n
চট্টগ্রামের একটি কলোনীতে আমি বড় হয়েছি। কলোনীর অধিকাংশ ছেলেমেয়ের জীবনের লক্ষ্য ছিল বাবা মায়ের চাকুরীর সুবাদে পোষ্য কোটায় বন্দরে একটি চাকুরী পাওয়া। তাই পড়াশোনার প্রতি তাদের মনোযোগ ছিল কম। রাজনীতি এবং খেলাধূলার দিকেই আকর্ষণ ছিল বেশী।
এরশাদের সামরিক শাসনের সময় দেশের রাজনৈতিক পরিস্হিতি সব সময় গরম ছিলো।
শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়া চট্টগ্রামে জনসভা করতে গেলে কলোনী মিছিলে সরগরম হয়ে যেত। একদিকে মাইকিং চলছে আর একদিকে মিছিল। খালেদা জিয়া আসছে,বীর চট্টলা কাঁপছে কিংবা শেখ হাসিনা আসছে বীর চট্টলা কাঁপছে। আর মাইকিংটাও হতো চমৎকার,বীর চট্টলার সংগ্রামী জনতা সম্বোধন করে বলা হতো অমুক তারিখ ঐতিহাসিক লালদীঘির ময়দানে এক বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হবে।
আমার তখন আট কি নয় বছর বয়স।
মিছিলের শব্দ শুনলে রক্ত চঞ্চল হয়ে যেত। আমি দৌড় দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে মিছিলে অংশ নিতাম। আম্মা আর বড় ভাই (আমার চেয়ে দুই বছরের বড় হাফিজ ভাই ছোট থেকেই বুঝদার,এখনও খুব ক্যারিয়ার সচেতন)মিলে আমাকে আটকে রাখতে চেষ্টা করতো কিন্তু আমি তাদেরকে কিলঘুষি মেরে বের হয়ে যেতাম। কার মিছিল,কেন মিছিল কিছু না জেনেই স্লোগান দিতাম,জ্বালো জ্বালো,আগুন জ্বালো!মিছিল শেষে অনেকদিন বিস্কুট খেয়ে বাসায় ফিরেছি।
পরে আম্মা আর ভাই হাল ছেড়ে দিয়েছিল।
মিছিল হলে মফিজ যাবেই। মাঝে মাঝে অনেক দূর থেকে শব্দ কানে আসতো,আমি বলতাম,মিছিল হচ্ছে। আম্মা বলত,আরে না,কান পেতে শোনার ভান করে বলত,কিছুনা। পড়।
বাংলাদেশে ক্লাব দলের ফুটবল খেলা নিয়ে একসময় দেশজুড়ে যে উদ্দীপনা ছিলো তা এখন স্বপ্ন মনে হয়।
ঢাকা ষ্টেডিয়ামে আবাহনী মোহামেডান খেলা সারা দেশে একটা উত্তেজনাকর অবস্হা। খেলা শেষে জয়ী দলের মিছিল আর মিছিল মানেই সেই ছোট্ট মফিজ,কোন দল জিতল তা মফিজের বিবেচ্য নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।