দুষিছে সবাই, আমি তবু গাই শুধু প্রভাতের ভৈরবী! মানুষের কপটতা, ভন্ডামী দেখে ইদানিং কিছুটা বিরক্ত, ভাবলাম যায় পশুপাখির সানিধ্যে কেটে আসি কিছুক্ষন। লোকে যায় সুন্দরবন আমি গেলাম রাজশাহী চিড়িয়াখানায়, সাথে অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্লাস টেন পড়ুয়া পরশ মিয়া।
প্রথমেই দেখি মেইন গেট বন্ধ, ভিতরে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ চলছে, পাশের গেটি দিয়ে ঢুকা হল। প্রথমেই চোখে পড়ল উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য পার্কের ছ্যাড়াব্যাড়া অবস্থা, তবে কিছু জায়গা আসলেই সুন্দর করেছে আর কিছু জায়গা হয়ত সুন্দর হবে।
যাই হোক এস ইউজুয়াল প্রথমে বান্দরের খাঁচা।
ওরে খাইছে সব গুলান দেখছি সেই সেয়ানা, আগেই খাচার ফাক দিয়ে হাত পেতে আছে সুন্দর ভাবে, জানে এই মনুষ্যজাতি তাদের বাদাম খাওয়াতে ব্যস্ত। লোকেই খাওয়াচ্ছে সমান তালে। যাই হোক ভাবলাম কিসের কি , মামা আই মিন বাঘের সাথে দেখা করমু।
খাইছে আমারে, বাঘের খাঁচা গায়েব সেখানে আছে পায়রার খাঁচা। বাঘ হিংস্রতার প্রতীক আর পায়রা শান্তির মডেল এই জন্য এই সিদ্ধান্ত কিনা তা আর ঠাউর করতে পারলাম নাহ।
যাই হোক শুনলাম গোটা চিড়িয়াখানায় বাঘ গায়েব। একজন রে বলতে শুনলাম, “আরে বাঘ তো সুন্দরবনে আছে, ঐ খানে দেখতে যান এইখানে রেখে জায়গা নষ্ট করে কি লাভ” । নিঃসন্দেহে খাঁটি কথা
ফট করে মনে পড়ল আরে মহারাজার সাথেই তো দেখা হল নাহ, যেয়ে দেখি সিংহ মামার জন্য আলাদা খাঁচা , মামীর জন্য আলাদা খাঁচা, ভালুকদার জন্য আলাদা নতুন খাঁচা।
ভালুকদা জিগালাম দাদা খেয়ে এসেছেন নাহ যেয়ে খাবেন, হটাত শোয়া অবস্থায় বলে উঠল যাতো বাজে বকিস নাহ, তোদের রাজশাহীতে বেজায় শীত। বলে উল্টো দিকে শুয়ে কু কু করতে থাকল।
সিংহী কে দেখলাম চুপ চাপ বসে আছে, কি মনে করে গর্জন শুরু করল, এইখানে বলে রাখি জীবনে প্রথম শুনলাম এই গর্জন, তা শুনে সিংহ চেচালো । আমি ভাবলাম আমাকে দেখে নাকি, পাশ থেকে অ্যাসিস্ট্যান্ট বলল নাহ কাক ওর মাংস খাচ্ছে দেখে।
যাই হোক মহারাজ কে জিগালাম একা পেয়ে
-হুজুর কি অবস্থা
-আবার জিগস, দেখছোই তো কি হাল আমার। একা আসছো নাকি?
- আপনি যেই সেন্সে জিগাইছেন সেই সেন্সে একাই আসছি, ভাগ্যের শিকা এখনো ছিড়ে যায় নি। তা আপনাকে আর মামীরে আলাদা রাখার কারন?
-আহ বয়স হইছে এক সাথে থাকলেই সাংসারিক গন্ডোগোল লাগে, তা তুমি কে হে বাপু?
-ও আমি অমিত, লোকাল ছোকরা, আপনাকে ভারত থেকে যেদিন আনল পরেরদিন দেখতে আসলাম নাহ
-ও তা ভারত বলে তোমাদের বর্ডারে গুলি মারে তো তোমরা জবাব দিতে পারো নাহ?
- মহারাজ আজকে যায় আরেকদিন আসব
বাপরে এরাও খবর রাখে।
মেয়র মহোদয়ের সাথে দেখা
রাস্তায় হাটতে দেখলাম আমাদের মেয়র সাহেব ও এসেছেন ,যাই হোক সালামা দিলাম, জবাবে সালামের উত্তর দিয়ে বললেন ভাল আছেন? আহ মেয়র জিজ্ঞেস করলেন কেমন আছি, তাতেই আমার ১০ টাকার টিকিট উসুল!
ঘড়িয়াল>গরিলা>শুশুক
অনেকখোঁজার পর পেলাম এই ঘড়িয়াল কে। আমাদের বাংলাদেশে এই একটাই বলে মিঠা পানির ঘড়িয়াল আছে। বেশ কিছুক্ষন তাকিয়া থাকলাম এই বিলুপ্ত জীবটার দিকে। পাশে এসে একজন বলল এইটা কিরে, সাথে আরেকজন মহিলা বলল আরে এইটা কে কয় গরিলা!!!
এর পরের এক কাপল আসল। এসে মেয়েটা বলল আরে এইটা কি কুমির?? ছেলেটা বলল নাহ কুমির হবে ক্যান শুশুক মনে হয়।
এইখানে বেশিক্ষন থাকলে হয়ত পুকুরে ঝাপ মারতে হবে তার চেয়ে কেটে পরি।
এবং কাপল কাহিনীঃ
রাজশাহীর চিড়িয়াখানার চিরায়ত দৃশ্য, তাও ভাল অপ্রীতিকর কিছু চোখে পড়ল নাহ। খালি দেখলাম পুরোনো গরুর খাচাটা খুলে দেওয়া হয়েছে ঐ খানে দুজন গায়ের সাথে গা ঠেকিয়ে “ল্যাপি” তে কি যেন দেখছে? ল্যাপটপ ইউজ করার চিড়িয়াখানাতে আসার কি যৌক্তিকতা তা বুঝলাম নাহ, প্রানীবিদ নাকি, ইনফোর সাথে মিলিয়ে দেখছে?
আরেকটা ব্যাপার, ৪ জনের বিশাল বেঞ্চ গুলাতে দুজন দুজন করে এমন ভাবে বসছে যে কেউ এসে বসতে পারবে নাহ, বসতে চেষ্টা করলে নির্ঘাত ছোটলোক কথাটা শুনতে হবে।
যাইহোক শেষ পর্যন্ত বের হয় আসলাম। ভাবলাম কপটতা মুক্ত সময় কাটাবো, পশুপাখির সাথে তো এইখানে কপটতা হয় আরো বেশি!
পুরোনো পোষ্টঃ
লাস্ট ম্যাচে পাকিস্তান ক্রিকেট টিমঃ কেন পরাজিত?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।