আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া হাসি পুস্পের হাসি
প্রথম বর্ষের প্রথম দিন, প্রথম ক্লাশ। ক্লাস নিচ্ছেন সেসময়ের সভাপতি দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস। ক্লাশের মাঝখানে হঠাত ক্লাশজুড়ে `পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে' গানের রিং টোন বেজে উঠলো। আমি হাত দিলাম পকেটে। স্যরি বলে দাঁড়ালাম।
বললাম, স্যার, একটু বাইরে যাব। স্যার বললেন, যাও। আর আসার দরকার নেই। আমি এ কথা শুনে আর নড়িনা। স্যার বকলেন বেশ কিছুক্ষণ।
আমি মাথা নিচু করে সব শুনলাম। শেষে স্যার বসতে বললেন। তারপর থেকে আর কোনদিন ক্লাশরুম বা উপাচার্য অফিস বা কোন অফিসে খবরের সন্ধানে গিয়ে আমার সেলফোন আর শব্দ করে নি। এই শিক্ষা পেয়েছি দুলাল স্যারের কাছ থেকে। আজীবন মনের ভেতর থাকবে বলে আমার বিশ্বাস।
এমনই শিক্ষাগুরু ছিলেন দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস।
প্রথম বর্ষে আমাদের পড়াতেন দুলাল স্যার। এতো বকাবকি করতেন যে, ইচ্ছে হতো ক্লাশ না করার। কিন্তু এতো সামাজিক আদব-কায়দা শেখানো হতো ওই ক্লাশে যে ক্লাশে না গিয়ে থাকার কোন উপায় থাকতো না। একবছর না যেতেই এ সত্য উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম।
প্রথম বর্ষের নবীন বরণের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সে কথা বলেওছিলাম সাহস করে। মনে আছে বক্তব্য শুনে স্যার শুধু হেসেছিলেন। আর বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেছিলেন, আমি তোমাদের এতো বকি, তেমারা হয়তো কষ্ট পাও। কিন্তু যোগাযোগের শিক্ষার্থী হিসেবে তো তোমাদের অনেক জায়গায় যেতে হবে। সেখানে আদব-কায়দা ঠিক না থাকলে কোন তথ্য তোমরা পাবে না।
তাই এ শিক্ষা।
প্রতিটি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীই স্বীকার করবে এ সত্য, এ শিক্ষার সুফল। সেই দুলাল স্যারের শিক্ষা এবারের প্রথম বর্ষ পাবে কি না আমি জানি না। না পেলে অনেক শূন্যতায় পড়বে তারা এটা নিশ্চিত।
শুধু আদব-কায়দা-ই নয়; বিভাগে যে কোন অনুষ্ঠানে আমাদের উতসাহ দিতেন দুলাল স্যার।
প্রথম বর্ষের তার কড়াভাবটি দ্বিতীয় বর্ষে এসে হয়ে যায় বন্ধুত্বের মধুরতায়। বড় মিস করছি তাকে, মিস করছে বিভাগ। কতদিন এমনটি হবে জানিনা।
বাসায় সমকাল রাখেন দুলাল স্যার। আমার কোন নিউজে ভুল দেখলে বিভাগে আমাকে ডেকে পাঠাতেন।
বলতেন কোথায় কোন ভুল হয়েছে। আমি শুধরে যেতাম। আজ আর সেদিন পাই না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।