আমিও সুরের মত মিলিয়ে যাবো। ততদিন পর্যন্ত পাওয়া যাবে paintlove@gmail.com এ...
তিনটা মিনিট মনে হলো যেন তিন ঘন্টা...অবশেষে শামসু দোকানে ঢুকলো। রোজার দিন হলেও দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই। এরা সম্ভবত পর্দা দেয়ারও কোনো প্রয়োজন মনে করে না। যেটা টাঙিয়েছে সেটাকে পর্দা বলা যায় না।
ভেতরে ঢুকে মনটা খারাপ হয়ে গেল। বসার জায়গা পাওয়া গেল না। অথচ নাকি রোজার দিন। কিন্তু তার তো কিছু না খেলে চলছে না। আজকে সে যাবে ইন্টারভিউ দিতে।
এক সপ্তাহ আগে একটা টেলিকম কোম্পানীতে লিখিত পরীক্ষা দিয়ে সে রীতিমতো পাস করেছে। তাকে ফোন করে কনগ্রাচুলেশন জানিয়েছে ডেস্কের মেয়েটা। আজকে তাই সে একটু সভ্য ভাবে বের হয়েছে। শার্টটা গতকাল ইস্ত্রি করিয়েছে লন্ড্রী থেকে। মারুফের কাছ থেকে একটা টাই ধার করেছে শার্টের সাথে ম্যাচ করে।
জুতায় কালি করিয়েছে। মোজাটা অবশ্য একটু ছেঁড়া, তাতে কি ওটা তো আর দেখা যাচ্ছে না। ভেবে খানিকটা ভালই লাগল। অবশেষে একটা চাকরী পাওয়া যাবে। চাকরীটা হলে বেতন কমপক্ষে ২০ হাজার তো হবেই।
কেন তানজিল তো এর চাইতে নিচু পোস্টে চাকরী করে। ওরই তো ১৮হাজার ছিল স্টার্টিং স্যালারি.....।
চাকরীটা পেলে সে কি করবে ভাবতে লাগল। তানজিলকে জানাতে হবে। ব্যাটা চাকরী আছে বলে সে কি ডাট।
বিলাসিতা কাকে বলে তা ওকে দেখলে বোঝা যায়। ১৮ হাজার তো বেশী না। দেখ ব্যাটা আমি ২০ হাজার টাকার চাকরী করি।
নীলাকে জানাবে....তবে ওকেও বুঝতে হবে যে শামসু এখন আর হেলা ফেলার বিষয় নয়। মেয়েটা ভাল করেই জানে যে শামসু তাকে পছন্দ করে অথচ এমন ভাব দেখায়... ওকে সরাসরি প্রপোজ করলে কেমন হয়...? যদি ফোন করে বলে, "চাকরীটা আমি পেয়ে গেছি নীলা শুনছ?" ব্যাপারটা মনে করে হাসি পেল শামসুর।
একটা বার্গার অর্ডার করে খেয়ে নিল। পানি টা খেতে কেমন বিস্বাদ লাগল। চাকরীটা হোক, তারপর সাথে মিনারেল ওয়াটার নিয়ে ঘুরবে তানজিলের মত। শালা বাইরের পানি খায়না। শামসুর মতো মানুষদের সে কি মানুষ মনে করে না?
সকাল সকাল রিক্সার ঝামেলাটা না হলে ভালই হতো।
এখন কোনো রিক্সা পাওয়া যাচ্ছে না। ভিড় ঠেলাঠেলি করলে শার্ট এর ইস্ত্রিটা নষ্ট হয়ে যাবার আশঙ্কা আছে, দেখা যাবে জুতার উপর পাড়া দিয়ে একজন দাড়িয়ে আছে। তাই বাস ধরাও ঝামেলা। ঘড়ি দেখল শামসু। ইন্টারভিউয়ের টাইম ১১:৩০ অথচ এখন বাজে১১টা।
বাস না ধরলে আধা ঘন্টায় পৌছানো সম্ভবও না। রাস্তায় এখন পর্যাপ্ত জ্যাম আছে। রাজ্যের মানুষ তার দিকে তাকিয়ে আছে। যেন সে চিড়িয়াখানার একটা চিড়িয়া। পায়ে জুতা, গলায় টাই , তার নিজেরও কেমন দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হয়।
কোনোমতে একটা বাসের দরজায় ঠাই নেয় শামসু। আকাশে প্রচন্ড রোদ। অবশ্য এখন সেদিকে তাকাবার সময় নেই। কোনোমতে সময় মতো যেন সে পৌছাতে পারে সেই চিন্তাই মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগল। রাস্তায় যথেষ্ট জ্যাম।
গাড়িগুলো যেন নড়তে চায় না। শামসুর মনে হয়, সারা ঢাকা শহর যেন তাকে নিয়ে উপহাস রচনা করছে। সে এই উপহাস নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছে। আকাশে প্রচন্ড রোদ, প্রচন্ড গরমে দরদর করে ঘামতে থাকে শামসু...
(চলবে)
পড়ুন প্রথম পর্ব নিচের লিংক হতে....
শামসু ব্যাচেলর-১
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।