এটা আমার রাজত্ব
১৩ সংখ্যাটা অপয়া জানা থাকলেও বিরিশিরি ট্যুরে ১৩ বন্ধু গিয়ে যে আনন্দ করেছিলাম তাতে ১৩ এর অপবাদ টা মন থেকে দূর করে দিয়েছিলাম। সিলেট ট্যুরে অবশিষ্ট যে সন্দেহ মনে ছিল তাও চলে গেল।
কিছুদিন আগে ১৩ জন বন্ধু মিলে ঘুরতে গিয়েছিলাম সিলেট। অলি আওলিয়ার পুন্যভুমি সিলেট। অসাধারন সুন্দর এলাকা।
ভ্রমনের পরিকল্পনা এসেছিল ফরহাদের মাথা থেকে। কষ্টও করেছে বন্ধুটা আমার। মাইক্রবাস ঠিক করতে প্রায় ৫ ঘন্টা ঢাকার এই মাথা থেকে ওই মাথায় ছুটে বেড়িয়েছিল ও। তাও আমাদের ভ্রমনের দিনের আগের রাতে।
আমাদের বাসা দোলাইরপাড়ে।
সকাল ৭ টায় এখানে আসলো গাড়িটা। অনি আমার বাসায় আগে থেকে ছিল। আমি, অনি, ফরহাদ, রুমেল, বোরহান, মনির, সুমন, আকাশ আর টেকি শাকিল উঠলাম এখান থেকে। মিতুল, নুরু আর অনিক কে মতিঝিল এর আশপাশ থেকে রিসিভ করলাম। বাকি ছিল কবি শাকিল।
তাকে নিতে চলে গেলাম তার উত্তরার বাসায়। ভ্রমনের শুরুটা মুলত এখান থেকেই।
বৃষ্টি আমাদের পিছু নিয়েছিল যে মুহূর্তে আমরা টিকাটুলি অতিক্রম করি সেখান থেকেই। পুরো রাস্তায় এই লুকোচুরী খেলা অব্যাহত ছিল।
গাড়িতে ওঠার পর থেকে পুরো আওয়াজে গান চলছিল আর আমরা তাতে সুর মেলাচ্ছিলাম।
আকাশের শরীরে ভাইব্রেটর ছিল হয়তো। কারন আমরা গানের সুরে সুর মেলালেও সে হা-পা ছুড়ে পাশের জনকে ভোগান্তি মেলাচ্ছিল! হায়াস গাড়ি, ১৩ সিট। ড্রাইভারের পাশে একটা বিপদকালীন সিট থাকলেও কোন এক অজানা কারনে তিনি আমাদের ওই সিট ব্যবহার করতে দেননি যাবার সময়। গানের পাশাপাশি সবার ক্লোজ বান্ধবীর নামের সাথে তার নাম জড়িয়ে স্লোগান দেবার যে মারাত্নক খেলা বিরিশিরি ট্যুরে আমি সৃষ্টি করেছিলাম, তাও চলছিল। ভাগ্য ভাল একবারও আমাকে বেশি আগুনে পুড়তে হয়নি।
নরসিংদি গিয়ে আমরা এক রেস্তোরায় নাস্তা করলাম সকালে। যদিও তার আগেই ক্ষুধায় আমাদের দলের বেশ কয়েকজনের পেটের শর্ট সার্কিট হয়ে গিয়েছিল।
সেখান থেকে যাত্রা শুরু হল আবার। আমরা গাড়িতে উঠলাম আর শুরু হল বৃষ্টি। আর খেতে নামার ২ মিনিট আগে সেখানে বৃষ্টি থেমেছিল।
গাড়ী বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে উড়াল দিয়ে চলছিল। একসময় আমরা পৌঁছলাম মৌলভীবাজার। মাঝে রাস্তা আর দুইপাশে হাওরের পানি। মাথার উপরে মেঘ। পাশে আরেকটা মাইক্রবাস।
তাতে কিছু সুন্দরী ললনা। কয়েকজন যুবকের কাছে এর চেয়ে ভাল আর কি পরিবেশ হতে পারে?
সবাই হাঁসের বাচ্চার মত নামল গাড়ী থেকে। শুরু হল ক্যামেরায় নিজের খোমা তোলার প্রতিযোগিতা। একটু পড়ে রমনীরা চলে গেলে আমরাও ফিরলাম আমাদের বাহনে। চড়ে বসার পর বাহন চালু করা মাত্র আবার ঝাঁপিয়ে বৃষ্টি।
বৃষ্টির মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলতে লাগলো আমাদের গাড়ী। বৃষ্টির ঝাপ্টা কমতে কমতে আমরা চলে এসেছি চাবাগানের কাছা কাছি। পথের দু পাশে শুধু চা বাগানের ছড়া ছড়ি। মনে হচ্ছিল সবুজের মাঝে হারিয়ে যাচ্ছি আমরা। একসময় পৌঁছলাম লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান।
ব্রিশটিতে ভেজা মাটির রাস্তা, গাছএর পাটা থেকে চুইয়ে পড়া বৃষ্টির ফোটা। অসাধারন এক অনুভুতি ছিল। হাঁটতে হাঁটতে অনেক ভেতরে চলে গেলাম।
রেললাইনে দাঁড়িয়ে ফটো শুট টাও মারাত্নক হয়েছিল।
ম্যানেজার হিসাবে আমার দায়িত্ব ছিল সবাইকে ম্যানেজ করে কয়েক জায়গায় ঘোরান তাও অতি স্বল্প সময়ে।
যদিও এর আগে সিলেট যাইনি কখনও তবুও নিজের দেখার স্বাদ উপেক্ষা করে সময়ের কাছে নিজের ইচ্ছেকে দমিয়ে ২ ঘন্টা সেখানে ঘুরে সবাইকে নিয়ে আবার যাত্রা শুরু করলাম মাধবকুন্ডের দিকে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।