অযথা ঝগড়া বিবাদ ভাল লাগে না। শিক্ষা বলতে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নয়। সু শিক্ষা চাই সর্বত্র।
সম্প্রতি দিগন্ত টিভির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বির অংশগ্রহন নিয়ে বেশ হৈ চৈ করছে একটি মহল। কয়েকটি স্থানীয়, জাতীয় পত্রিকা ও অনলাইনে এ সংক্রান্ত খবর ছাপানো হয়েছে।
ওই মহলটি রাব্বীকে নব্য রাজাকার বলে ঘোষনা দিয়েছে। রাজাকারের মালিকানাধীন চ্যানেলের অনুষ্ঠানে তিনি কিভাবে গেলেন ?
রফিউর রাব্বী আপনি মহা অন্যায় করে ফেলেছেন। এমন একটি কর্ম কিভাবে করিলেন আপনি ? হায় হায় মহা ভারত বুঝি এবার সত্যি সত্যি অশুদ্ধ হয়েই গেল।
তবে এমন কর্ম অনেকে করিয়াছেন বলিয়া স্মৃতি পটে দৃশ্যমান হয়। দিগন্ত টিভি’র বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে দৈনিক ডান্ডিবার্তার সম্পাদক ও ইত্তেফাক জেলা প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান বাদলকে দেখেছি।
তিনি সেখানে দিগন্ত টিভির গেঞ্জি গায়ে পরে বক্তব্য রেখেছেন । এবার তার পত্রিকায় রাব্বিকে নিয়ে সমালোচনা করা হয়েছে। বিষয়টা কেমন হল! নিজের বেলায় আঁটিসুটি, পরের বেলায় চিমটি কাটি।
দিগন্তের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে শুধু বাদল নন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সামিউল্লা মিলন, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব সাধারন সম্পাদক শাহ আলম খন্দকার ,শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, বিকেএমইএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম, জাতীয় শ্রমিক লীগ ফতুল্লা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি কাউসার আহমেদ পলাশ, মুক্তিযোদ্ধা ও চলচ্চিত্র পরিচালক তমিজউদ্দিন রিজভীসহ আরো অনেকেই ছিলেন। এমনকি রফিউর রাব্বিও ।
তবে সেদিন তাকে নিয়ে কোন কথা হয়নি। হয়তো তখন ত্বকী হত্যাকান্ড হয়নি বলে আর সেই হত্যাকান্ডে ক্ষমতাবান এক রাজনৈতিক পরিবারের কতিপয় সদস্যকে জড়ানো হয়নি তাই।
যে অনুষ্ঠান নিয়ে এত বিতর্ক সে অনুষ্ঠানে রাব্বি ছাড়াও জেলা বিএমএ সভাপতি ও সম্প্রতি আওয়ামীলীগ নেতা শামীম ওসমানের পক্ষে বিরাট বিজ্ঞাপনের ৮০ জনের একজন ডা. শাহনেওয়াজ ছিলেন। তাকে নিয়ে কোন কথা বলেনি সমালোচকরা।
দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশনের একটি শাখা দিগন্ত টিভি।
এতে এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মীর কাশেম আলী। যিনি মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধী মামলায় বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তিনি ছাড়াও এই টিভিতে আরো কমপক্ষে ২৫ জন পরিচালক আছেন। আছে অজ¯্র পাবলিক শেয়ার। এই টিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মহাজোট সরকারের মন্ত্রী এমপি গিয়েছেন।
একই কর্পোরেশনভুক্ত একটি জাতীয় দৈনিক বর্তমানে বাজারে রয়েছে। এ টেলিভিশনে দেশ বরন্য মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী একটি অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করতেন। যতটুকু দেখেছি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক অনুষ্ঠানও প্রচার হত। আমি এসব বলে দিগন্ত টিভির সুনাম গাইছি না। আমি বলতে চাইছি, কোন একজন অপরাধ করলে তার দায়ভার অজ¯্র শেয়ার হোল্ডার এবং অগনিত স্টাফদের নিতে হবে কেন ? তা ছাড়া মীর কাশেম আলীর বিচার এখনো চলমান।
শুধুমাত্র বিজ্ঞ আদালতই তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে পারেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেও যুদ্ধপরাধীদের বিচারের পক্ষে। যারা মানুষ হত্যা করেছে, লুটপাট, ধর্ষন করেছে তাদের বিচার হবে এটাই স্বাভাবিক।
আর দিগন্ত টিভি’র অনুষ্ঠানে গেলেই নব্য রাজাকার বা রাজাকারের পক্ষে গেছে এমনটা যারা বলেন তাদের সাথেও একমত নই। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এই দিগন্ত টিভিতে আমি আওয়ামীলীগ নেতা শামীম ওসমানেরও সাক্ষাৎকার দেখেছি।
তাই বলে কি তিনিও ......?
তাছাড়া হেফাজতের ঘটনায় সরকার সাময়িকভাবে দিগন্ত ও ইসলামিক টিভি বন্ধ করে দেয়ার পর দেশের প্রায় সব টেলিভিশন মালিক, পত্রিকার সম্পাদক এর প্রতিবাদ করেছেন। যার জবাবে মাননীয় তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, এ দু’টি টিভির সম্প্রচার সাময়িক বন্ধ রয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তদন্ত চলাকালে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে দোষারোপ করা যায় কি ? এ প্রশ্ন রইল অতি উৎসাহী ওই মহলের প্রতি। যারা দিনের বেলায় “হ্যালো ভাই’ বলে আর রাতের বেলায় বলে ‘ মা কেমন আছ”?
আর রফিউর রাব্বী দিগন্ত টিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গিয়েও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়েছেন।
তিনি বেকার সাংবাদিকদের মানবিকতার দিক বিবেচনা করে টিভি খুলে দেয়ার দাবি করেছেন। যা সভ্য সমাজের সব সভ্য লোকই করে।
সব শেষে একজন ভুক্তভোগী হিসেবে আমি ইসলামিক টিভি ও দিগন্ত টিভি খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি সরকারের কাছে। কেননা আমি বিশ্বাস করি জনগনের ভোটে নির্বাচিত গনতান্ত্রিক সরকার গণ মাধ্যমকে শত্র“ নয় আপনজন ভাবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।