আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেইস স্টাডিঃ জেনোসাইড ইন বাংলাদেশ - পর্ব - ৬ ( গনহত্যার সমাপ্তি ও শেষ কথা)

যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি

আগের পর্বগুলোঃ ১) কেইস স্টাডিঃ জেনোসাইড ইন বাংলাদেশ - পর্ব ১ ( সূচনা ও পিছনের কথা) ২) কেইস স্টাডিঃ জেনোসাইড ইন বাংলাদেশ - পর্ব ২ (পুরুষদের বিরুদ্ধে “জেন্ডারসাইড”) ৩) কেইস স্টাডিঃ জেনোসাইড ইন বাংলাদেশ - পর্ব ৩ (নির্বিচারে নারী হত্যা ও নির্যাতন) ৪) কেইস স্টাডিঃ জেনোসাইড ইন বাংলাদেশ - পর্ব - ৪ (যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা) ৫) কেইস স্টাডিঃ জেনোসাইড ইন বাংলাদেশ - পর্ব - ৫ (বাংলাদেশে ১৯৭১ এর গনহত্যার মুল নায়ক কারা?) ৪.১ গনহত্যার সমাপ্তি - এই হত্যালীলা চলার সময় প্রান বাঁচানোর লক্ষ্যে এককোটি বাঙালী প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয় নেয়। কুটনৈতিক আর পরোক্ষ সহায়থার পর ভারত ৩রা ডিসেম্বর সরাসরি যুদ্ধে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে শুরু করে। ফলশ্রুতিতে ১৬ই ডিসেম্বর ৯০ হাজার সৈন্যসহ পাকিস্তানীরা আত্নসমর্পণ করে আর বাংলাদেশে পানিস্তানীদের গনহত্যার সমাপ্তি ঘটে। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান নেতা দেশে ফিরে আসেন। পরবর্তী ঘটনাবলীর সাথে বসনিয়া-হার্জেগোবিনার ঘটনা তুলনীয়।

আত্নসমর্পনকারী পাকিস্তানীদের নিরাপত্তা দেয় ভারত । ("Genocide in Bangladesh," p. 298; emphasis added.) আন্তর্জাতিক কুটনৈতিক মারপ্যাঁচে পাকিস্তানী জেনারেলরা বিচারের কাঠগড়ায় দাড়ায়নি। তারপরও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যুদ্ধাপরাধীর বিচার বিষয়টি নিয়ে নানান উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্র হিসাবে পাকিস্তান সেই অপরাধীদের রক্ষার সকল ব্যবস্থা নিয়েছে। এই হত্যাকান্ড আর বিচার না হওয়ার সুদুরপ্রসারী ফল হিসাবে বাংলাদেশেও পরবর্তীতে সামরিক কু্ হয়েছে - কোন কোন টা ছিল ভয়াবহ ((Death By Government, p. 334.) ৫. শেষ কথা: পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর সহযোগী হিসাবে কাজ করা আধা সামরিক বাহিনী (যেমন রাজাকার আলবদর) সমান ভাবে যুদ্ধাপরাধী।

তাদের নেতারা এখন রাজনৈতিক নেতা হিসাবে ভিন্ন ভাবে হাজির হয়ে জনতার মধ্যে মিশে যেতে চাচ্ছে। পাকিস্তানী জেনারেলদের বিচার করা বা তাদের আদালতে হাজির করা বর্তমানের প্রেক্ষপটে বাংলাদেশের জন্যে কঠিন। এই কাজটা করার জন্যে পাকিস্তানের বিবেকবান মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে। তাদের বুঝতে হবে - কেন তারা একদল গনহত্যাকারীর দায়িত্ব নেবে। তার কিছু আভাসও পাওয়া যাচ্ছে।

গতবছর পাকিস্তানের নারী অধিকার আন্দোলনের নেত্রী আসমা জাহাঙ্গীর সিবিসির সাথে এক স্বাক্ষাৎকারে সুস্পষ্ঠ ভাবে বাংলাদেশে গনহত্যার জন্যে দায়ী জেনারেলদের বিচারে দাবী করেছে। পাকিস্তানের মুক্তবুদ্ধির মানুষরা একদিন এই দাবীকে গনদাবীতে রূপান্তরিত করে যুদ্ধাপরাধী জেনারেলদের বিচারে মাধ্যমে জাতি হিসাবে তাদেরকে গনহত্যার দায় থেকে মুক্ত করবে। এই আশাই করি। আর এই দিকে দেশের ভিতরে ধর্মের আর রাজনীতির আড়ালে লুকিয়ে থাকা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবী আবারো জোরালো হচ্ছে। এই কথা সত্য যে, ৩৭ বছরের রাজনৈতিক মারপ্যাচ, প্রতিবিপ্লবীদের কর্মকান্ড আর পেট্রোডলারের প্রভাবে যুদ্ধাপরাধীদের অবস্থান আপাত দৃষ্টিতে বেশ সুরক্ষিত মনে হচ্ছে।

কিন্তু সরকারের যুদ্ধাপরাধী প্রতি পক্ষপাতিত্বের অবস্থান থেকে নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহনের পরই আসলে বুঝা যাবে - তাদের আশ্রয়স্থলটি আসরে কি তাসের ঘর না লখিন্দরের লোহার বাসর। আশার কথা জনতা জেগে উঠছে। সরকারের উচিত মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার ফোরামের দাবীগুলো মেনে দ্রুত যুদ্ধাপরাধীর বিচারের ট্রাইবুনাল গঠন করা। একটা স্বাধীন দেশে প্রগতিশীল আর আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় গণহত্যাকারী আর যুদ্ধাপরাধীর কোন স্থান নেই। ( লেখাটি জেন্ডারোসাইড নামক যুদ্ধের উপর গবেষনা প্রতিষ্ঠানের গবেষনা কর্ম থেকে নেওয়া হয়েছে) http://www.gendercide.org/ [কৃতজ্ঞতা - গত ডিসেম্বরে যখন এই দলিলটা চোখে পড়ে তখন রাশেদকে পাঠিয়ে দিয়ে পোস্ট তৈরী করার অনুরোধ করি।

রাশেদ একটা কাঠামো দাঁড় করিয়ে দেশে চলে যায়। আর আমি ধীরে ধীরে কাঠামোর উপর পলেস্তার দিয়ে একটা লেখা তৈরী করি। অবশেষে রাশেদের অনুমতি নিয়ে পোস্ট দেই। সুতরাং পাঠক, বুঝতেই পারছেন - মুল পরিশ্রমটা রাশেদের। রাশেদের কাছে আমার ঋনের পরিমান অনেক - তার সাথে এই লেখাটা যোগ হলো।

]

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.