ভালোবাসার ঊর্বশী বুকে লেখা আছে এক নাম- সে আমার দেশ, আলগ্ন সুন্দর ভূমি- বিমূর্ত অঙ্গনে প্রতিদিন প্রতিরাত জেগে ওঠে তার উদ্ভাসিত মুখ
বিজ্ঞানের এ চরম উৎকর্ষতার যুগে বাংলাদেশের মানুষ আজও অলৌকিক ব্যাপার, স্বপ্নে পাওয়া ওষুধ এবং ঝাড়ফুঁকে বিশ্বাস করে। কারণ আমাদের সমাজের কুসংস্কার আজও কাটেনি। এর একমাত্র কারণ হলো অশিক্ষা। দেশের ৫০ ভাগ লোক যেখানে অশিক্ষিত সেখানে মাজারে মানত, তাবিজ-কবজ কিংবা ঝাড়ফুঁকের প্রভাব তো থাকবেই। কিন্তু যারা শিক্ষিত তাদের কী একটুও দায়বদ্ধতা নেই? অবশ্যই আছে।
আর তিনি যদি হন নামী-দামী লেখক তাঁর দায়বদ্ধতা তো আরও বাড়েই। কারণ যুগে যুগে লেখকরাইতো সমাজের চোখ খুলে দিয়েছেন। এভাবে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের থেকেই দেশে সামাজিক তথা অর্থনৈতিক বিপ্লব হয়েছে। দেশ গেছে এগিয়ে, হয়েছে উন্নত। আমাদের দেশের লেখক সমাজের কী সেই দায়বদ্ধতা নেই? দেশের জনপ্রিয় লেখকরা যদি সবার আগে তবে কুসংস্কার দূরীকরণে এগিয়ে আসেন ফল দেবে তাড়াতাড়ি।
অথচ কুসংস্কার যখন লেখকের পুঁজি তখন এদেশ কোথায় গিয়ে পৌঁছবে সেটাই এখন ভাবনার বিষয়। সায়েনস ফিকশন নিয়ে যারা লেখেন তাদের কথা আলাদা। তারা বিজ্ঞানের একটা সূত্র ধরে এগোন বা অগ্রিম সূত্র ভাবেন এই যা। তারা কিন্তু কুসংস্কারপন্থী নন। কিন্তু রহস্যগল্পের আড়ালে সমাজের কুসংস্কারকে বিশ্বাসী করা দেয়া বা তরুণ সমাজকে মোহগ্রমস্ত করা কতোটুকু শোভন? শিশুদের মনে সব লেখা বা নাটকের কী প্রভাব পড়ছে চিন্তা করুন একবার।
হ্যারী পটার লিখে তার লেখক বিলিওনার হচ্ছেন কিন্তু তার পাঠক-দর্শক শিশুরা সত্য থেকে কতো দূরে আছে তা কী লেখকরা চিন্তা করেন!? পাঠকগণ আমাদের লেখকদের দুই-একটা নমুনা দেখুন তাহলে-
বিনা যন্ত্রপাতি বা টুলস ছাড়া মেশিন ফইর করা বা ঠিক করা..
চোখ দিয়ে আগুন জ্বালানো....
ভূত-ভবিষ্যত বলে দেয়া...
কারো মগজের ভিতর ঢুকে তার ভাবনা বোঝা...
মৃত মানুষের পুনরুত্থান....
কবরস্থানে কিশোরকে পরীতে পাওয়া...
বৃক্ষমানব, জলমানব হওয়া...
আরও কতো কী! লিখলে লিস্ট অনেক বড়ো হয়ে যাবে।
সবশেষে বলতে চাই, আমি আসলেই অভাব বোধ করছি সেই চিরঞ্জীব লেখার যা সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে, দূর করে কুসংস্কার-
মানিক বন্দোপাধ্যায়ের- পদ্মা নদীর মাঝি
সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহর- লাল সালু
জহির রায়হানের- হাজার বছর ধরে
শহীদুল্লাহ কায়সারের- সংশপ্তক
সেলিনা হোসেনের- হাঙর নদী গ্রেনেড
রিজিয়া রহমানের- শিলায় শিলায় আগুন
মাহমুদুল হকের- জীবন আমার বোন
এবং
সর্বোপরি হুমায়ূন আহমেদের-নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার বা আগুনের পরশমণির মতো লেখা।
আমার চাওয়ার ফিরিস্তি দিলাম। আপনাদের চাওয়া কী পাঠক? একটু জানাবেন...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।