আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাদকের হুমকি

মাদক আগ্রাসন সমগ্র জাতির জন্য মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধর্মীয় মূল্যবোধের কারণে এ দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা এখনো সীমিত। তবে এ সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই নিজেদের নিরাপদ ভাবার সুযোগ থাকবে না। দেশে ব্যবহৃত মাদকদ্রব্যের সিংহ ভাগই আসে বিদেশ থেকে সীমান্ত ডিঙিয়ে চোরাই পথে। ভারত ও মিয়ানমার থেকে আসা মাদক বাংলাদেশের জন্য সামাজিক সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মাদকের রাজ্যে এক সময় ছিল ফেনসিডিলের দাপট। সীমান্তের ওপারে ভারতের বিভিন্ন স্থানে ফেনসিডিলের কারখানাও গড়ে উঠেছিল। বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার পর ভারত অনেক কারখানা গুঁড়িয়ে দেয়। বিএসএফ এবং পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও মেঘালয় পুলিশের তৎপরতায় ফেনসিডিলের চোরাচালান উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে সে স্থান দখল করেছে গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবাসহ নানা মাদকদ্রব্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাংশের যোগসাজশে মাদকদ্রব্যের চোরাচালান হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। গত মাসে রাজধানীতে এক পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রী নিহত হন তাদেরই মাদকাসক্ত কন্যার হাতে। যারা মাদক পাচারে সহায়তা করেন, টাকার জন্য মাদক চোরাকারবারিদের সেবাদাসের ভূমিকা পালন করেন, তাদের জন্য এ ঘটনা শিক্ষণীয় হওয়া উচিত। আশির দশকে এ দেশে হেরোইনের আগ্রাসন ঘটে। এ দশকের শেষ দিকে ফেনসিডিল মাদক রাজ্যের পরিচালিকা-শক্তি হিসেবে আবিভর্ূত হয়। নব্বই দশকের শেষদিকে ইয়াবার আগমন ঘটে মাদকরাজ্যে। প্রথমদিকে এ আগ্রাসনকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এখন ইয়াবার থাবায় আক্রান্ত দেশের প্রায় প্রতিটি এলাকা। রাজধানীর অভিজাত তরুণ-তরুণীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ইয়াবায় আসক্ত। এ নেশার অর্থ জোগাতে তারা জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধে। ইয়াবাসক্তদের মানবিক চেতনা এমনভাবে লোপ পায় যে, তারা ভালো ও মন্দের পার্থক্য নিরূপণেও ব্যর্থ হয়। এ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছে রাজধানীর বিপুলসংখ্যক তরুণ-তরুণী। অভিজাত এলাকার ক্লাব, রেস্তোরাঁ, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান_ বিশেষ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মাদকের নেটওয়ার্ক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এ মাদক নেশায় তাৎক্ষণিকভাবে হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ ও শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এতে মস্তিষ্কের কিছু কোষের অপমৃত্যু ঘটে। ইয়াবাসক্তদের এভাবেই হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস ও কিডনি বিকলের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। এই মরণনেশা প্রতিরোধে সীমান্তে কড়াকড়ি প্রহরার ব্যবস্থা করা দরকার। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করে তাদের মধ্যে ভয় ঢোকাতে হবে। মাদকাসক্তদের সুচিকিৎসার মাধ্যমে ফিরিয়ে আনতে হবে এর থাবা থেকে_ আরও বিপর্যয়ের আগেই।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.