এখানে বিনামূল্যে বিশ্ব-বিখ্যাত মাইন্ড বৈজ্ঞানিক দ্বারা মাইন্ড রিলেটেড এনি প্রবলেম অতি যত্ন সহকারে সলভ করা হয় ।
দুনিয়ার সবকিছু যদি সাদা হতো তাহলে কেমন হতো ? কিংবা সব কিছু লাল । নিশ্চয়ই আনন্দদায়ক কিছু হতো না। বিরক্তি আর বিতৃশ্নায় মন প্রান ছেয়ে থাকতো সব সময় । এদিক দিয়ে আমরা ভাগ্যবান বলতে হবে , কারন যেদিকে চোখ যায় আমরা শুধু রঙেরি উতসব দেখতে পাই।
মানুষেরো বৈচিত্র ভালো লাগে। সে একাকি নিঃসংগ থাকতে চায় না । তার মনও রং রসে মেতে থাকতে সব সময় থাকে উদগ্রীব; তাতে বাধা আসলেই বিষন্নতা গ্রাস করে তাকে।
মানুষ তার জীবনটা অর্থবহ করে তুলতে সামাজিকতার সাথে একাত্মতা ঘোষনা করে । সে তার মানোসিকতার সাথে খাপ খায় এমন সংগঠনের সাথে একাত্ম হতে চায় অথচ এর বিপরীত মতাদর্শের সংগঠনের বিরুদ্ধে ঘৃন্য মনোভাব ব্যক্ত করে , এতে তার নিজের বিকাশি বাধাগ্রস্ত হয় ।
একটি সার্বোজনিন রাজনৈতিক সংগঠন তার বিকাশের স্বার্থে একটি সাম্প্রদায়িক ধর্মীয় সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারে , এতে কিন্তু ধর্মীয় সংগঠনটিরো অসম্প্রদায়িকতার দিকে বিকাশ ঘটছে , অর্থাৎ বহুত্বের সাথে খাপ খেয়ে চলা, ভিন্ন মতাদর্শের সাথে সহজ সাবলিল আন্তরিক সম্পর্ক , আদর্শের আদান প্রদান যে কারোরি উন্নতির অন্যতম উপাদান। অথচ নিজস্ব মতাদর্শ জোর করে চাপিয়ে দিতে উগ্র সহিংস আক্রমন- মানব সভ্যতাকে ভালো কিছু দিতে পারেনি। আবার শুধু নিজস্ব মতাদর্শ নিয়ে একঘরে থাকার প্রবনতা- অনেক উন্নত মতাদর্শের বিলুপ্তির কারন- এ বিষয়ে অনেক ঐতিহাসিক একমত হবেন।
প্রতিটি মানুষ বা সংগঠনের সিমাবদ্ধতা থাকে । কুয়োর ব্যাঙের কাছে ডলফিনের সৌন্দর্য ও বিশালতা আশা করাটা যেমন ভুল , তেমনি একতরফা দোষারোপ , ঘৃনা , প্রতিশোধ স্পৃহা , বিদ্রোহী বিরোধী মনোভাবে শিয়াল কখনো মানুষ হবেনা।
মানুষ বা সংগঠন মাত্রই দোষ গুনের অধিকারী, একজন আরেকজনের সাথে নিজেদের ভালো গুন গুলো আদান প্রদান করে আরো ভারসাম্যপুর্ন অবস্থানে আসবে এমনটি সবার লক্ষ্য হওয়া উচিত। এমন একটি সংগঠনের স্বপ্ন আমরা দেখতেই পারি যা দুটি ভিন্ন মতাদর্শের সংগঠনের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরীতে শক্তিসালী ভূমিকা রাখবে । ঘৃনার উর্ধে জেগে উঠে- ঐক্যেই শান্তি পাবে” এই মুল মন্ত্রই হবে সেই সংগঠনের এগিয়ে চলার শক্তি।
একটু লক্ষ্য করলেই আমরা দেখতে পাবো- জাতি ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে সর্বসাধারনের জীবন মান উন্নয়নে কাজ করা মানবতাবাদী প্রতিষ্ঠান গুলোর মর্যাদা আজ সবার ওপরে এবং তারা কখনোই বিলুপ্ত হয় না।
আরেকজনকে কোন ঠাসা করে রাখার মধ্যে দিয়ে কখনো শান্তি আসবে না ।
