জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই
মাত্র চার খলিফা ইসলামী বিশ্ব পরিচালনা করেছিলেন। তারপর যারা খলিফা হয়েছিলেন তারা নামে খলিফা হলেও মূলত ছিলেন রাজা বা সম্রাট।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর অটোমান সাম্রাজ্য ভেঙ্গে যাওয়ার আগে পর্যন্ত তুর্কী খলিফাই পৃথিবীর সর্বশেষ শাসক যার পদবি ছিল খলিফা। এখন পৃথিবীতে এতগুলি মুসলিম দেশ কিন্তু একটি দেশের শাসককেও খলিফা বলা হয় না। আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও দূর প্রাচ্যের এতগুলি মুসলিম প্রধান দেশ থাকা সত্ত্বেও একজন খলিফা নাই।
আমার জানা মতে, পৃথিবীতে একমাত্র ইরান রাষ্ট্রীয়ভাবে নিজেকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র বা ইসলামী রাষ্ট্র বলে পরিচয় দেয়। সেখানেও কোন খলিফা নাই। পাকিস্তান নিজেকে ইসলামী রাষ্ট্র বললেও সেখানে সেনা সমর্থিত গণতন্ত্র বিদ্যমান। খোদ সৌদি আরবে রাজতন্ত্র নামের পৃথিবীর প্রাচীনতম স্বৈরাচারী ব্যবস্থা বিদ্যমান। কাতার, ইয়েমেন ও কুয়েতের আমিররা মূলত রাজা বা সম্রাট।
জর্দানেও রাজতন্ত্র। ইসলাম তো রাজতন্ত্র সমর্থন করে না, তবে মধ্যপ্রাচ্যে এত রাজা বা সম্রাটের ছড়াছড়ি কেন ?
আবার সিরিয়া ও মিশরে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত - যা প্রায় রাজতন্ত্রের মতোই। তুরস্ক, লেবানন ও ফিলিস্তিনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত। অন্য দিকে আফ্রিকার লিবিয়া, তিউনিসিয়া, মরক্কো, আলজেরিয়া প্রভৃতি দেশে কোথাও সামরিক একনায়কের প্রাধান্য।
আবার দূর প্রাচ্যে ইন্দোনেশিয়া - যা জনসংখ্যার বিচারে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মুসলিম রাষ্ট্র - সেখানে গণতন্ত্র বিদ্যমান।
মুসলিম বিশ্বের অহংকার মালয়েশিয়াতেও গণতন্ত্র। জনসংখ্যার বিচারে বাংলাদেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র। আমাদের দেশে তো খেলাফত নাই বরং গণতান্ত্রিক পন্থাকে স্বীকার করে ইসলামী দলগুলো ভোটে অংশগ্রহণ করে থাকে।
মোটকথা, ইসলামের প্রথম যুগের চার খলিফা বাদে আর কোন খলিফা নাই। ইসলামী বিশ্বের শাসন ব্যবস্থার এই বাস্তব চিত্র থেকে আমার মনে একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খায়।
ইসলামকে ছোট করা বা কাউকে হেয় করার জন্য নয়, আমি জানতে চাই বাস্তবতার আলোকে।
প্রশ্নটি হচ্ছে - মাত্র চার জন খলিফা হওয়ার পরে পৃথিবী থেকে খেলাফত ব্যবস্থা বিলুপ্ত কেন ? শুধু যারা বিষয়টি সম্পর্কে ভালো জানেন, তারা জ্ঞানগর্ভ মন্তব্য করুন। এটা কোন রসিকতার বিষয় নয়, ভাবার বিষয়। আশা করি আমাকে ইসলাম বিরোধী ভেবে বসবেন না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।