আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কৈশোর -লাটিমের কষ্টে থির

অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা

মন থেকে বিষন্ন ভাবটা ক্রমশ উবে যায় রন্টুর। কামারের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে উৎফুল্ল লাগে তার। হাপর চলছে। চামড়ার ব্যাগের হাতলে চাপ দিলেই সামনে আগুনের ফুলকি উঠছে। গনগনে লাল কয়লার ভেতরে লোহা রেখে নরম করছে জগদীশ।

নরম হয়ে যাওয়া লোহা পিটাচ্ছে সামনের পাতে। টুক টুক টাকাশ, লোহার আকার বদলে যায়। সাঁড়াশির মতো একটা জিনিষে ধরে সেই লোহা ডুবাচ্ছে পানিতে। সাপের মতো হিশশ করে উঠে লোহা। কালো হয়, খানিকটা বাষ্প উড়ে যায়, মিলিয়ে যায় বাতাসে তার বিষন্নতার মতো।

আবার আগুনটা উস্কে সেখানে কয়েকটা কয়লার টুকরো ছেড়ে দিয়ে আগুনটা গনগনে লাল করলো জগদীশ। সেখানে লোহার টুকরো গুঁজে দিলো। - হাতুড়ির আঘাতে বিভিন্ন আকার পায় লোহার টুকরোগুলো। অনেক দিন স্কুল থেকে ফেরার পথে এখানে দাড়িয়ে জগদীশের কাজ দেখছে রন্টু। কখনও কোদাল, কখনও খুরপি, কখনও নাল হয়ে যায় লাল লাল লোহার টুকরোগুলো।

ভেতরে লোহা, কয়লা পানি আর স্যাঁতস্যাঁতে অদ্ভুত একটা গন্ধ স্থির হয়ে থাকে। জগদীশের কাঁচাপাকা চুল থুতনিতে সামান্য দাড়ি আর জীর্ণ হাতের পেশী রগসমেত ঘামে চটচটে। পড়নে স্যান্ডো গেঞ্জী আর চেকের লুঙ্গী। সেই সকাল বেলা উঠেই জেল রোডের সামনের চাতালে বসানো দোকানে এসে ঢুকে জগদীশ। পাশে সারাই কারখানা।

সেখানে অশোক কর্মকার একমনে কাজ করে। সেও কামার তবে তার কাজ অন্য। প্লাস্টিকের বালতি, মগ, ছেঁড়া স্যান্ডেল থেকে শুরু করে হাঁড়ি পাতিলের ফুটা সারায় সে। তেমন বড় না কোনো দোকানই। অশোক হাঁক দেয়, জগদীশ দা চা খাবা নাকি- শালার জম্মের গরম, সিদ্ধ হয়া গেলাম।

একটু জিরায়া নি। ঐ ছোকরা ২টা চা লাগা। জগদীশ হাতের কাজ না থামিয়েই তাকায় রন্টুর দিকে, বাবু কিছু বলবা? রন্টু তাকিয়ে ছিলো আগুনের দিকে। শুধু কয়লার গনগনে লাল না, খেয়াল করে দেখলে হালকা হলুদ শিখাও দেখা যায়। আর পানি থেকে উঠানোর পর সেখানে লোগা রাখলে ছ্যাঁত শব্দটার সাথে হালকা নীল একটা আগুন উঠে, অন্য রকম একটা গন্ধ বের হয়।

এ গন্ধ শুধু হঠাৎ পানিতে ভেজা কয়লার গা থেকেই বের হয়। অবশ্য খুব ভোরে পোড়া চাই মেখে এখানে বসে থাকে লালু পাগলা। ওর বয়েসের ঠিক ঠিকানা নাই। একই রকম উস্কোখুস্কো ময়লা চুল, জট পাকানো দাড়ি আর ময়লা জমে থাকা চেহারা। ওর স্কুল খুলে সেই ৭টায়।

