খন্ডিত চিঠি
সুহৃদ,
শীতার্তে বিষন্ন বিধবার আভরণে কঙ্কালসার এই ঝিমিয়ে পড়া নিস্তব্ধ সংকীর্ণ প্রকৃতিতে তোর ওই সুপ্ত নির্লিপ্ত হিয়াকে নবতন কৌমার্য্যের প্রলুব্ধকারী আহ্বানে প্রেমাবেগ মিশ্রিত অমৃতরসে রসোদীপ্ত করতে আমার এই কিঞ্চিত বার্তা হাজির।
তোকে না দেখার কী এক সুগভীর নিনাদের মর্মবেদনায় আমি জ্বলেপুড়ে কষ্টিপাথরের নির্যাস এক খাঁটি হীরায় পরিণত হয়েছি। এই মহামূল্যবান রত্নকে একান্তে কাছে পেতে, হৃদয়ের গহিনে ধরে রাখতে কারই না সাধ জাগে!
কিন্তু কেউ-ই হৃদয়ের মণিকোঠায় একান্তে আপন করে পেতে দু’বাহু বাড়িয়ে ভারাতুর যৌবনে মোহিনী আয়তলোচনদ্বয়ের মায়াবী চাহনিতে রক্তিম অধর দু’টির কম্পিত ওষ্ঠে নিঃসীম প্রণয় আবেগে ঊর্মির ছন্দে উদ্বেল নির্বাক শিহরণ সৃষ্টিকারী স্মৃতির চিত্রপট ঐ কোমল বক্ষে দুদন্ড আকুন্ঠ চেপে ধরার তিলার্ধ সাধ করে না। পাছে হীরার মূল্য দিতে গিয়ে কিছু ক্ষয়ে যায়।
তাইতো আমাকে ইলেক্ট্রনের মত কী এক অজানা অথচ হৃদয় মাতানো প্রেমের সৌরভে নিউক্লিয়াসের চতুর্দিকে স্থিরশক্তিস্তরে থেকে অবিরাম পরিভ্রমণ করতে হয়।
ইলেকট্রন মেঘ হয়ে তাকে বুকে, অধরে, মুখে চুম্বনে চুম্বনে সুদে-আসলে বহুগুণে পরিশোধ করে সকল প্রকার পারমাণবিক বিস্ফোরণ হতে রক্ষা করতে হয়, নইলে যে নাগাসাকিতেই তার ভালবাসার বীজ উপ্ত হয়। না পারি কেন্দ্রে যেতে আর না পারি কক্ষ হতে বিচ্ছিন্ন হতে। কক্ষ হতে বিচ্ছিন্ন হলেই তো তুই পজিটিভ আর আমি বিচ্ছিন্নবাদী নেগেটিভ চার্জে পরিণত হই, এতে যে মডেলের পতন হবে? পারিস তো বুকে টেনে নিয়ে হৃদয় মন্দিরের চেরাপঞ্জিতে তোর বক্ষস্থলে স্থান দিয়ে প্রেমের সামাধি নয়তো ফুলশয্যা রচনা করিস।
তুইতো মহাবিশ্বে থেকে অগণিত গ্রহ-নক্ষত্র আর ছায়ালোকের মধ্যে ‘লুব্ধক’ হয়ে বিরামহীন গুণোত্তর ধারায় সোনালী দিগন্তের ঊজ্জ্বল ধ্রুব তারার মত অসীম বারিধারায় আলোক শিখা বিকীরণ করছিস। সহস্র প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তোকে প্রণয়ের বাহুডোরে আবদ্ধ করতে বারবার পিছলে যাচ্ছি।
আর এ জন্যই তো সুকোমল শীতল সোনালী চন্দ্রিমার স্নিগ্ধ সিক্ত জ্যোৎস্নালোকের মত আমি মধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে কেন্দ্রের প্রতি ঝুকে আছি। কিন্তু হঠাৎ “৫-ই মে” এর মত কক্ষ হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে কেন্দ্রাভিগ ত্বরণে কেন্দ্রের খুবই কাছে চলে আসলাম। জানিনা এর ফলে নিউক্লিয়াসে কোন মহাপ্রলয় বা তৎকিঞ্চিত কোন অগ্নুৎপাত হবে কি-না।
পুজার বেদীতে আমার এই বৃন্তচ্যুত পুষ্পাঞ্জারী সমেত প্রস্ফুটিত কুসুমরাজির মোহিনী আবেশ বিধৃত পুষ্পমাল্য আর প্রণয়ের আবেগে আলিঙ্গনের অতৃপ্ত হৃদে হিম মিশ্রণে গলন ক্রিয়া সম্পাদন করে নির্জিব ঐ প্রেমারতি সৌধকে সজিবতায় ভরিয়ে তুলবেই। নইলে যে আরতির লগ্ন পেরিয়ে আমার এই দু’গন্ড সজ্জিত অঞ্জলি তোর পদ প্রান্তে নির্বাক পুষ্পদানিতে ঝরে পড়া বাসীকুসুমের সাক্ষী হয়ে তোকে পুণঃপুণ পিনবধ করবে।
আমার প্রণয়ের এই প্রলুব্ধকারী আহ্বান তোকে গহীন প্রশান্তের ম্যারিয়ানা ট্রেঞ্চের নিম্নতম পাদদেশের মৃত্তিকার মর্ত হতে দিগন্ত বিদারী অগ্নুৎপাতের লাভাসম শতধা বিপত্তি ছিন্ন করে মহুর্তে অসীম ত্বরণে আমার এই প্রেমাকাঙ্খি স্ফীত বক্ষে নিক্ষেপ করবেই। তোর ঐ অন্ধকার আচ্ছন্ন দিবালোক বিবর্জিত পহাড়ী অম্বরাশির গভীর নিনাদে উত্থাল টলমল বক্ষকে নীল রঙে রাঙিয়ে সিক্ত বসনহীন বিচিত্র শোভায় সম্ভূষিত প্রেমাধার দেবীমূর্তি বানিয়ে তোকে আমার দু’বাহু বন্ধনে শক্ত করডোরে অনন্ত কাল ধরে এই হৃদয় মন্দিরে আগলে রাখব। এর পর লেহনে লেহনে নবযৌবনদীপ্ত কৌমার্য্যের রাজটীকা পরিয়ে তেজদীপ্ত প্রাণবন্ত করে তুলব।
“রে অচেনা মোর মুষ্টি ছাড়াবি কী করে,
যতক্ষণ চিনিনাই তোরে?”
তোকে অসীম গগণের নীল রং বিধৃত নক্ষত্রের সমারোহ হতে অকৃত্রিম ভালবাসার নীলকান্তমণিপান্না দিয়ে সাতিশয় সমারোহে বরে প্রেমাবগাহনে পুণর্বার সিক্ত করে ঊষ্ণ হৃদের অতৃপ্ত ভালবাসার পরশে দেবীমূর্তি ঐ আপদমস্তক মনোহারিনী শিরোদেশসুশোভিনী মহারাণীর নবযৌবনদীপ্ত কৌমার্য্যরে প্রান্তে প্রান্তে নির্বাধ সিন্ধুর ছলছলছল ঊর্মিরাশির ধারায় কানায়কানায় পূর্ণ করে দিব।
কেমন আছিস? নিশ্চয়ই পরীক্ষার দুশ্চিন্তায় রাতের পর রাত জেগে একটু ক্লান্ত শ্রান্ত আর বিরতী বিহীন পরিশ্রামে হাফিয়ে উঠেছিস।
চেষ্টা করতে থাক দেখবি খোদা তোকে নিজের হাতে তোকে প্রতিদান দেবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।