ষের শট ঠেকিয়ে আমার দলকে জিতিয়েছিলাম। সেদিন আমার খুশী দেখে কে ; খেলাটি শেষ হওয়ার সাথে সাথে আমি “চ্যাম্পিয়ান” বলে চিৎকার করে উঠেছিলাম আর আমার টিমমেটরা আমাকে কাঁধে তুলে কিছুক্ষন নাচল।
এরকম ছোটখাট ম্যাচ তখন প্রায়ই খেলতাম। একটু বড় হওয়ার পর ফুটবল বাদ দিয়ে ক্রিকেটের দিকে ঝোঁকটা বেড়ে গেল। আসলে ক্রিকেটের প্রতি আমার ঝোঁকটা তৈরী হয় ’৯২ এর বিশ্বকাপের পর থেকে। সেবার ইনজামামের ধুন্ধুমার ব্যাটিং দেখে পাকিস্তানের ক্রিকেটের খুবই ভক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের পাড়ায়ও তখন প্রতিদিন বিকেলে ক্রিকেট খেলতাম।
অনেক মজা হত তখন।
তারপর যখন হাইস্কুলে উঠলাম, তখন দুষ্টুমিটা একটু বেড়ে গেল। আমার অনেক ছোটবেলার বন্ধু, নাম রাহাত, আমার সাথে ঐ হাইস্কুলে পড়ত। ক্লাস এইটে থাকতে আমাদেরকে বৃত্তি পরীক্ষার জন্য স্কুল ছুটির পরে স্কুলে কোচিং করতে হত। আমি আর রাহাত সেই কোচিং করার ব্যাপারে বিন্দুমাত্র উৎসাহী ছিলাম না, তাই প্রায়ই আমরা স্কুল ছুটির পর স্কুল পালাতাম।
স্কুল পালানোটা আমাদের কাছে একরকম অ্যাডভেঞ্চার এর মত ছিল। একদিন স্কুল পালাতে পারলে মনে হত বিরাট একটা কাজ করে ফেলেছি। এমনই একদিন স্কুল শেষে পালাতে গিয়ে ক্লাস ক্যাপ্টেনের নজরে পড়ে যাই। পরেরদিন সকালে সেই ক্যাপ্টেন আমাদের ক্লাস টিচারকে ঘটনা জানিয়ে দেয়। ক্লাস টিচার সেদিন আমাকে আর রাহাত কে বেত্রাঘাত করেছিলেন।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, সেদিন ক্লাস টিচারের হাতে মার খেয়েও আমরা স্কুল ছুটির পর আবার পালিয়ে গিয়েছিলাম।
স্কুলের শেষদিনটাও অনেক মজার ছিল। যেহেতু সেদিন আমাদের স্কুলের শেষদিন ছিল, তাই রং ছিটানোর একটা ব্যাপার ছিল(যেটা ‘রগ ডে’ নামে পরিচিত)। অনেকের সাদা শার্ট লাল রঙ এ জর্জরিত হয়ে গিয়েছিল। এমনই এক ছাত্র, যার সাদা শার্ট লাল রঙ এ রঞ্জিত, সে গিয়েছিল এক টিচারের কাছে তার প্র্যাকটিক্যাল খাতা স্বাক্ষর করানোর জন্য।
ঐ ছাত্রের শার্টের ঐ অবস্থা দেখে সেই ম্যাডাম তো রেগে আগুন।
এরকম আরো অনেক টুকরো কিছু স্মৃতি এখন মাঝে মাঝেই মনে পড়ে। যখনই সেসব শৈশবের স্মৃতি মনে পড়ে, তখন নষ্টালজিয়ায় মনটা আচ্ছাদিত হয়ে যায়। আসলে শৈশবের সেই দিনগুলোর স্মৃতি কখনোই ভোলার নয়। আমরা যতই বড় হতে থাকি, জীবনটা ধীরে ধীরে জটিল থেকে জটিলতর হতে থাকে।
তখন শৈশবের সেই সরল এবং দুষ্টুমিভরা জীবনের স্মৃতিগুলো মনে পড়লে প্রায়ই মন খারাপ হয়, তখন মনে হয় আহ্ যদি ফিরে যেতে পারতাম সেসব দিনগুলোয়। তাহলে বর্তমানের এই জটিলতা থেকে মুক্তি মিলতো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।