তখন এ রাস্তা ধরেই যেতে হয়, দোকান বলতে এই জেল রোড মোড়ের সিদ্দিকের চায়ের দোকান। সেখানে ঝাল টোস্ট চায়ে ডুবিয়ে খায় রিকশাওয়ালারা, টুংটাং ঘন্টা বাজিয়ে চলে যায় কোথাও পাসিঞ্জার নিয়ে। বউনির টাকাটা মাথায় ঠেকিয়ে শ্রদ্ধা করে তুলে রাখে সিদ্দিক। আগরবাতি জ্বালিয়ে ধোঁয়া দেয় ক্যাশবাস্কে। তারপর চুলায় একটু চিনি আর বিস্কুট দিয়ে বসে থাকে।

পাশের কেটলীতে দুধের বলগ উঠে, পানি উথলায়, সাদা বাস্প উড়ে যায়, কেতলীর গা বেয়ে ঝরার সময় ফ্যাঁসস শব্দ করে দাগ রেখে যায়। মেপে ২ কাপ চা পাতা দেওয়ার পরে গাহেক আসলে একটু দাঁড়ান ভাই মাত্র পাত্তিটা দিলাম। রং ছাড়ে নাই এখনও। ততক্ষণ একটা বিস্কুট খান। পাশের কলসিতে পানি রাখা, এলুমুনিয়ামের সোনালী গ্লাসে পানি ঢালে সিদ্দিক।

পেতলের চামচ দিয়ে মেপে মেপে ২ চামচ চিনি দেয় কাপে। তারপর কেটলীর ঢাকনা খুলে দেখে, কেতলীর মাথায় লেগে থাকা পাত্তি মিশিয়ে দেয়, খালি কাপে চা ঢালে। কাঁচা পাত্তি দিয়ে ২টা বড় চা দিসতো সিদ্দিক। চৌধুরি চাচা বেঞ্চিতে বসেন। ফজরের পর শহরের এ মাথা ও মাথা চক্কর কেটে চৌধুরি চাচা আর কাশেম চাচা সকালের পেপার নিয়ে বসেছেন এখানে।

আরও ঘন্টা খানেক এখানে থেকে বাসার দিকে রওনা দিবেন। রন্টু প্রতিদিন সকালে অন্তত ১০ মিনিট এখানে দাঁড়ায়। গুড়ের চায়ের সাথে মুড়ি ভিজিয়ে খাওয়া দৈনন্দিন জীবনে কোন কোন দিন ইচ্ছা করে টোস বিস্কুট ডুবিয়ে চা খেতে। এই সিদ্দিকের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে সে ইচ্ছাটা আবার চাগিয়ে উঠে রশিদ মিয়ার। বাবাজি একটা চা দাও আর টোস বিস্কুট।

রিকশা থামিয়ে গামছা দিয়ে ঘাড় মুছে বসলো সে। আট আনা আর আট আনা পুরো এক টাকা চলে যাবে। সকালের বাধা খ্যাপ থেকে ৪ টাকাই পায় রশীদ মিয়া। চৌধুরীর মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে ফেরার পথে যদি অন্য কোনো খ্যাপ জুটে যায় আলাদা কথা, তবে সাড়ে সাতটায় ইস্টিমিটার সাহেবের জন্য অপেক্ষা করতে হয় গলির মাথায়। তার আগে এই চাগিয়ে উঠা শখের তাগিদে বসে আছে রশীদ মিয়া।

জগদীশ চা পাশে রেখে কয়েক ঘা দিয়ে লোহাটা পানিতে ডুবিয়ে রাখে। সুরুৎ করে চায়ে চুমুক দেয়। আহ, সামনের বালতি থেকে বুদবুদ উঠে। চ্যাপ্টা লোহার পাতটা অপেক্ষা করে কোন কিছু একটা হয়ে উঠবার প্রহর গুনে। কাকা একটা আল বানাতে হবে।

কত লাগবে? রন্টু স্থিমিত আগুনের দিকে তাকিয়ে থাকে। গতকাল বেল্লাফাট খেলায় ওর প্রিয় লাট্টুটা ফাটিয়ে দু টকরা করেছে রিপন। লেত্তি হাতে নিয়ে বিষধর সাপের মতো সরু চোখে তাকিয়েছইলো রিপন। ওর চোখে যাদু আছে কোনো, নাতো একন তাগড়া লাট্টুটাও কেমন দম হারিয়ে পড়ে যায় দাগের ভেতরে। রিপনের নিশানা ভয়ংকর।

