মাথায় অনেক গল্প আসে; কিন্তু লেখার মত পর্যাপ্ত ধৈর্য-শ্রম-অধ্যবসায় নেই। গল্পগুলোকে তাই ছোট করে কবিতা বানাই.... চাঁদকে দেখে প্রথম যেদিন পড়েছিলাম প্রেমে,
চমকে গিয়ে দমকা হাওয়া দাঁড়িয়েছিল থেমে;
উড়ছিল এক প্রজাপতি রঙিন ডানা মেলে
হলদে আলোর মায়ায় ভরা তেমনি এক বিকেলে-
ছাদে উঠে এসে যখন প্রশ্ন করল মিতু,
"বুঝলে কিছু?" - বুঝিনি আমি, বসন্ত সেই ঋতু। ।
গ্রীষ্মকালে অলসবেলা; সন্ধ্যা নামে ধীরে
ভ্রমণ শেষে হাওয়ায় ভেসে পাখিরা ফেরে নীড়ে
সারাটি ক্ষণ কিসের যেন অপেক্ষাতে থাকি
নীল আকাশের বুকে একা দলছুট এক পাখি;
একা তো নই, আরও কেউ যেন আছে কাছাকাছি !
মুচকি হেসে বলছে এ মন, "বেশ তো ভালই আছি !"
বর্ষা এল সাথে নিয়ে ঝুমবৃষ্টির বহর
বৃষ্টি-ভেজা সয়না আমার, ফের বাধালাম জ্বর;
অভিমান ভরে বলল মিতু, "এই বুঝি ভাল থাকা?"
সেদিনের সেই ছোট্ট মিতু এখন কত্ত পাকা !
কিংবা আমিই বুঝতে পারিনি - দিনবদলের খেলায়
কবে শৈশব ছেড়ে গেছে সব, এমনি করে হেলায় !
সেই ছোট্ট মিতুকে আজ পড়ছে যে খুব মনে -
ধমক দিলেই উঠত কেঁদে, লুকাত ঘরের কোণে;
দুষ্টুমি করে ভাঙতাম তার পুতুলের বিয়েটাকে
কাঁদতে কাঁদতে চলে যেত সে নালিশ করতে মা'কে।
প্রতি সকালেই ঝগড়া হত, ভাব হত সন্ধ্যায়
পরদিন গিয়ে থাকতাম ফের ঝগড়ার ধান্দায়,
এলোমেলো সেই শৈশব যে কবে হয়ে গেল চুরি
বুঝতে পারিনি অমনোযোগী দুই কিশোর-কিশোরী;
হঠাৎ বুঝি হারিয়ে গেছে সে অবাক ছোট্টবেলা !
আনমনে কবে হয়ে গেছে শুরু মনের নতুন খেলা...
শরৎকালে মনটা উদাস যেন আত্মহারা
গুনতে গুনতে হারিয়ে গুনি রাতের যত্ত তারা;
চাঁদখানি যেন এসেছে নেমে ঠিক আমারই পাশে
চাঁদছাড়া ঐ অন্ধ আকাশ অন্ধকারে হাসে।
।
কত কথাই বলে যাও তুমি সারাটা দিন, আর
তারই খুঁটিনাটি ভেবে আমার রাত হয়ে যায় পার।
স্বপ্নে দেখি, হাসছ তুমি, করছ যে দুষ্টুমি,
মনটা কোথায়? - জানিনা, তবে মনের মাঝে তুমি !
হেমন্তের এক বিকেলবেলা কনে দেখা আলোয়
দখিনা হাওয়ার শীতল পরশ লাগছিল বেশ ভালই
আমার কনে, মনের কোনে, ছাড়ছেনা তো পিছু
হঠাৎ দেখি এল মিতু, বলবে নাকি কিছু?
চোখ ছলছল, গলাটা ভেজা, কথাটা বলতে গিয়ে
কিছু কথা তো শোনাই গেল না, বাকিটা ফিসফিসিয়ে...
তখন তো ছাই, এখনও বুঝিনা আমার হৃদয়ে কভু
'আবেগ' বা 'বেগ' বস্তুগুলো দিয়েছিল নাকি প্রভু?
হাসব নাকি কাঁদব সেটাই বুঝতে না আর পেরে
হাঁটতে হাঁটতে এলাম চলে মিতুকে একা ছেড়ে...
শীতের বুড়ি এল কুয়াশার চাদর মাথায় দিয়ে
শিশিরগুলো হাসছে দেখো - আজকে মিতু'র বিয়ে।
আনন্দের সাড়া পড়ল সারা বাড়ি জুড়ে
হাসি-কান্নায় মিশে সানাই বাজছে একই সুরে
কাঁদছি কেন, ভাবছি আমি, চমকে হঠাৎ থামি
কোথায় মিতু, কোথায় আমি - কী সব পাগলামী?
হঠাৎ হঠাৎ মাথা চাড়া দেয়, করার কী নেই কিছুই?
চাপা-কৈশোর-দ্বন্দ্ব আমায় টেনে রাখে পিছু
সাধ্য তো কভু ছিলনা, তবে সাধ কেন কেঁদে মরে?
অসহায় হয়ে দেখছি আমার চাঁদটা যাচ্ছে সরে...
একটি বছর আগেও এমনি এসেছিল বসন্ত
এবারও এল, আবারও আসবে, নেই যেন এর অন্ত।
তবু কে যেন আসছে না আর, বসে আছি আমি একা
চেয়ে থাকি দূরে রাতের আকাশে, যদি পাই তার দেখা !
কিছু না হারিয়েও সব হারানোর দুঃখটা বেশ মজার
কেবলই খুঁজে বেড়াই আমি, পাইনা কিছু খোঁজার !
"বুঝলে কিছু?" - শোনার জন্য মন হয়ে আছে হন্য
"বুঝেছি মিতু!" - তাই তো লিখছি কবিতা তোমার জন্য...
********************************************************************
গল্প'টা ওখানেই শেষ।
এখন নিজের কিছু কথা।
গত পোস্টের মত এটাও রিপোস্ট, আর এটাও আমার প্রথম দিকের লেখা। সেটা অবশ্য বলে দিতে হয় না। গল্পের ছেলেমানুষী বাড়াবাড়ি রকমের - সেটা এর মাঝেই টের পেয়ে গেছেন। (আমি কিন্তু দাবী করছি না যে, এখন খুব একটা ম্যাচ্যুরড হয়ে গেছি ! )
ইদানিং বেশ ক'জন কবি-লেখক-পাঠক ব্লগারের সাথে ভালই বন্ধুত্ব হল।
মুগ্ধ হয়ে তাদের লেখা পড়ি, আমার পোস্টে তাদের প্রশংসাও খুব উপভোগ করি (নিজের প্রশংসায় ভরা কমেন্টগুলো কতশত'বার যে দেখতে আসি ! )। তো ইচ্ছে হল তাদের সাথে আমার ছেলেমানুষী লেখাগুলোও শেয়ার করা যাক !
এ গল্পের ছেলেটা-মেয়েটা'র মত কবিও ছিল একজন কিশোর কবি; লেখায় সেই ভাব স্পষ্ট ! ভাল-মন্দ যে কমেন্টই পড়ুক, যদি পারতাম সেই কিশোরটা'কে জানাতে !
(ছবির ঋণ সমস্ত'টাই গুগল ডট কম-এর) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।