আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অভিজিৎ দাসের বই থেকে আমার পছন্দের কয়েকটি কবিতা

বিস্মৃতি ও বিষাদটিলা

বিকাল থেকেই অভিজিৎ এর বইটা আবার পড়ছিলাম। পড়তে পড়তে অনেক ভালো লাগা কবিতায় চোখ আটকে গেল। মনে হল, আবার পড়ি। আবারও পড়লাম । তারপর বের হলাম বাসা থেকে।

ফিরে মনে হল, শেয়ার করা যাক আপনাদের সাথেও। কবিতাগুলো অভিজিতের প্রথম বই 'নিগ্রো পরীর হাতে কামরাঙা কেমন সবুজ' থেকে নেয়া : মৃত্যুদিন কয়েক জোড়া ধূম গতরাতে আমার ঠোঁটে এসে বসল এবং পান করিয়ে নিল নিজেদের। আমি এ দৃশ্যের কোন যৌথ ছবি রাখি নি অথবা রাখতে চাই নি। অথচ যখন এক ভগ্নস্বাস্থ্য চোর এসে আমার দরজায় কড়া নেড়ে তার অভিপ্রায় জানাল, আমি একে একে সিন্দুকের মধ্যে সাজিয়ে রাখা আমার পূর্বপুরুষের প্রেতগুলো তার হাতে তুলে দিলাম। সে তৃপ্তির চোখে একদলা আলো ছুঁড়ে দিয়ে পাতালের দিকে উড়ে গেল- যেখানে তার নিবাস।

আসলে সে ছিল এক ছদ্মবেশী পাখি, যে খড়কুটো চুরি করে ঘর তৈরি করে, আর আমার পূর্বপুরুষের প্রেতগুলো সব খড়কুটো ছিল- এ কথা জানলাম আমি আমারও মৃত্যুর পরে। আজ আমার মৃত্যুদিন; সবার ঘরে একটি করে শ্মশান জ্বলুক! দুর্ভাবনাময় কাব্য এখন যে কাগজের পিঠে আমি কবিতা লিখব বলে মনস্থ করেছি তারই অপর পৃষ্ঠায় গতকালও একটি কবিতা রচিত হয়েছে এতে করে, এ লেখাটি সম্পন্ন হলে দুইটি কবিতা পিঠাপিঠি পরস্পর পৃষ্ঠদেশে ভর রেখে দাঁড়াতে পারবে তারা কি নিজেদের অনুষঙ্গ, ছন্দ, প্রকরণ, চিত্রকল্প, উপমা বিষয়ে কথা বলবে একে ও অপরে? তা বলুক, কিন্তু যদি মুখোমুখি হতে চায় তারা তবেই তো আমার প্রকাশিত কবিতার সকল বর্ণমালা উল্টে গিয়ে যে দৃশ্য দাঁড়াবে তাকে পাঠ করতে হলে প্রত্যেক পাঠকেরই একটি করে আয়নার প্রয়োজন হবে কিন্তু প্রকাশিত কবিতার সাথে আয়না সরবরাহে সকলে নারাজ, তাই এ সকল কাব্য নিয়ে দুর্ভাবনায় কেটে যাচ্ছে দিন- কেটে আসছে রাত! বাষ্পাকুল অনল বিভ্রম মূর্ছা যেতে যেতে ঘাড় ফিরে দেখা কোন জবারক্ত বিকেলের দ্যুতিবৃক্ষচ্ছায়ে ঘুমিয়ে সে হলুদ রেণুর ফুলে নীলের মর্মর! পাখিরা ঠোঁটের রক্ত মুছে নিতে জাগেনি কখনো অপরাহ্নে দুই খণ্ড চেতনার সুপ্রধান মেরু বলয়ের গান। মস্ত এক রক্তপায়ী আপেলের ফলজ মহিমা আমাকে যুদ্ধ মহাযানে তুলে দেখিও না কতটা ইস্পাতে কতটুকু ধ্বংস অস্থি মর্মে কে কতটা আততায়ী কার! মুখাবয়বের ক্ষতগান ওহ্! ক্রন্দন... দৈব আরণ্যিক ভোরে জলপাইকুঞ্জে এক ধূমে অভ্র এ্যাম্বুলেন্সের যাতায়াত। কর্কটের ডোবা সূর্য জলমর্গে অন্ধকার পানরত; ফের নিদ্রা- রাত্রিকাল হে অনল, শ্বাশ্বত অক্ষের টানে কে কার আততায়ী মূর্ছা যেতে গিয়ে ফের ফিরে ঘাড়ে বজ্রদ্যুতি মেখে গেল অন্ত্রে ও পাঁজরে! মাতাল হাত রাখো- পাখি ডানার গোপনে রাখো হাত না দিন না রাত সূর্য ওঠাও- পতাকার রশি টেনে যেভাবে উড়িয়ে দাও আকাশে তোমার দেশ ও কৃষ্ণ, হা কৃষ্ণ বাছুর চাটছে দেখো হলুদ পিঠের রাঙাকেশ! নিঃসঙ্গতার রঙ একটি গাছ এঁকে তার ডালে দু’টি পাখি এনে বসিয়ে দিলেই কি তারা ডেকে উঠবে কিচির মিচির...? কেউ ঢিল না ছুঁড়লেও একটি পাখি কিন্তু ঠিক উড়েই যাবে! অপর পাখিটি বসে থাকবে ঠায়। তার নিঃসঙ্গতাকে আঁকতে হলে কি রঙ ব্যবহৃত হবে? নিঃসঙ্গতার কি আলাদা কোনো রঙ আছে?


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.