বোঁ শব্দ তুলে ঠিকই বোম লাট্টুটা ঝাপিয়ে পড়ে লাট্টুর উপরে। মাথার চলতে উঠে যায়। রন্টু তাড়াতাড়ি অন্য লাট্টুটাতে লেত্তি পেচায়, যদি ঠিকমতো মারতে পারে ধার ঘেষে তাহলে ঠিকই গোল্লা থেকে বের করে নিয়য়ে আসা যাবে। বোম লাট্টুটা পাঁক খেয়ে দাগের বাইরে আসার পরে আবারও লেত্তি পেচিয়ে ছোবল দেয় রিপন। একে বারে মাঝ বরাবর।

, ধারালো আল ঢুকে যাওয়ার পরে বোম লাট্টুটাও একটু ঘুরে সামনে চলে আসে। আল বের করবার সময় বুঝা গেলো এত সুন্দর লাট্টুটা আর ঘুরবে না। একটু চাপ দিতেই ফেটে গেলো লাট্টুটা। তখন থেকেই একটা বিতৃষ্ণা আর প্রতিশোধস্পৃহা নিয়ে ঘুরছে রন্টু। সেই সাথে একটু বিষন্নতাও ছিলো।

অনেক বাছাই করে লাট্টুটা কিনেছিলো ও। সুন্দর লাল রংএর নীচে সবুজ বর্ডার দেওয়া লাট্টুটা গত কয়েকদিনের সঙ্গী ওর। বেল্লাফাট খেলবার সময়ে লাট্টু বদলে দেওয়ার নিয়ম আছে। মুরগী লাট্টুগুলোই ভেতরে রাখে সবাই তবে অন্য কোনো সময়ে যদি গোল্লার ভেতরে আটকে যায় লাট্টু তবে বদলানোর উপায় নেই। রিপনের তীক্ষ্ণ নিশানায় কত লাট্টুর মাথায় আলের দাগ বসেছে তার ইয়ত্তা নাই।

সেই রিপনের সাথে ৫ টাকার বাজী ধরবার আগে কেনো দ্বিতীয় বার ভাবলো না ও। আপসোস , বিষন্নতা, প্রতিশোধস্পৃহা সবমিলে তাকে অবসাদগ্রস্ত করে রেখেছইলো গতকাল বিকেল থেকেই। স্কুল থেকে ফেরার পথে আরও একবার থামলো সে লাট্টুর দোকানে। বড় দেখে একটা লাট্টু কিনলো আর বাছাই করে সুন্দর একটা লাট্টু কিনে কসম কাটলো নতুন লাট্টু দিয়ে আর বেল্লাফাট খেলবে না। তারপর সেই জগদীশ কাকার দোকানের সামনে।

একটু বসো বাবু, হাতের কাজটা শেষ হোক। রন্টু আগুনের দিকে তাকিয়ে থাকে। বুকের হাড় উঁচু হয়ে আছে জগদীশ কাকার। ঘামে ভেজা গায়ের সাথে লেপ্টে আছে বুকের লোম। জগদীশ কাকার বুকে অনেক লোম, রিপন বলেছে যাদের বুকে অনেক লোম তাদের ভেতরে অনেক মায়া।

জগদীশ কাকার বুকে কি অনেক রহম? সারাই করা লাগবে বালটিটা কত নিবা? ফরিদ চাচা প্লাস্টিকের সবুজ বালতিটা নিয়ে দাঁড়ান অঘোরের দোকানের সামনে। বালতির নীচে একটা জায়গা ফেটে গেছে। অঘোর মন্ডল বাতাস দেওয়ার পাম্পারটার হাতল ঘোরায় জোরে। কয়লা জ্বলে উঠলে ঠিকমতো লোহার পাতগুলো কয়লায় ডুবিয়ে হাতপাখার বাতাস দেয়। তারপর সেই লোহা বসায় বালতির তলায়।