একজন আস্তিক যে ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠ করছে সেটি হয়তো কোন নাস্তিকেরি আবিষ্কৃত যন্ত্র দিয়ে বানানো , আবার কোন নাস্তিক যে নৈতিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্যে সংগ্রাম করছে – সেই নৈতিক চেতনাও হয়তো কোন আস্তিকের প্রচারিত ধর্ম গ্রন্থ থেকে আমদানীকৃত । নাস্তিক যাকে প্রকৃতি বলছে , হয়তো আস্তিক তাকেই সৃষ্টিকর্তা বলছে – শুধু আলোচনার অভাবে নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝা বুঝি হচ্ছে । এই আলোচনার পরিবেশ তৈরী করে সুসম্পর্ক আনয়নে তৃতীয় পক্ষের একটি নিরপেক্ষ সংগঠন আজ সময়ের দাবী , এই দাবী পুরনে শিক্ষিত ব্যক্তিরা এগিয়ে আসবেন , এমনটি আমরা আশা করতেই পারি।
আর বিভেদ নয় , আসুন একসাথে বলিঃ
“যদি তুমি পাখি হও , তোমার ডানায় আমায় উড়বার স্বাদ দিও
আমার পিঠে ভর করে- এই নীল সমুদ্রে সাতরে নিও”।
আগেই বলেছি , মানুষ একাকী বাচতে পারেনা, তার নিজের প্রয়োজনে সে সামাজিক হতে চায়।
সামাজিক হতে গিয়ে তার ব্যক্তিত্বের বিকাশো ঘটে। এই বিকাশমান পক্রিয়ায় তার মধ্যে দুই ধরনের ব্যক্তিত্ব জন্ম নেয়ঃ একটি সার্বজনীন মানবিক(প্রেম) , আরেকটি স্বার্থান্বেষী সাম্প্রদায়ীক(কামনা)।
তার বিকাশমান পক্রিয়ায় দুটিরই প্রভাব পরে এবং এর দরকারো আছে। কিন্তু তার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট মন্ডিত “স্বার্থান্বেষী সাম্প্রদায়ীক ব্যক্তিত্ব” যখন “সার্বজনীন মানোবিক ব্যক্তিত্বের” সাথে সমন্বয় না করে বরং একে পদদলিত করে এগোতে চায় তখনি ঘটে দুর্ঘটনা। একপর্যায়ে ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ সামাজিক দ্বন্দে রূপ নেয় এবং সমাজে নৈরাজ্য নেমে আসে।
শুধু নিজ বা নিজ গোষ্ঠির একতরফা অন্যায় পক্ষপাতিত্ব বিদ্রোহ প্রতিপক্ষ তৈরী করে এবং সহিংসতাকে আরো উসকে দেয়। কি ব্যক্তি কি সমাজ- সর্বত্র আমরা প্রেম ও কামনার গভীর প্রভাব লক্ষ্য করছি । প্রেম ও কামনার সম্পর্ক বন্ধুত্বপুর্ন হলে সবার জন্যেই তা অবারিত মঙ্গল বয়ে আনে কিন্তু সংঘাতপুর্ন হলেই সেটা শুধুই ধ্বংস ডেকে আনে। তাই ব্যক্তি-সংগঠন নির্বিশেষে সবার বিকাশকে সাবলিল ও ভারসাম্যপুর্ন করতে “সার্বজনীন প্রেমের” বিকল্প নেই। সুতরাং এটা পরিষ্কার , প্রেমকে মূল ধরে কামনার ঘোড়া না ছুটলে তা দুর্ঘটনায় পরতে বাধ্য ।
“কে বোঝে তোমার অপার লীলে
আপনি আল্লাহ , ডাকো আল্লাহ বলে (লালন সাঁই)”
সাঁইজী’ এই গানটির মাধ্যমে মানুষের অসীম সম্ভাবনার কথা বলছেন।
“ক্ষুদার্থ কে অন্ন দিলে বলে- তুমি মানুষ না ফেরেস্তা । অথচ যখন বলা হয়- শুধু “প্রেমের চর্চা” পারে তোমাদের সুখী করতে” , তখন তারা বলে- “সবি কপালের লিখন না যায় খন্ডন” প্রেম-টেম দিয়ে কিচ্ছু হবেনা। জনগনের এমন নীরবতা মানবতা-বিরোধী কার্যকলাপকে আরো উতসাহ দেয় আর তাদের ধ্বংস তরান্বিত করে মাত্র ।
উপরের দুটি উদ্ধৃতি ধর্ম এবং রাজনীতিকে এক সুতায় গাথার প্রয়াসে উল্লেখ করলাম ।
