আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তিন দিনের অবরোধ, পাঁচ দিনের হরতাল তারপর অসহ&#

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আরও কঠোর আন্দোলন কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিএনপি। চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এ থেকে আর এক পাও পিছু হটতে রাজি নন। তিনি গত মঙ্গলবার দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের বৈঠক শেষে কয়েকজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে আলাপকালে এ মনোভাব ব্যক্ত করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। আগামী সপ্তাহে সারা দেশে তিন দিনের সড়ক, নৌ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে। ১০ নভেম্বর থেকে টানা পাঁচ দিনের হরতালের পরিকল্পনা রয়েছে। তাতেও কাজ না হলে তার পরের সপ্তাহ থেকে লাগাতার হরতাল দেওয়া হতে পারে। সরকার এরপরও দাবি না মানলে অসহযোগ ঘোষণা করা হবে। বিরোধীদলীয় নেতা এসব কর্মসূচি সফল করতে প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। খালেদা জিয়া গত ২৭, ২৮ ও ২৯ নভেম্বর তিন দিনের হরতালে দলের নেতাদের পারফরমেন্স পর্যালোচনা করেছেন। তিনি এতে ঢাকা মহানগরীর নেতাদের ওপর ভীষণ ক্ষুব্ধ। মামলা আর পুলিশের গুলির ভয়ে নগরীর শীর্ষস্থানীয় নেতাদের অধিকাংশই আত্দগোপনে থাকায় বিকল্প পথও বেছে নিয়েছেন খালেদা জিয়া। সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসন মহানগরীকে চার ভাগ করে চারজন সিনিয়র নেতার নেতৃত্বে সংগ্রাম কমিটি গঠন করেছেন। এর মধ্যে তিনজন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য। আর একজন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান। এরা হলেন মির্জা আব্বাস, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ও সাদেক হোসেন খোকা। তবে এসব কমিটি থেকে বেশিরভাগ ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এমনকি অর্থ-সম্পদ যাদের বেশি, তাদেরও রাখা হয়নি। বরং দীর্ঘদিন ধরে যারা বঞ্চিত ও অবহেলিত সে ধরনের সহস্রাধিক তৃণমূল নেতাকে সংগ্রাম কমিটিতে যুক্ত করা হয়েছে। সূত্রমতে, ভবিষ্যতে এদের মূল্যায়নের বিষয়টি বেগম খালেদা জিয়া নিজেই তদারকি করবেন। অবশ্য এ জন্য দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে থাকা মধ্যস্বত্বভোগী ধরনের কিছু নেতা ভেতরে ভেতরে কিছুটা নাখোশ। তারা আন্দোলনের চেয়ে সরকারের সঙ্গে আপসকামিতার উপরে বেশি জোর দিচ্ছেন। কিন্তু শক্ত অবস্থান নিয়েছেন খালেদা জিয়া। কোনো শর্ত ছাড়াই গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর নৈশভোজে যাওয়ার জন্য গত মঙ্গলবার শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা তাকে পরামর্শ দেন। কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রী নব্বইয়ের আন্দোলনের মতো এবারও কঠোর মনোভাব গ্রহণ করেছেন। তিনি পরিষ্কার ভাষায় একাধিক সিনিয়র নেতাকে বলেছেন, জনগণের ওপর কোনো শক্তি নেই। সেই জনগণই এই সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে। এখন শুধু প্রয়োজন তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সঠিক নেতৃত্ব দেওয়া। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বেগম জিয়া প্রশ্ন রেখে বলেছেন, সারা দেশে যেখানে দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও রাস্তায় নেমে পড়েছে এবং নিজেদের জীবন পর্যন্ত বিলিয়ে দিচ্ছে, সেখানে আন্দোলনের মূল জায়গা ঢাকা নীরব কেন? গত পাঁচ বছরের আন্দোলন আর এবারের আন্দোলন এক জিনিস নয়। এটি হলো মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠাসহ গণতন্ত্র রক্ষার চূড়ান্ত আন্দোলন। এখন আর 'খেলাধুলা করার' কোনো সুযোগ নেই। সামনের প্রতিটি কর্মসূচি তিনি নিজে মনিটর করে দায়িত্বে থাকা নেতাদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবেন। বিশেষ করে জনগণকে মাঠে নামতে উসকে দিয়ে নিজেরাই হাওয়া হয়ে যাওয়ার ঘটনার কথা তিনি উল্লেখ করেন। এসব নেতা এখন খালেদা জিয়ার 'ক্লোজ মনিটরিংয়ে' আছেন। আগামী এক মাসের মধ্যে ওভারকাম করতে না পারলে তারা দল থেকে ছিটকে পড়বেন বলেও তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন গতরাতে গুলশান কার্যালয়ে ১৮ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এতে আগামী ৪, ৫ ও ৬ নভেম্বর সারা দেশে সর্বাত্দক অবরোধ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া চলমান আন্দোলন প্রতিটি দলের অবস্থান থেকে আরও কীভাবে বেগবান করা যায়, সে ব্যাপারেও তিনি দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.