শেকল আমাকে আটকাতে পারবেনা, পারবে সময়। সময়ের আগে তাই ছুটে চলেছি। শুরু টা করছি জাবি নিয়ে লিখা একটি ব্লগে একটি কমেন্ট দিয়ে,
"অদম্য_পথিক বলেছেন: "র্যাগিংয়ের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে দ্রুত সম্পর্কের উন্নতি করা যায় বলে তিনি মন্তব্য করেন। "
"ভাই আমি এক বছর আগে যখন SUST এ ভর্তি হই তখন মেস না পেয়ে ছাত্র লিগের আন্ডার এ এক হল এ উঠি র্যাগ এর সময় আমাকে কোলবালিশ দিয়ে বলে ডগি স্টাইল দে। এটার সাথে সম্পর্কের উন্নতি হওয়ার কি সম্পর্ক সেটা আমার মাথায় এখনও ঢোকে না।
"
ব্লগ লিঙ্কটি নিচে দিয়ে দিয়েছি।
জাবি নিয়ে অনেক কথাই হল। কেউ প্রতিবাদ করছেন, তো কেউ ঘটনার সপক্ষে প্রমাণ দিয়েছেন। ঘটনা সত্য কি অসত্য তা আমরা জানি না। সচক্ষে এই ঘটনার প্রমাণ দেখিনি।
তবে যারাই প্রতিবাদ করছেন ঘটনা সত্য ন্য বলে, তাদের কাছে একটি আহবান হলঃ দেখুন, আমি নিজেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আমার ক্যাম্পাসে গত প্রায় চার বছরে প্রায় একটিও অপ্রিতিকর ঘটনা দেখিনি। কিন্তু বিগত বেশ কিছু বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া অপ্রিতিকর ঘটনার কারণে যেই লেবেল টা ঢাকা ইউনিভারসিটির গায়ে লেগে গিয়েছে, তার অপমান মাঝে মাঝেই সইতে হয় অনেকের কথায়, আচরণে। তাদেরকে দোষ কিভাবে দেব? সিচুয়েশন হয়ত পরিবর্তন হয়েছে, হয়তো ৮০-৯০% পরিবর্তন হয়েছে তারপরও দুস্ক্রিতকারীরা তাদের উত্তরসুরী রেখে গিয়েছে, রেখে গিয়েছে ভয়ঙ্কর কিছু উদাহরণ, এত সহজে যেগুলো মুছে যাবে না। কিছু সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী এখনও তাদের পুর্বসুরিদের দেখানো পথে সেসব কুকির্তী তে মেতে উঠে।
সংখ্যায় কম হতে পারে আগের থেকে , কিন্তু ঘটনার ভয়াবহতা কিন্তু মোটেও কমে না। ঢাকায় তেজগাঁওতে খোদ নামকরা একটি বেসরকারী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ র্যাগিং নিষিদ্ধ, ছাত্র বহিষ্কার করার পরও মেয়েদের বাথরুমে র্যাগিং এর কাহিনি গত দুই সেমিস্টার ধরেই শুনলাম আমার এক বোনের থেকে। সেখানে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কর্তৃপক্ষের আদেশ নির্দেশ তো আরও সহজে অমান্যযোগ্য। জাহাঙ্গীরনগর অনেক দিয়ে অনেক প্রশংসনীয় একটি বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু এটাও ঠিক যে, নিপীড়ন , বিশেষত যৌন নিপীড়ন সংক্রান্ত যে অভি্যোগ এর নামের পাশে লেগে গিয়েছে, তা একদিনে হয় নি।
বহু মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গিয়েছে, বেশির ভাগি কিন্তু লোকচক্ষুর আড়ালেই। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনই সম্পৃক্ততা না থাকলেও তাদের কে বহন করে হয়েছে এসব ঘটনার দুর্নাম। পারসেপশন, উদাহরণ , অপসংস্কৃতি একদিনে যেমন গড়ে ওঠে না, তেমন দ্রুত মুছেও যায় না। হয়তো প্রকাশ্যে র্যাগিং অনেক কমেছে, কিন্তু লোকচক্ষুর আড়ালে হয়ত ঘটেই যাচ্ছে। আগে যেখানে অনেক হত এখন হয়ত সেখানে খুবই নগণ্য হয়।
কিন্তু সেই নগন্যদের মধ্যেই যদি আমার বোন পড়ে যায়? জাহাঙ্গীরনগরের ছাত্র-ছাত্রী বন্ধুদের কাছে অনুরোধ, আপনারা ঘটনাকে অবাস্তব বলে উড়িয়ে না দিয়ে, আপনারাও সোচ্চার হোন যে এখনও কেন একটি এমন ঘটনাও ঘটবে। ভেবে দেখুন, এখনো নিপীড়নের মূলোৎপাটন হয় নি। মূলোৎপাটনের অভিপ্রায় যখন আছেই, আংশিক নয়, পুরোটা করেই বাড়ি ফিরুন , করজোড় মিনতি। এবং এর মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয় এরই লাভ হবে, উন্নততর মেধাবীরা আসবে, ডিগ্রীর মূল্য আরও বাড়বে, আমরাও ছোট বোনদেরকে জাহাঙ্গীরনগর এ ভর্তি করিয়ে দুশ্চিন্তার বদলে গর্বে বুক ফুলে নির্ভয়ে থাকতে পারব। ।
প্রসঙ্গত, এটাও লক্ষ্য রাখা জরুরী ছাত্রলীগ, ছাত্রদল এবং বিশেষত শিবির যেন এ সব ঘটনাকে কাজে লাগাতে না পারে, সতর্ক থাকা জরুরী। আবার এও সত্য যে, এসব ঘটনা কে ছাত্রলীগ ছাত্রদল এবং শিবিরের অপপ্রচার এর দোহাই যেন না দেয়া হয়।
আমার এ ব্লগে প্রথম যে কমেন্টটি দেখছেন, তা নিম্নের লিংকটির ব্লগ হতে সংগৃহীতঃ Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।