গরম লোহার আঁচে কেটে যায় বালতির তলা। প্লাস্টিক গলিয়ে সেই ফাটাতে লাগায় অঘোর মন্ডল। চারপাশে দক্ষ হাতে মসৃণ করে বলে ৫ টাকা দেন কাকা। এইটুকু কাজের জন্য ৫ টাকা- খেকিয়ে উঠলেন ফরিদ চাচা। আগে জানলে নিজেই সারাই করতাম।

তিন টাকা পাইবা নিলে নাও। নিজেই যদি কইরা নিতে পারতেন তাইলে এইখানে আসলেন ক্যান? তুমি বেশী কথা বলো। ঠিকাছে, ৪ টাকা রাখো, এই সামান্য কাজের জন্য গলা কাটবা নাকি? নতুন একটা বালতি কিনতে লাগবে ৬০ টাকা- সেই বালতি চলবে কয়দিন? এই সারাই করে দিলাম, ৬ মাসেও যদি কিছু হয় তাইলে আমার নামে কুত্তা পালবেন। আমার স্যান্ডেলের ফিতা লাগাইতে কত নিবা বাউ? সাইকেল থেকে নেমে আসলো মধ্যবয়সী হাটুরে। রেল বাজার হাটে যাবে হয়তো।

জগদীশ কাকা লোহার একটা টুকরা ঢুকিয়ে হাপর টানে। তারপরে ধরাস ধরাস পিটায়। লোহার লাল টুকরা ভেঙে পড়ে। মাটির তালটা কালচে লাল হয়ে আছে তপ্ত প্রহারে। ধীরে ধীরে লোহা আকৃতি পায় মনমতো।

দুই মাথা সুঁচালো আকৃতি পেলে জগদীশ কাকা লাট্টু হাতে নিয়ে জোরে বাড়ি দিয়ে লাট্টুর ভেতরে ঢুকিয়ে দিলো আলটা। লোহা ঠিকমতো ঢুকার পরে আলটা পানিতে ছাড়লো। বাস্প উড়লো কিছুটা, গরম লোহার আঁচে লাট্টুর সামনে একটু জায়গা পুড়ে গেছে। রন্টু আলটা হাতে নিয়ে ধার পরীক্ষা করলো। এখনও এবরোথেবরো হয়ে আছে।

৩ টাকা দাও বাবু। রন্টু রাস্তায় ঘষলো কিছুক্ষণ আলটা। কালচে লোহা ক্ষয়ে যাচ্ছে। পোড়া বারুদের গন্ধ লাগে নাকে। রন্টু একটু বালি নিয়ে রাস্তার উপরেই আলটাকে ঘষতে থাকে।

আলের মাথাটা রুপালি চকচকে হওয়ার পরে শীষ বাজিয়ে হাঁটতে থাকে বাসার দিকে। একটা গরুর গাড়ী থামলো জগদীশ কাকার দোকানে। রন্টু বাসা যাওয়ার বদলে আবার ফিরে আসে দোকানের সামনে। কৃষ্ণের জীব এত কষ্ট সইবে না। গরুটা হাঁপায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে।

জগদীশ গরুর পা পরীক্ষা করে, রাস্তার ঘষায় আগের নাল আর খুড়ের চারপাশ ক্ষয়ে গেছে। গ্রাম থেকে শহরে ধান চালের বস্তা নিয়ে আসবার অন্য কোনো পথ নেই। এই ১০ ১৫ মন ধান চালের বস্তা নিয়ে ১৫ মাইল হেঁটে আসে। পিচির রাস্তার উস্কে উঠা পাথর কুঁচি ঢুকে যায় খুড়ের ফাঁকে। রাস্তার সাথে ঘষায় ঘষায় খুড় ক্ষয়ে যায়।

তাই নিয়মিতই নাল পড়ায় ওরা গরুর খুড়ে। জগদীশ কাকা খুঁজে খুঁজে একটা পুরোনো পাল্লার কব্জা ফেললো আগুনে। তারপর পিটিয়ে পিটিয়ে ওটাকে নালের আকৃতি দেয়। সপ্তমীর চাঁদ দুটো তৈরি হলে কীলক বানায়। গরুকে শুইয়ে চেপে ধরে দুই গারোয়ান।

