বোবার কোন শত্রু নাই! আমাদের এই দ্বিধা-বিভক্ত সমাজে বোবা থাকাই নিরাপদ থাকার অন্যতম শর্ত বলে মনে হচ্ছে! সেই চেষ্টাতেই এতদিন নিয়োজিত ছিলাম। কিন্তু ফেলানী ইস্যুতে গত কিছুদিন যাবৎ মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখে আমারও কিছু উপলব্ধি হল।
প্রথম কথা, ফেলানীর বিচার নিয়ে যা ঘটেছে তা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। এটির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার ব্যাপারে কারো মনে কোন প্রশ্ন থাকার কথা না।
ভারতের পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম প্রক্তা নেহেরু কৌটিল্য দ্বারা অনেকটাই প্রভাবিত যা তিনি নিজের মুখেও একাধিকবার বলেছেন।
এমনকি ভারতের কূটনৈতিক এলাকা "চানক্য" এলাকা নামে পরিচিত(চানক্য কৌটিল্য এর আর এক নাম) এই নীতির অন্যতম নীতি হচ্ছে "প্রতিবেশী" রাষ্টের প্রতি শত্রুতা; যার প্রতুফলন আমরা বাস্তবে দেখতে পাই। ছোট-বড় প্রত্যেকটি প্রতিবেশীর সাথেই ভারত সন্দেহ বা শত্রুতা প্রকাশ করে থাকে( চীন, পাকিস্তান এর সাথে যুদ্ধও হয়েছে) বাংলাদেশ ও এর ব্যাতিক্রম নয়। আরেকটি ব্যাপার মনে রাখতে হবে; সেটি ভারত একটা সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্র যেমন তার আশপাশের বিভিন্ন দেশ অর্থাৎ বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভূটানে গণতান্ত্রিক শক্তির শত্রু, তেমনি তা নিজ দেশেও জনগণের বিপক্ষ শক্তি হিসেবেই দাঁড়িয়েছে। সুতরাং ভারত পরম বন্ধু হয়ে আমাদের পাশে থাকবে সেটা ভাবার কোন কারণ নেই।
সার্বিক বিবেচনায় আমরা আসুবিধাজনক অবস্থায় থাকলেও দারকষাকসির মত বেশ কিছু উপাদান আমাদের আছে যার মধ্যমে আমরা এই দূর্বলতা কাটাতে পারি। সেটা ভিন্ন কথা কিন্তু আমি বলতে চাচ্ছিলাম আমাদের নিজেদের অবস্থার ব্যাপারে। আমরা নিজেরা কি এ ব্যাপারে সচেতন? নাকি পুরো ব্যাপারটাই নিছক আবেগের প্রকাশ?
আমার কথা ফেলানী কি একটি বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা? এর আগে বা পরে আমরা অহরহ যে সীমান্ত হত্যা দেখছি সে ব্যাপারে আমরা কি প্রতিক্রিয়া দেখাই?
ভারত বড় রাষ্ট্র এবং তার সংষ্কৃতি বেশ সমৃদ্ধ । সুতরাং প্রতিবেশী দেশ হিসেবে এই স্যাটেলাইট এর যুগে সংষ্কৃতি বিনিময় ঘটবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই বিনিময় কেবল একদিক থেকে ঘটতে থাকে তখন তা নির্ভরশিলতা এর জন্ম দেয় এবং তা একময় দেউলিয়াপনার সৃষ্টি করে।
এখন আমাদের দুই দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করলে সেই দেউলিয়াপনার এক অনন্য নজ়ির আমরা দেখতে পাই। অবস্থা এখন এমনই দাড়িয়েছে যে, এরকম শত ফেলানীর মৃত্যুও এই অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে পারবে কিনা সন্ধেহ। (চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।