আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিশন: জিরো> ক্লাসের ফাস্ট বয় ই পীর হয়না।

জীবনের শুরুটা মৃত্যুরই নামান্তর। জিজ্ঞেস করি!!

আমাগো দেশে পীর ফকির লইয়া মানুষের মাঝে অনেক রকমের কোন্দল আছে। কেউ কয় আমি ওরে মানি কেউ কয় আমি ওরে মানি। আবার তারা মারামারি ও করে। ছোট্ট একটা কাহীনি বলি আপনাগো: একদা এক লোক পীরের মুরিদ হবার জন্য একজন ভালো পীরের সন্ধানে অনেক দেশ ঘুইরা বেড়াইল, মাগার উনি কোন একটা ভাল পীর পাইলেন না, সব নাকি ভন্ড।

গাছ তলায় বসে হয়রান হয়ে সেই লোক কানতাছে, এমন সময় এক লোক আইসা কইল 'ভাই আপনার কি হইছে?' লোকটা তারে কাহীনি খুইলা কইল। পরে আগুন্তুক ভদ্রলোকটি বলল, আপনি কি জানেন যদি আপনি আপনের বাকীটা জীবন মানুষের সেবা করেন আর ভাল কাজ করেন তাহলে আপনার কোন পীরের মুরিদ হওন লাগব না। লোকটি বল্ল এই কথার বিশ্বাস কি? আগুন্তুক বল্ল, মানুষকে নিস্বার্থে সেবা করে যান, এর পর বুঝবেন। পরে লোকটা তার মানুষ সেবা শুরু করল, পরে বুজল, আগুন্তুক ঠিক বলেছে। এবার আসি মুল কাহীনিতে।

আমাগো ক্লাসের ফার্স্ট বয়, সে ছিল খুবই হ্যান্ডসাম একটা পোলা, সব সময় পরিস্কার ইউনির্ফম পইরা আসত, চুল একেবারে একপাশে সীতি কইরা, চোখে একটা চশমা পইরা সব সময় সাইকেলে কইরা স্কুলে আইত। আমাগো সকল স্যার ম্যাডামরা কিছুর থেকে কিছু হইলেই ফার্স্ট বয়রে ডাইকা তার সমাধান জিগাইত। কোন পোলাপান কাইজ্জা করলে তারা ফার্স্ট বয়ের তুলনা দিয়া কইত ' রকিব(ফার্স্ট বয়ের নাম) তো কাইজ্জা করে না, তোরা বদমাইশ গুলা এত কাইজ্জা করস কেন?' একবার আমি ক্লাস ফাঁকি দিয়া ছি:নেমা দেখতে গেছিলাম। রাকিব আমারে দেইখ্যা ফালাইছে, হে স্যাররে গিয়া কইছে স্যার তমুকে ছি:নেমা দেখতে গেছে ক্লাস ফাঁকি দিয়া। পরে স্যারে আমারে রাকিবের সামনে ডাকলো, পুরা ক্লাসের সামনে আমারে দেখাইয়া কইল, এই দেখ আমাদের ক্লাসের ৬ রোল নম্বরের(আমার) অবস্থা, আর রাকিবরে দেখ, এই পোলাডা জীবনেও ক্লাস ফাঁকি দেয় নাই।

এই বইলা আমারে পুরা ক্লাস এক ঠ্যাঙ্গের উপর খাড়া করাইয়া রাকছিলো। খুব ইনসাল্ট ফিল হইছিল। আর মাস্টরে আমারে কইছিল, পারলে রাকিবের মত ভালা পোলা হইয়া দেখাও। হেইদিনই মনে মনে পণ করছি আমি রাকিবের মত হইয়া দেখামু। ত এইবার রাকিবের লগে দোস্তি করবার চাইলাম, সবাই কয় ভালোর লগে থাকলে ভাল হয় আর খারাপের লগে থাকলে খারাপ।

কিন্তু রাকিব ত আমারে কেয়ার করে না, হ্যান্ডসাম বয় মাইয়াগো মত আমার লগে ভাব মারে। কি মসিবত! পরে আমার এক বন্ধু কইল ওর বাসায় যাইতে, বাসায় গেলে নাকি হালায় একটু নরম হইতে পারে। গেলাম হালার বাসায় ওমা গিয়া দেহি হালায় পাশের বাসার একটা মাইয়ার লগে ঘুচুর ঘুচুর আলাপ করতাছে তাগো বারান্দা দিয়া। আমারে দেইখ্যা কইল আরে তুমি যে আমার বাসায় কেমনে কেমনে, আমি কইলাম না, আসলে তোমার লগে দেহা করতে আইলাম, হালায় আবার কমিকস বইয়ের পাগল আছিল, তাই ওর লাইগা ৫০টাকা খরচ কইরা নতুন নতুন বই লইয়া গেলাম। হালায় তো খুব খুশি আমারে কয় কবে দিতে হইব? আমি কইলাম না, এইগুলা তোমার।

