আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শুনেছি সুখেই বেশ আছো



আজ অফিস থেকে ফেরার সময় আবার সব উলট পালট হয়ে গেল। অফিসের বাস সেই লেকের পাশ দিয়ে ফিরছিল। লেকের ওপারে সূর্য ডুবছে। এ পারে সেই কৃষ্ণচূড়া গাছ। যার নিচে বসে তুমি আর আমি কত সুর্যস্ত দেখেছি।

তুমি প্রতি বিকেলে আমার অফিস ছুটির অপেক্ষা করতে ওই ছোট্ট রেস্তোরাতে। পাঁচটা বাজা মাত্রই তাড়াতাড়ি পি.সি. বন্ধ করে আমিও এক দৌড়ে দুটো রাস্তা পরে তোমার কাছে। এক কাপ চা খেয়ে চলে যেতাম ওই কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে। ছোট দেয়ালটার উপরে পা ঝুলিয়ে দুজনে খুব নিবিড় হয়ে বসতাম। তুমি আমার বাম হাতটা দুহাতে জড়িয়ে ধরে আমার কাধে মাথারেখে লেকের পানিতে আকাশের ছায়ায় ভাসতে।

বাচ্চাদের মত পা দুলাতে দুলাতে টুকটুক করে কত সব আবোল তাবোল গল্প হত আমাদের। তোমার একটা অদ্ভুত অভ্যস ছিল! আমার কাধে মাথারেখে কুট কুট করে কাধে কামড় দেয়া! আমি মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়ে বলতাম –“এই কি কর?”। তুমি প্রশ্ন শুনে খিলখিল করে হেসে উঠে বলতে-“তোমাকে আমার একে বারে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে !”। আমি অদ্ভুত দৃষ্টিতে তোমার চোখে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করতাম এর অর্থ। তুমি তার পাত্তা না দিয়ে বর্ননা করতে বসতে কি ভাবে আমাকে খাবে -“ তোমাকে ব্লেন্ডারে ভরে.. বেশী করে চিনি দিয়ে গুলে... ”।

আমি বাধা বলতাম-“থামো.. থামো.. একটু ওন্য ভাবে খাওয়া যায় না...?”। তুমি ভুরু কুচকে আমার দিকে তাকিয়ে বোঝার চেস্টা করতে কিছুক্ষন। তার পর অর্থটা বোঝা মাত্র কপট রাগের ভঙিতে দাত কিটমিট করে বলতে –“শয়তান....তুমি একটা আস্ত শয়তান....”। বলতে বলতে আমার হাতে এক খামচি। চারটা নখের দাগ বসে গেল গভীরে।

“ আর তুমি একটা ডাইনী”। এই ১১,১২,১৩ নম্বর রোড ধরে কত সন্ধ্যা কেটেছে তোমার হাত ধরে হেটে হেটে। আমরা খুব ছেলে মানুষ ছিলাম। আমাদের খুব মজার একটা খেলা ছিল - রাস্তায় জমে থাকা বৃস্টির পানিতে দুজন দুজনকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেবার চেস্টা । রাস্তার লোক জন কেউ বিরক্তি ভরে, কেউ বা কৌতুহল ভরে তাকিয়ে দেখত এত বড় বড় দুটো ছেলে মেয়ে বাচ্চাদের মত কি সব করে! আমরা সে সবে উদাসীন – দুজনে দুজন বিভোর ।

কে কি মনে করে তাতে আমাদের কি আসে যায়! আমরা আমাদের নিয়েই ছিলাম খুব সুখী। তোমাকে অনেক যন্ত্রনা করেছি। যখন তখন জোরে তোমার কানটা মলে দেয়া, কথা না শুনলে হাত মুচড়ে ধরা, আর একটু আড়াল পেলেই তোমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চুলের মধ্যে মুখ গুজে দিয়ে বুক ভরে নিতাম তোমর চুলের গন্ধ। মাঝে মাঝে এত জোরে বুকের মদ্ধে চেপে ধরতাম যে তুমি হাস ফাস করতে করতে বলতে -“ ছাড় শয়তান...রাক্ষস কোথাকার..”। কি করতাম আর বল , তোমাকে কাছে পেলেই যে আমার বড় উত্তাল হতে ইচ্ছে হত।

তোমাকে কাছে পেলেই যে আমার থাকতোনা নিজের উপর কোন নিয়ন্ত্রন। একটা তুলতুলে বিড়াল ছানার মত তোমাকে খুব আদর করতে ইচ্ছে করত। .... তোমার বিয়ের খবর পেয়েছি। এটাও জেনেছি যে সংবাদটা যেন আমার কানে পৌছায় সে জন্য তোমার সুর্নিদিস্ট নির্দেশ ছিল। আমার কোন অভিযোগ নেই – না তোমার প্রতি, না তোমার পরিবারের কারো প্রতি।

আর অভিমান....? জানি না..। আমি ভাল আছি। খুব ভাল আছি। আছি নাকি! .................................................... শুনেছি সুখেই বেশ আছো, কিছু ভাঙচুর আর তোলপাড় নিয়ে আজ আমিও স্বচ্ছল টলমল অনেক কষ্টের দামে জীবন গিয়েছে জেনে মুলতই ভালোবাসা মিলনে মলিন হয়, বিরহে উজ্বল। এ আমার মোহ বল ,খেলা বল অবৈধ মুদ্রার মত অচল আকাক্ষা, কিংবা যা খুশী তা বল সে আমার সোনালী গৌরব নরী, সে আমার অনুপম প্রেম।

তুমি জানো পাড়া প্রতিবেশী জানে পাইনি তোমাকে অথচ রয়েছ তুমি এই কবি সন্ন্যাসীর ভোগে আর ত্যাগে। -হেলাল হাফিজ

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.