আমিও সুরের মত মিলিয়ে যাবো। ততদিন পর্যন্ত পাওয়া যাবে paintlove@gmail.com এ...
ঠিক ১১:৩০ মিনিটে গিয়ে গুলশানে পৌছায় শামসু। আর কিছু দূর। পায়ে হাঁটা পথ। যাক অন্তত লেট হবে না।
না হয় প্রথম দিনই একটা বিশাল ধরা খেতে হতো।
অফিসটা বিশাল। বেশ কয়েকটা বিল্ডিং পাশাপাশি। শামসু ৩ নম্বর বিল্ডিংয়ের ভেতরে বসে আছে। প্রথমে এসেই নামের পাশে সাইন করতে হয়েছে।
কিন্তু কি ব্যাপার, ১১:৪০ প্রায় বাজে। এখনও তো কেউ ডাকছে না। তবে কি ওরা খেয়াল করেনি ওকে। না করারই কথা। যে সাজে ঘর থেকে বেরিয়েছিল সেটা এখন একেবারেই নেই।
মানুষের ধাক্কায়, গরমে সে এখন একটা সিদ্ধ মাংসপিন্ড ছাড়া আর কিছুই নয়। ইস্ত্রি করে আনা শার্টটা যেন তাকে নিয়ে উপহাস করছে। এরকম ইস্ত্রিছাড়া একটা শার্ট এর সাথে টাই। ব্যাপারটাই কেমন হাস্যকর। বাসের লোকজন ওর দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়েছিল।
তাকাবে না কেন....টাই পরে, ইন করে, জুতা লাগিয়ে এরকম লোকাল বাসে তো কেউ সচরাচর ওঠে না।
শামসু আবার উঠে গেল ডেস্কের কাছে। "এক্সকিউজ মি"..
"বলুন"
"জ্বি, আমি শামসুল আলম....আমার ১১:৪০এ ইন্টারভিউয়ের সময় ছিল। "
ডেস্কের মেয়েটা তার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। তারপর বলল, "আপনি এই খাতায় নাম লিখে উপরে চলে যান"
শামসু খাতায় নাম লিখল।
ডেস্কের মেয়েটা তাকে একটা ভিজিটর কার্ড দিল। শামসু সেটা নিয়ে পকেটে রেখে দিল। লিফটে করে উপরে যেতে হবে। বড় অফিসগুলোর এই একটা সমস্যা, সিড়ি যে কই থাকে বোঝা যায় না। অনেক অফিসে সিড়িই থাকেনা।
আচ্ছা এটা কি ফ্যাশান?
লিফট দিয়ে সোজা ৩ তলায় চলে যায় শামসু। ওখানেও ডেস্কে একটা মেয়ে। মেয়েটা নিচের মেয়েটার চাইতে সুন্দরী। শামসু মুগ্ধ চোখে দেখতে লাগল। চাকরী হলে এরকম কত মেয়ে তার কলিগ হবে।
নীলাকে দেখিয়ে দেখিয়ে ওদের সাথে ঘুরতে হবে। সে নিশ্চয়ই হিংসা করবে....!
এই মেয়েটার কোনোদিকে খেয়ালই নেই। শামসু ওর সামনে দাড়িয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে সেটা মেয়েটার চোখেই পড়ল না। সে আপন মনে টেলিফোনে কথা বলতে থাকে। বোঝাই যায়..আনঅফিসিয়াল কথাবার্তা।
মেয়েটার উপর তার রাগ হয়। আরে অফিসে কি খাজুরা আলাপ করার জন্য তোমাকে বসিয়ে রাখা হইছে! এবার মেয়েটির খেয়াল হয়........."আপনি ওখানে বসুন"
শামসু সোফায় বসে ভাবতে থাকে...কি জিজ্ঞেস করতে পারে? সে নিশ্চয়ই সব কথার উওর দিতে পারবে। সে থিয়েটার করা ছেলে। কথা আটকে যাবে না নিশ্চয়ই। হাত দিয়ে নিজের চুলটা ঠিক করে নিল।
একটা আয়না সাথে থাকলে মন্দ হত না। শার্টটা যতটুকু সম্ভব ঠিক করে নিল।
"আপনি কি শামসুল আলম"?......."জ্বি"..........."আপনি বোধহয় একটু দেরী করে এসেছেন"
শামসুর কিছু বলে না। এত কষ্ট করে সময় মত এসেও এরকম কথা শুনতে হল। আপনি ভেতরে আসুন।
স্মার্ট মত ছেলেটার পেছন পেছন সে ভেতরে গিয়ে ঢুকল। তার মনে হল জীবনের কঠিনতম পরীক্ষার সম্মুখীন হতে যাচ্ছে। শামসুর গলা শুকিয়ে আসে। সে বড় বড় করে দম নিতে থাকে। তার মনে হতে থাকে এখান থেকে বের হতে পারলেই সে বেঁচে যেত....
(চলবে)
আগের পর্বগুলি পড়ুন নিচের লিংক হতে...
শামসু ব্যাচেলর - ১
শামসু ব্যাচেলর - ২
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।