হালায় আরো খুশি। যাই হোক এইভাবে তার লগে আমার বন্ধুত্ব বাড়লো, একদিন স্কুল ছুটি শেষে হালায় আমারে কয় তোর কাছে দুই টাকা আছে? আমি কইলাম হ আছে, জিগাইলাম কি করবি? কয় আছে একটা কাম পরে কমু। একটা টোকাই দেগি প্যাট বাইর কইরা খারাইয়া আছে। রাকিব ওরে তিনটাকা দিয়া কইল ১ টাকা তোর, আর বাকীটা দিয়া জিনিস লইয়া আয়, আমি কিছু বুঝলাম না, পরে দেহি কতক্ষন পর হালায় গোল্ড লিফ সিগারেট আইনা দিছে, আমি টাসকি খাইয়া কইলাম, রাকিব তুই সিগারেট খাস? ও কয় আবে হালা কথা কম আয় আমার লগে পরে দেহি আমারে স্কুল গেটের পিছনে লইয়া গিয়া হালায় সিগারেট ধরাইছে, পুরা প্রোফেশনাল, টানের পর টান দিতাছে, আমারে সাধলো, আমি কইলাম, না তুই টান। পরে হালার পুতে কয় ও নাকি ক্লাস সিক্স থেইকা টানে, আবার ত মাথাটা ভন ভন করতাছিল, যেই পোলারে আমাগো ক্লাসের সব পীর মানে এই হালায় বিড়ি টানে।

বার্ষিক পরীক্ষা শেষ। শীত পুরাদমে শুরু হইয়া গেছে। হালায় আমারে বাসায় ফোন কইরা কয় দোস্ত তুই রেডি থাক এক জায়গায় যামু, আমি কইলাম কই? হালায় কয় আইলে নাকি টের পামু। সন্ধ্যা ৭টার সময় হালায় মুখের মধ্য চাদর দিয়া আমার ঘরে আইল, আইয়া কয় চল, আমি ডরাইয়া কইলাম, আপনে কে? হালায় কয় আমি রাকিব, তুই তারাতারি বাজারের গেটে আয়। আমি ও চাদর দিয়া এই প্রচন্ড শীতে বাহির হইয়া গেলাম, আম্মারে কইলাম ব্যাডমিন্টন খেলতে যাই।

পরে গিয়া দেহি আমাগো ক্লাসের সেকেন্ড বয়, থার্ড বয় ও হাজির। জিগাইলাম কই যাবি ওরা কয় ছবি দেখব। আমি কইলাম এত রাইতে ছবি দেখবি। ওরা কয় এক টিকিটে দুই ছবি দেখব। আমি কইলাম এতে আমি নাই, আমারে জোর কইরা লইয়া গেল।

প্রথমটা ভালই আছিল ফাইটিংয়ের ছবি, দেইকা মজা পাইলাম, পরেরটা আরম্ভব হইতেই দেহি পুরা শরীর দিয়া ঘাম বাহির হইতাছে, আর মাথাঠা ভন ভন করতাছে, আমি মাথা নিচু কইরা রাকছি, হালায় আমারে কয় শরম পাস কেন, দেখ এইগুলা ভাল জিনিস। আর সবাই দেহি গভীর মগ্ন হইয়া দেকতাছে, কেউ কেউ দেহি আবার প্যান্ট ঠিক করে। এক হালার পুত দেহি লুঙ্গির ভিতরে হাত দিয়া তার কর্ম কইরা যাইতেছে, যাই হোক ছবি শেষ, এইবার সব আবার চোখ মুকে চাদর দিয়া হল ত্যাগ করলাম। পরে দেহি ওরা সিগারেট টানতাছে, হঠাৎ একটা গন্ধ নাকে লাগলো(গাঁজার গন্ধ)। জিগাইলাম কিরে সিগারেটে এত গন্ধ কেন? কইল এইডা হইল সিগারেটের বস, এইডা টানলে তুই যা ভাববি, তা হইয়া যাইবি।

ক্লাসের ভাল ছাত্রদের এহেন কান্ড দেইকা আমি প্রায় পাগল হইয়া যাবার উদ্রুব। এদের মুখোসটা হইল ভন্ড পীরের মত, রাতের আলোয় এরা করে আকাম কুকাম, আর দিনের আলোয় সাধু। আমাগো ক্লাসের সেই পীরের ও একই অবস্থা। কি ভাবছিলাম আর কি বাইর হইল। তাই সেদিন ই মনে মনে কইছি এই সব ভাল ছাএ গো আমি গইনা চলুম না, শালারা বদ, ক্লাসে আইলে দুনিয়ার সবচাইতে ভাল পোলা আর চক্ষুর আড়ালে এরা মুখোসধারী ভন্ড,প্রতারক।

বিধাতা এগো মাথায় এতো গিলু যে কেন দেয়? সারা বছর পইরা পাশ নিয়া টানাটানি, ভাল ছাত্র না হইলে আবার কেউ গনে না, কত সমস্যা। আর এরা একটু পইরা দুনিয়া কাইত, সবাইরে নিগেজো ইশারায় নাচায়। সবার সামনে থাকে পীর, আর পিছনে ভন্ড, লুইচ্ছা, গান্জাখোর। তাই এক কথা মানি , ভাল খারাপ যাই হই আমি ই সেরা। * লেখাটা বড় হয়ে গেছে! তাই দু:খিত * পরের লেখা: মিশন: জিরো> গার্ল্স স্কুলের সামনে হিরোরা খারায়!


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।