অতি ধার্মিকেরা আধ্যাতিক সাধনায় নিজেদের এতই গুটিয়ে রাখে যে মানবিক বিপর্যয়েও তাদের এগিয়ে আসতে দেখা যায় না , আবার ইহজাগতিক প্রগতিশীল সংগঠন গুলোও শুধু নিজেদের নিয়ে এতো ব্যস্ত থাকে যে মানবিক বিপর্যয়ে অংশ নেয়ার মত সময় তাদের নেই। আসলে আধ্যাতিকতার নামে , প্রগতিশীলতার নামে এসব সংগঠন স্বার্থপর গোষ্ঠী ছাড়া আর কিছুই না। জাতি ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে- অসহায় মানুষের জীবন মান উন্নয়ন যে সবার আগে এগিয়ে আসে- সেই যথার্থ ধার্মিক ও প্রগতিশীল শক্তি- সঠিক মানুষ ।
ধর্মীয় আধ্যাতিক সংগঠন গুলো যদিও নৈতিকতা সম্পন্ন হয় তবুও আত্ম-কেন্দ্রিক হয়। পরজগত নিয়ে অতিমাত্রায় উদ্বিগ্ন থাকে , যেটা তাকে বাস্তব বিমুখ করে সমাজ বিচ্ছিন্ন করে ফেলে , এমনকি মানবিক বিপর্যয়ে এগিয়ে না এসে উদাসিন থাকে এবং সামাজিক ভারসাম্যহিনতার মাত্রা আরো তরান্বিত করে ।
যদিও তাদের চেতনায় উন্নত নৈতিকতা থাকে তবুও শুধু বাস্তব প্রভাবের অভাবে তারা থেকে যায় পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীর কাতারে এবং ইহজাগতিক শক্তি গুলোর দানের ওপর বেচে থাকে ।
আবার ইহজাগতিক প্রগতিশীল শক্তিগুলো যেমন- রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান , শ্রমিক সংগঠন , ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান , সাংষ্কৃতিক প্রতিষ্ঠান গুলোর অতিমাত্রায় জীবন ঘনিষ্ঠতা অনেক সময় পরোক্ষভাবে লালসারো উদ্রেক করে বা আকড়ে পরে থাকার আত্ম-মর্যাদাহীন মানোসিকতারো জন্ম দেয় , যেটি দুর্নীতি ও শ্রেনি বৈষম্য সামাজিক সংকটের জন্য অনেকাংশে দায়ী থাকে। যদিও সভ্যতার বিকাশের স্বার্থে বর্হিমুখী শক্তির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম ।
ওপরের বর্ননায় অন্তঃ ও বহিঃ দুটি শক্তির অস্তিত্ব আমরা টের পাছি , যদিও এদের একরোখা প্রবনতায় মানব সভ্যতা জর্জরিত । শুধুমাত্র অন্তঃ ও বহিঃ এই দুই শক্তির মিলনই পারে এ সংকট থেকে মানব সভ্যতাকে মুক্তি দিতে ।
আধ্যাত্ববাদী ধর্মীয় সংগঠন গুলো যেমন ইহজাগতিক শক্তিগুলোর বাস্তবমুখী শক্তি নিয়ে অন্তঃ ও বহিঃ উভয় শক্তিতে বলিয়ান হয়ে সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে , তেমনি ইহজাগতিক শক্তি গুলোও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নৈতিকতা আত্মস্ত করে সমাজ উন্নয়নে প্রকৃত ভূমিকা পালন করতে পারে ।
ধর্মের চূড়ান্ত লক্ষ্য- সব কিছু নিজ অস্তিত্ব জ্ঞান করা অর্থাৎ সব কিছুকে আপন করে নেবার মত মানোসিকতা অর্জন করা- মানবতার জয় উতসব । আর রাজনীতির চূড়ান্ত লক্ষ্য- এ উন্নত মানোসিকতার বাস্তব চর্চা । এ চর্চা একমাত্র প্রেম ছাড়া অন্য কোন পথে সম্ভব নয়।
তাহলে দেখা যাচ্ছে ধর্ম ও রাজনীতি একি মুদ্রার(মানব সভ্যতার) এপিঠ ওপিঠ ।