জগদীশ কাকা শক্ত হাতে পায়ে নাল বসায়। তখনও ঠান্ডা হয় নি ঠিকমতো, পা ঝাঁকায় গরুটা আর হাম্বা হাম্বা করে। নিপুন হাতে ঠুক করে শলাকা গেঁথে দেওয়ার পর অতর্কিতে প্রচন্ড ঝটকা মেরে গরুটা দাঁড়াতে চায়। পোড়া চামড়ার গন্ধ এসে লাগে নাকে। গরম কীলক একেবারে ঢুকে গেছে খুড়ের ভেতরে।

কয়েক ফোঁটা রক্ত বের হয়। গরুর পাঁজর আর পাছার মাংশপেশী থরথর কাঁপে। টলোমলো, কাঁপাকাঁপা পায়ে দাঁড়ায়, করুণ চিৎকার করে। হঠাৎ সমস্ত বিষয়টাকে ভীষণ বীভৎস লাগে রন্টুর। অবলা একটা জন্তুর কষ্ট তাকে ছুঁয়ে যায়।

যদি তার পায়েও এভাবে নাল লাগাতো কেউ তাহলে কি সে সহ্য করতে পারতো? বিষ্যুদ বারের রাস্তায় ব্যস্ততা কম। এই শিলপাটা ধার করি, ছুড়ি কাঁচি বাটি শানাই, এ্যাই শিলপাটা ধার। বুড়াটা চলের ঝোলা নিয়ে হাঁটছে, রন্টু বুড়ার পিছনে পিছনে হাটে। কাশেম চাচার বাসা থেকে ডাক আসে। শিল পাটা আর নোড়া আসে- বুড়া আসনপিঁড়ি হয়ে বসে দরজার সামনে।

ছোটো একটা হাতুড়ি আর বাটালি বের করে ঝোলা থেকে। ঠক ঠক ঠক ঠিক পাতার উপরে ছেনি চালায়। ভিন্ন রকম একটা পোড়া গন্ধ লাগে নাকে। পাথরে পাথর ঠুকলে সেরকম একটা গন্ধ বের হয়। বুড়া পাটার মাথায় মাছের নক্সা আঁকে।

মাছের চোখ আর কানকো আঁকে। তারপরে বৃষ্টির মতো ধারা আঁকে পাটা জুড়ে। নোড়াটাও আল্পনা এঁকে শেষ করবার পরে ছুড়ি শান দেয়, পোড়া মাটির পাটাতনে বালি দিয়ে ছুড় িঘষে আর বুড়ো আঙ্গুলে চেপে ধার পরীক্ষা করে। আবার ঘষে , আবার ধার পরীক্ষা করে, অবশেষে সন্তুষ্ট হয়ে ধার দেওয়া শেষ করে ২০ টাকা নিয়ে ঝোলা কাঁধে উঠে দাঁড়ায়, অন্য দিকে হাঁটতে থাকে। এ্যই শিলপাটা ধার, শিলপাটা ধারা তখনই রন্টুর চোখে পড়ে ম্যাচের বাক্সটা।

একেবারে অন্য রকম ম্যাচের বাক্স। এদিকের প্রজাপতি আর বন্দুক বাদ দিয়ে মাছের ছবিওয়ালা এই বাক্স নিশ্চিত ভাবেই ৫০০ বলে চালানো যাবে। প্রজাপতি ৫০, রেলগাড়ি ২০ আর বন্দুর ১০০। আসলে প্রাপ্যতার উপরে নির্ভর করে এইসবের মূল্য। যখন স্টেশনের প্লাটফর্মে প্রথম আসলো প্রজাপতি, তখন ওটা ছিলো ৫০০।

এখন এখানের সব দোকানেই প্রজাপতি ম্যাচ বেচে। রন্টু ম্যাচবাক্সটা পকেটে ভরে বাসার দিকে রওনা দেয়। আজকের দিনটা আসলেই অন্যরকম।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।