নিরপেক্ষ অর্থাৎ কোন কিছুর মাধামাঝি অবস্থান। পশ্চিমারা তাদের অনেকগুলো অর্জন ও আবিষ্কারের মধ্যে নিরপেক্ষতাকেও অন্তভূক্ত করে নিয়েছে যাদের মাঝে ফ্রান্স, জার্মানী, বৃটেন, আমেরিকা অন্যতম। নিরপেতা শব্দের মধ্যে বর্ণ নিরপেতা, ধর্ম নিরপেতা, রাজনৈতিক নিরপেতা, নরী-পুরুষের নিরপেতা, সংবাদপত্রের নিরপেক্ষতা ইত্যাদি সবকিছুই অন্তর্ভূক্ত।
নিরপেক্ষ ,এই শব্দটি অত্যন্ত ছোট হলেও এর ব্যাপ্তি অনেক বেশি। তাই এ নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই।
কেউ নিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী আবার কারও মতে নিরপেক্ষতা বলে কিছু নেই। নিরপেক্ষতাকে সঠিকভাবে অনুধাবন করতে হলে আমাদের দুপরে বক্তব্য ও চিন্তাকে মূল্য দিতে হবে, যদিও দুই প পরস্পর বিপরীতে অবসাথান করে এবং এক মতবাদ অপরের অস্তিত্য স্বীকার করে না।
1ম পক্ষের মতে, নিরপেক্ষতা আলাদা একটি পক্ষ অর্থাৎ পক্ষ-বিপক্ষের মাঝে নয় বরং পুরোপুরি স্বতন্ত্র একটি অংশ যার নিজস্ব অবস্থান রয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ ফুটবলের কথায় আসা যাক। যদি কোন নিরপেক্ষ সাপোর্টারকে প্রশ্ন করা হয় আপনি কোন ফুটবল টিম সাপোর্ট করেন? সে উত্তরে স্বাভাবিকভবেই কোন দলের নাম যেমন আর্জেন্টিনার কথা বলে।
কিন্তু খেলার মাঠে আর্জেন্টিনার পারর্ফেমন্স খারাপ হতে থাকলে তার সাপোর্ট জর্মানী বা ব্রাজীলের দিকে যায়। খেলার মানের পরিবর্তনের সাথে সাথে নিরপেক্ষ সাপোর্টারদের পছন্দেও দলও পরিবর্তন হয়ে যায়। আর এটিই নিরপে সাপোর্টারদের বিশেষত্ব। আর যে আর্জেন্টিনার সাপোর্টার (নিরপেক্ষ নয়) সে কিন্তু কিছুতেই দল পরিবর্তন করবে না। কোন কোন সাপোর্টার এতটাই কট্টর থাকে যে দলের খারাপ পারফর্মেন্স সহ্য করতে না পেরে সুইসাইড পর্যন্ত করে।
এরকম খবর একেবারে বিচিত্র নয়।
একইভাবে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার কথা বলা যায়। যেমন-আমাদের দেশের যে নিরপেক্ষ সাপোর্টার সে বি.এন.পির ভাল দিক যেমন দেখবে তেমনি এর খারাপ কর্মকান্ডের সমালেচনাতেও অংশ নেবে, স্বাধীনতার সময় আউয়ামি লীগ এর ভূমিকার যেমন ভূয়সী প্রসংশা করবে তেমনি বাকশালের মাধ্যমে গণতন্ত্রের গলা টিপেধরার অপচেষ্টার কুৎসা রটাবে, 71-এ জামাআতের কাজকে ঘৃণা করবে আবার পরবর্তীতে তাদের গঠনমূলক রাজনিতীকে স্বাগত জানাবে। যারা এসব রাজনৈতিক কোন না কোন দলের সাপোর্টার, যারা নিরপেক্ষ নয় তারা কিন্তু স্ব স্ব দলের ভুলগুলো জেনেও এড়িয়ে গিয়ে অন্যেও সমালোচনায় মুখর হয়ে যায়। এখানেও দেখা যাচ্ছে নিরপে সাপোর্টার একই দলের কখনও প েআবার কখনও বিপ েঅর্থাৎ পরিবর্তনশীল।
বর্ণ নিরপেতা, সংবাদপত্রের নিরপেতা ইত্যাদিকেও একইভাবে বিশ্লেষণ করা যায়।
এবার আসাযাক 2য় পক্ষের কাছে যারা নিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী নয়। এদের বক্তব্য নিরপেতা বলে কিছু নেই শুধুমাত্র পাগল ও শিশুরাই নিরপে হতে পারে। কেউবা কট্টর সাপোর্টার আবার কেউবা শুধুই সাপোর্টার (নিরপে সাপোর্টারদের এরা সাধারন সাপোর্টার মনে করে) যার পেছনে নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে এবং এই কারনের পরিবর্তন হলে তাদের সাপোর্টও পরিবর্তন হয়ে যায়।
যাহোক, মজার ব্যাপার হল নিরপেতার অস্তিত্যে বিশ্বাসী(1ম-পক্ষ) এবং অবিশ্বাসী (2য়-পক্ষ) উভয় দলই কিন্তুু একটা ব্যাপারে একমত।
আর তা হল মানুষের সাপোর্ট পরিবর্তনশীল।
পৃথিবীর অধিকাংশ ধারনার মাঝে কিছু ব্যাতিক্রম থাকে, ঠিক তেমনি নিরপেতার মত জটিল ও বিতর্কিত বিষয়ে ব্যাতিক্রম থাকা অস্বাভাবিক নয়। আর এই ব্যাতিক্রমটি হল ধর্ম নিরপেতায়। কেননা ধর্ম পরিবর্তনশীল নয়। সেই 1500 বছর আগের মুহম্মদের কোরআন আর আজকের কোরআন একই, যিশুর ধর্ম বা বুদ্ধের ধর্মের ক্ষেত্রেও একই কথা।
সাইন্সকেও Univerce বলা হয় না কিন্তুু ধর্ম Univerce . যেহেতু ধর্ম পরিবর্তনশীল নয় সেহেতু উভয় পই একে তাদের সূত্রে ফেলতে পারে না। তাই ধর্ম নিরপে নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।