আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হেফাজতের অবরোধ কাজে লাগাতে কৌশলী ভূমিকায় বিএনপি

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব। হেফাজতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছে বিএনপি। হেফাজতের অবরোধ কাজে লাগাতে কৌশলী ভূমিকায় নেমেছে দলটি। এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের স্থায়ী কমিটির একজন প্রভাবশালী সদস্য। হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ পরবর্তী মহাসমাবেশ শেষে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা ঢাকায় অবস্থান না করায় অনেকটা আশাহত হয়েছিল বিএনপি।

তবে এবার হেফাজতের অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে অন্য কৌশল হাতে নিয়েছে দলটি। সে কারণেই দু’দফা তারিখ পরিবর্তন শেষে ৪ মে রাজধানীতে সমাবেশ করবে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। দলের পক্ষ থেকে সমাবেশ বলা হলেও একে মহাসমাবেশে রূপান্তর করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র। গত ৬ এপ্রিল ‘নাস্তিক’ ব্লগারদের শাস্তিসহ ১৩দফা দাবিতে লংমার্চ করে হেফাজতে ইসলাম। রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে লংমার্চ পরবর্তী মহাসমাবেশ থেকে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আগামী ৫ মে ঢাকা অবরোধ করবে হেফাজত। সে সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে সংহতি জানিয়েছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও সাদেক হোসেন খোকা। এছাড়া রাজধানীতে ২২টি পয়েন্টে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে আগতদের জন্য খাদ্য সরবারহ করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবাও দেয়া হয়েছিল। বিএনপির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ৪ মের সমাবেশের জন্য এবার শুধু ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো থেকেই নয়, অন্যান্য জেলা থেকেও নেতাকর্মীদের রাজধানীতে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি জোটের সমাবেশ শেষে ৫ মে হেফাজতের কর্মসূচির জন্য নেতাকর্মীদের একাংশকে ঢাকায় রাখারও পরিকল্পনা করেছে দলটি।

এদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল ও নেতার্মীদের মুক্তি, মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে প্রথমে ১০ এপ্রিল ঢাকায় বড় ধরনের একটি সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দল। পরে তা পিছিয়ে ২৯ এপ্রিল নেয়া হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমে জানানো হয়নি। সবশেষ গত শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটি ও ১৮ দলের বৈঠকে ৪ মে ঢাকায় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচির সঙ্গে মিল রেখেই এই সমাবেশ পেছানো হয়েছে। অন্যদিকে হেফাজতে ইসলামের ৫ মের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে বিএনপি ও ১৮ দলের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ রাখতে কিছুটা কৌশলের আশ্রয় নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

৪ মে খালেদা জিয়ার সমাবেশকে কেন্দ্র করে আগের মতো সরকারের পক্ষ থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হতে পারে এই আশঙ্কায় দলের পক্ষ থেকে দু’একদিন আগে ঢাকার আশপাশের জেলার নেতাকর্মীদের রাজধানীতে আসার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর গাড়ি বন্ধ করে দেয়া হলেও যাতে পায়ে হেঁটে সমাবেশে অংশ নেয়া যায় অনেককে এমন দূরত্বে অবস্থানের জন্যও বলা হয়েছে। সমাবেশ শেষে অনেককে ঢাকায় অবস্থানের জন্যও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে সূত্রটি জানায়। এদিকে হেফাজতের লংমার্চকে ঘিরে বিএনপির চেয়েও বেশি আগ্রহ ছিল জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের। তাদের ধারণা ছিল, হেফাজতের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ঢাকায় অবস্থান করলে একে কেন্দ্র করে সরকারকে বড় ধরনের চাপে রাখা যাবে।

কিন্তু সেবার তা আর সম্ভব হয়নি। তাই এবারের কর্মসূচিকে কাজে লাগাতে জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে বলে দলের একজন শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, “বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। আর হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনও অনেকটা সরকারের বিরুদ্ধে। খুব প্রকাশ্যে না হলেও হেফাজতের সঙ্গে আমাদের এক ধরনের যোগাযোগ আছে।

বিএনপি ও হেফাজতের কর্মসূচি পাশাপাশি। এর বেশি আর কী বলব। ”তবে আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য হেফাজতের সঙ্গে যোগাযোগের কথা অস্বীকার করে বলেন, “বিএনপি ও ১৮ দলের কর্মসূচি আর হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি ভিন্ন। তবে হেফাজতের কয়েকটি দাবি আমরা সমর্থন করি, আর সে কারণেই তাদের কর্মসূচিতে আমরা সংহতি জানিয়েছি, যা আগামী দিনে অব্যাহত থাকবে। ”এদিকে ৪ মের সমাবেশ উপলক্ষে গত সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বগুড়ার বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন নেতার সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, সমাবেশ সফল করতে সবাইকে ‘সর্বশক্তি প্রয়োগের’ জন্য বলা হয়েছে। একই দিন বিকেলে ঢাকা মহানগরের প্রস্তুতি সভায় বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, “৪ মের সমাবেশ সফল করার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে বিএনপির শক্তি দেখিয়ে দিতে হবে। ” ৪ মের সমাবেশের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “সমাবেশ সফল করতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি চলছে। আশা করি দলের চেয়ারপারসনের এ সমাবেশে ঢাকা মহানগর ছাড়াও আশপাশের জেলাগুলো থেকে নেতাকর্মীরা উপস্থিত হবে।

" সূত্র ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.