একটি ছাড়া অপরটির অস্তিত্ব সব সময়ই নাজুক । আবার ধর্ম ও রাজনীতির পরষ্পর বিরোধী মতবাদ মানব সভ্যতা কে শুধু ধ্বংসের দিকেই নিয়ে যায় । তাই বিশ্বজনতার মানোসিক কাঠামোয় ধর্ম ও রাজনীতির সঠিক সমন্বয় ছাড়া এ ধ্বংস যাত্রা থেকে উত্তরনের বিকল্প আর কোন পথ নেই । এ বিষয়টা আরো সহজ করে বলতে গেলে আমাদের বাস্তবতা কে পরিষ্কার বুঝতে হবে । বাস্তবতার দুটি অংশ- বিমূর্ত সুচেতনার জগত আর মুর্ত জগত ।
আর যা সুচেতনা তাই ধর্ম। প্রেমের সৌরভ-শান্তি হয় যদি সুচেতনা তবে ফুল রূপে এর মুর্ত প্রকাশ । ফুল ঝরে যায় অথচ চেতনা থেকে চেতনায় বয়ে চলে প্রেমের সৌরভ-শান্তি , চীর অমলিন । সুচেতনা হচ্ছে পিলার আর মুর্ত জগত হচ্ছে বিল্ডিং । তাই সুচেতনা ছাড়া মুর্ত জগত সহজেই ধসে পরে ।
সুচেতনা হচ্ছে ভালোলাগা ভালোবাসা , যা জটিল পরিস্থিতিতেও প্রান সঞ্চার করে সুন্দর । সুচেতনা মানে নিজেতে গুটিয়ে থাকা না বরং নান্দনিক মূর্ত প্রকাশি এর স্বাভাবিক প্রবনতা । আর মানবতা প্রতিষ্ঠায় সুস্থ্য রাজনীতির চর্চা- সুচেতনার চূড়ান্ত গন্তব্য । আশা করছি এ লেখাটি আমাদের সেই গন্তব্যের ঠিকানা পেতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
“শোষন-অত্যাচার” আর কিছু না
শিক্ষিত জনগনের দেশপ্রেমমূলক রাজনীতিতে উদাসিনতার ফল ।
গরীব দেশের “রাজনীতিবিদদের-মন” পুটি মাছের আর “শিক্ষিত জনগনের-মন” কাচকি মাছের । তো কি আর করা , পুজিপতিরা আরামসে পুটি আর কাচকি মাছের ভাগা দিয়ে তাদের বেচাকেনা করে আর দেশ যেই গরীব সে গরীবি থেকে যায়। কেবলমাত্র মৃত্যুকে বুড়া আঙ্গুল দেখানো বড় মনের মানুষি পারে এই বেচাকেনা বন্ধ করে দেশ কে উন্নত করতে ।
“মম এক হাতে বাকা বাশের বাশরী / আর হাতে রন তুর্য”
কবি নজরুলের এই কবিতায় এটা পরিষ্কার যে-
মানবতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র না তাক করলে , মানবতাবাদীদের নিশ্চিহ্ন করতে তারা বেশী সময় নেয়না , পৃথিবীর ইতিহাস এমনই নির্মম সত্যে ভরপুর । রাজনীতির জন্য লাগে অস্ত্র আর ধর্মের জন্য লাগে প্রেমিক হৃদয় ।
তাই মানবতা প্রতিষ্ঠায় অস্ত্র এবং প্রেমিক হৃদয় দুটোরি সমন্বয় দরকার ।
বাচার জন্যে পশু নিধন যেমন অনৈতিক কাজ নয় , তেমনি মানবরূপী পশুর আক্রমন থেকে বাচার জন্যে অস্ত্র ধরাও অনৈতিক কাজ হতে পারে না ।
মানবজাতী একটাই পরিবার। সবাই আমার মা-বাবা ভাই-বোন সন্তানতুল্য। সার্বোজনীন পরিবার-চেতনা জনগনের মন-মগজে গেথে দিতে এগিয়ে আসেন এক মানুষ রতন ।
সে শুধু দিতেই আসে , নিতে না । তাই সে মাইন্ডও খায় না । সমুদ্রের মত উদার আর বিশাল সে ।
বস্তু ধন নয় , মনের ধনে ধনীই আসল ধনী । তাইতো দেখা যায় মনে যে দেশের মানুষ ধনী , সেই দেশও ধনী ।
রাস্ট্রের উন্নতিতে বড় মনের মানুষের অবদান বেশী থাকে । উদারতা , নান্দনিকতা , যৌবনের সাবলীলতা , শিশু সুলোভ সরলতা , মাতৃ সুলোভ মমতা – এই গুন গুলো একজন মানুষ কে সবার কাছে প্রিয় করে তোলে । তার সান্নিধ্য পেতে সবাই চাতক পাখির মত থাকে উদগ্রীব । তার ব্যক্তিত্বের স্নিগ্ধ ছায়াতলে সবাই পায় আশ্রয় । এমন ব্যক্তিত্ব বিরল নয় , ধর্ম , সংস্কৃতি ও রাজনীতির মধ্যে সমন্বয় সাধনে যার অবদান অনন্য সাধারন উচ্চতায় উদ্ভাসিত- তিনি মহান বাহাউল্লাহ ।
