যদি নির্বাসন দাও.................................................................. আমি ওষ্ঠে অঙ্গুরী ছোঁয়াবো আমি বিষ পান করে মরে যাবো! বিষণ্ন আলোয় এই বাংলাদেশ নদীর শিয়রে ঝুঁকে পড়া মেঘ, প্রান্তরে দিগন্ত নির্নিমেষ- এ আমারই সাড়ে তিন হাত তুমি।
একদিন গভীর রাত্রিতে স্বর্গ হইতে এক দেবদূত আমাদের এই "ধনধান্যে পুষ্পে ভরা " বসুন্ধরার সকল দেশের রাণী বাংলাদেশের দুর্দশা অবলোকন করিবার নিমিত্তে বন্দর নগরীর বুকে অবতরণ করিলেন । কিন্তু বিধি বাম ! দেবদূত যেই স্থানে ল্যান্ড করিলেন সেই স্থান ছিলো বস্তুত ঢাকনাবিহীন ম্যানহোল ! সীসাময় বিষাক্ত বাতাস হইতে রক্ষা পাইতে মুখে মাস্ক পড়িয়াছিলেন বলিয়া অন্ধকারে দৃষ্টিভ্রম ঘটিয়াছিলো। তাই আর শেষ রক্ষা হইলো না। দেবদূত ম্যানহোলের ভিতর ভাসিতে ভাসিতে অবশেষে কর্ণফুলির জেটিতে আসিয়া পড়িলেন ।
দেবদূত এক মাছের ট্রলারে উঠিবার চেষ্টা করিলেন । জেলেরা মুথোশ পরা দেবদূতকে চোর মনে করিয়া আচ্ছামতো উত্তম-মধ্যম দিয়া ছাড়িয়া দিল । দেবদূত ছিন্নবস্ত্ররক্তাক্ত শরীর লইয়া রাস্তায় আসিয়া দাড়াঁইলেন । তখন দেখা দিলো নতুন বিপত্তি । কোথা হইতে চকিতে দুই মহিলা আসিয়া তাহার দুই হাত ধরিয়া টানিতে লাগিলেন ।
তাহাদের টানাটানিতে দেবদূতের প্রাণ ওষ্ঠাগত হইবার জোগাড় হইলো । ইতিমধ্যে সৌভাগ্যক্রমে কোথা হইতে এক পুলিশ ভ্যানের আগমন ঘটিল । মহিলাদ্্বয় তড়িত দেবদূতকে ধাক্কা মারিয়া অশ্ললীল গালি পাড়িতে পাড়িতে মুহুর্তের মধ্যে উধাও হইয়া গেল । দেবদূত টলিতে টলিতে মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়িয়া গেলেন । এক পুলিশ কাছে আসিয়া দেবদূতকে মাতাল মনে করিয়া পাছায় কষিয়া এক লাথি ঝাড়িল ।
অতপর তাহাকে চ্যাংদোলা করিয়া হিন্দী ছবির স্টাইলে পিক আপের ভিতর ছুড়িয়া ফেলিল । দেবদূতের সমস্ত হাড়গোড় মড়মড় করিয়া উঠিল ।
আরো অনেক লাথি-গুঁতা, কিল-চাপপর মারিবার পর তাহাকে থানার ওসির সামনে হাজির করা হইলো । ওসি কিয়তক্ষণ নিরীক্ষণ করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন-
ঠিক করিয়া বল, তুই চোর না মাতাল?
দেবদূত কহিলেন, আমি দেবদূত ।
ওসি বিচক্ষণ হাসি দিয়া কহিলেন, আই সি! ব্যাটা তাহলে গুপ্তচর ! কার ? বুশ না লাদেনের ?
দেবদূত বোকার মতো কহিলেন, আমি কৃষ্ণের দূত ।
কৃষ্ণ ! মানে- লাল কৃষ্ণ আদভানি ? তা কার কাছে পাঠাইয়াছেন, সরকারী না বিরোধী দলের কাছে?
তিনি আমাকে সাধারণ মানুষের কাছে পাঠাইয়াছেন ।
মাই গুডনেস ! পাবলিক ডিলিংস ! ভেরি ডেঞ্জারাস ! এই সেন্ট্রি, ব্যাটাকে 14 নাম্বার সেলে ঢুকিয়ে দড়ি দিয়ে বাঁধ । আমি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফোন লাগাই ।
দেবদূতকে দড়ি দিয়া শক্ত করিয়া চৌকির সহিত বাঁধা হইলো । আপাদমস্তক দড়িবেষ্টিত হইয়া দেবদূত উদাস নেত্রে এমনভাবে ছাদের দিকে তাকাইয়া রহিলেন, যেন এখনি ছাদ ভেদ করিয়া স্বয়ং কৃষ্ণ দেথা দিবেন ।
কিন্তুদেবদূত তো আর দ্রৌপদী নহেন যে "কৃষ্ণ ডাকিবামাত্রহাজির হইতে বাধ্য থাকিবেন "। অধিকন্তুকৃষ্ণ তথন বৈকুনঠে প্রেমলীলায় মত্ত । তাই দেবদূত কৃষ্ণের দেখা পাইলেন না । ইত্যেবসরে ওসি সাহেব এক মস্ত বড় তেল চকচকে ডান্ডা লইয়া প্রবেশ করিলেন । সেই ডান্ডা দর্শনে দেবদূত জ্ঞান হারাইলেন, ওসির সাগরেদের হাতে কি ছিলো তা আর দেথিবার অবকাশ পাইলেন না ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।