আজ থেকে দেড় শো বছর আগে, মানব প্রেমিকের হৃদয়- ঈশ্বরের হৃদয় ঘোষনা করে তিনি “ধর্মের সাথে ঈশ্বর” দ্বন্দের অবসান ঘটিয়েছেন আবার মানবতার সেবাই যে ঈশ্বরের আরাধনা এটা ঘোষনা করে তিনি রাজনীতির আসল উদ্দেশ্য পরিষ্কার করেছেন । তিনি এক সার্বোজনীন ধর্ম (সুফিজম) ও রাজনীতি প্রচার করে গেছেন যার শুরু থেকে শেষ , সর্বত্র শুধু প্রেমেরি জয় জয়কার । রাজনীতি বলতে আমরা দল কেন্দ্রিক রাজনৈতিক দল বুঝি , বিষয়টা এমন নয় , বাহাই রাজনৈতিক দর্শনে দলীয় সংকীর্ন দৃষ্টি ভঙ্গী নেই ,আমিত্ব বা ক্ষমতার কোন উগ্রতা নেই ,ধর্ম বা আদর্শ নিয়ে দাম্ভিকতা নেই , বাহাই-সমাজ সুষ্ঠ ও সুন্দর ভাবে পরিচালনার জন্য সম্পুর্ন গনতান্ত্রিক ধারায় ভোটের মাধ্যমে ৯ জন সদস্য নির্বাচিত করা হয় , যেখানে একক কারো কতৃত্ব নেই , সবার সমান অংশ গ্রহনের ভিত্তিতে উতসব মুখোর পরিবেশে নির্বাচন পক্রিয়া চলে । গোছানো , সুসৃংখল , আধ্যাতিক শিক্ষায়- ঈশ্বরের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং একে অপরকে সাহায্য করা ও আনন্দ দেয়ার মাধ্যমে বাহাই সমাজ পরিচালিত হয় । বাহাই শুধু ধর্মীয় কিংবা শুধু রাজনৈতিক সংগঠন নয় , এটি অসম্প্রদায়িক অহিংস চেতনা সমৃদ্ধ- ধর্ম-সংস্কৃতি-রাজনীতির সমন্বয়ে গঠিত একটি সামাজিক সংগঠন।
সমাজ কল্যানকামী অনেকের কাছে এখনো যেটা স্বপ্ন সেটা বাহাই সমাজে বাস্তব । হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খৃষ্টান এবং ডান পন্থি বা বাম পন্থি সবাই এখানে নিঃস্বার্থ প্রেমের আহ্ববানে একে অপরের প্রতি নিবেদিত । আসলে নিজের চোখে না দেখলে তাদের উন্নত জীবন যাপন পক্রিয়া হৃদয়াঙ্গম করা সম্ভব নয় । মানব সভ্যতাকে তার সঠিক স্থানে নিতে , অমানুষিক নির্যাতন নিপিড়ন সহ্য করে , অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়ে , প্রিয়জন ও প্রিয় মাতৃভূমি হারা হয়ে- ১৫০ বছর ধরে ধর্ম, সংস্কৃতি ও রাজনীতির চমতকার মেলবন্ধন যারা ঘটিয়ে চলেছেন , এখনো সারা পৃথিবীতে যাদের মতাদর্শ সবার জন্যে একমাত্র আশার আলো সেই বাহাই সুফিদের প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা ।
বাংলাদেশের অর্ধেকের বেশী মানুষ , সুফি দরবেশদের প্রতি তাদের ভক্তি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে ।
সুফিদের অসম্প্রদায়ীক ভালোবাসার চেতনা ধনী-গরীব , সাদা-কালো , হিন্দু-মুসলিম সবাইকে স্পর্শ করে । যদিও সুফি সম্প্রদায়রা একটি আধ্যাতিক-ধর্মীয় সংগঠন হিসেবে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দেয় , কিন্তু একটি রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন হিসেবে এখনো তারা নিজেদের গুছিয়ে নিতে পারে নাই, যার জন্যে তাদের সাম্প্রদায়ীক জংগী আক্রমনের শিকার হতে হয় , তাদের সমাজ বিচ্ছিন্ন বলে তিরষ্কার করা হয় । এক্ষেত্রে বাহাই সুফিরা তাদের সামনে একটা ভালো উদাহরন হতে পারে , একটি আন্তর্জাতিক মানের অসম্প্রদায়িক ধর্মীয়-রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠন হিসেবে তারা এরি মধ্যে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পরেছে এবং দিনে দিনে নিজেদের সমাজ উন্নয়ন মুলক- একটি সুসংহত শক্তি হিসেবে জানান দিচ্ছে । বাহাই সুফি ও বাংলাদেশী সুফিদের একত্বতা একটি বৃহত শক্তি হিসেবে সাম্প্রদায়িক সহিংস সংগঠন গুলোর সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় , এমনকি দীর্ঘদিন ধরে ধর্মের নামে রাজনীতির নামে নির্যাতিত এ অঞ্চলের মানুষকে মুক্তি দিতে- এই মিলিত শক্তিই একদিন মূল ভুমিকা পালন করবে ।
মহান বাহাউল্লাহ’র কিছু হৃদয় কাড়া বানীঃ-
তোমার হৃদয় বাগানে প্রেমের গোলাপ ব্যাতিত , অন্য কিছুই বপন করো না ।
*
ঘৃনার মনোভাব কে তার থেকে “শক্তিশালী ভালোবাসা”র মনোভাব দিয়ে অবশ্যই ধ্বংশ করতে হবে ।
*
…আমার প্রার্থনাকে একটি অগ্নিতে পরিনত কর , যা তোমার সৌন্দর্য দর্শন হতে বাধা প্রদানকারী পর্দাগুলো (বিভ্রান্তি গুলো) পুরিয়ে ফেলবে এবং একটি আলোকে পরিনত কর যা আমাকে তোমার উপস্থিতির মহাসাগরের দিকে পরিচালিত করবে ।
*
তোমরা একি বৃক্ষের ফল এবং একই শাখার পত্রসমূহ ।
*
তোমারি দিকে তোমার চক্ষু ফিরাও , যেন তুমি আমাকে তোমারি মধ্যে অবস্থানকারী শক্তিসালী , প্রতাপসম্পন্ন ও চীরস্থায়ী দেখতে পাও ।
*
যদি আমার ভৃত্য তোমার কাছে কিছু চায় , তবে তাকে নিরাশ করে ফিরিয়ে দিয়ো না , কারন তার মুখমন্ডল আমারই মুখমন্ডল , অতএব আমার সামনে লজ্জিত হও ।
*
হে মানব সন্তান ! তোমার হৃদয়ের আনন্দে আহলাদিত হও , যেন তুমি আমার সাক্ষাত লাভ করতে পারো এবং আমার সৌন্দর্য প্রতিফলিত করবার উপযোগী হতে পার ।
*
হে মানব সন্তান ! আমার সামনে বিনীত হও , যেন আমি তোমার কাছে অবতরন করতে পারি এবং আমার প্রত্যাদিষ্ট ধর্মকে জয়যুক্ত করবার জন্য সাহায্যকারী হও , যেন তুমি আমার রাজ্যে জয়ী হতে পারো ।
*
হে আমার মৌখিক বন্ধু ! একটুখানি চিন্তা কর ! তুমি কি কখনো শুনেছ যে , বন্ধু ও অপরিচিত ব্যক্তি একই হৃদয়ে বাস করে ? অতএব , অপরিচিতকে হৃদয় হতে বহিষ্কার কর , যেন প্রিয়তম নিজ আবাসে প্রবেশ করতে পারে ।
উপরের কথাগুলো পরলেই বুঝা যায় কতটা মানবিক-কতটা বিশ্বজনীন এই বাহাই বিশ্বাস।
বাহাই সুফি নিয়ে আরো লেখা পরতে ক্লিক করুনঃ-
http://www.somewhereinblog.net/abdul915
নিবেদক,
আব্দুল গফুর রবিন
ব্লগার: somewhereinblog.net/abdul915
Mobile Phone: 01776467748 ,
তথ্য সুত্রঃ ইন্টারনেট , মহান বাহাউল্লার “নিহিত বাক্যাবলী” , http://www.bahai.org , http://www.bahaullah.org/ , http://www.somewhereinblog.net/ , বাহাই ধর্মের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।