বরিশাল নৌবন্দরের পন্টুনে বাঁধা ঢাকাগামী যাত্রীবাহী এমভি টিপু-৭ লঞ্চে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। গতকাল সন্ধ্যায় এ হামলা চালায় মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন একদল দুর্বৃত্ত। এ সময় নৌবন্দরের পন্টুনে থাকা পুলিশের সাহায্য চাওয়া হলেও তারা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নিবৃত্ত করতে কোনো ভূমিকাই রাখেনি বলে অভিযোগ করেছেন টিপু লঞ্চের মালিক কেন্দ্রীয় লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি। ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা লঞ্চের প্রতিটি তলার কেবিন ও ডেক থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে লঞ্চের কেরানি মাহবুবকে বেদম মারধর করা ছাড়াও ক্যাশ থেকে সব টাকা নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন টিপু।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তিন দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল বিকাল থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বরিশাল নৌবন্দরের পন্টুনে থাকা ৭টি লঞ্চ এমভি টিপু-৭, সুরভী-৭ ও ৮, সুন্দরবন-৭, কালাম খান-১, কীর্তনখোলা-২ এবং পারাবত-১১ লঞ্চে যাত্রী উঠানো হয়। টানা তিন দিন বন্ধ থাকার পর লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ার খবরে সন্ধ্যার মধ্যে সব লঞ্চের কেবিন এবং ডেক যাত্রীতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি জানান, এই রুটে চলাচল করা সব লঞ্চের চেয়ে তার মালিকানাধীন এমভি টিপু-৭ দ্রুতগতির। এ কারণে সন্ধ্যার আগেই তার লঞ্চ যাত্রীতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। সন্ধ্যায় মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত নৌবন্দরের পন্টুনে গিয়ে টিপু-৭ লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে যাবে না বলে হুমকি দেয়। এ সময় পন্টুনে দাঁড়িয়ে জসিম লঞ্চের কেরানি মাহবুবকে ডেকে পাঠান। কিন্তু মাহবুব ক্যাশ কাউন্টার ফেলে যেতে না চাইলে তারা বেদম মারধর করে ক্যাশে থাকা টাকা নিয়ে যায়। পরে তারা লঞ্চের বিভিন্ন তলায় উঠে কেবিন এবং ডেক যাত্রীদের নামিয়ে দেয় এবং লঞ্চের বিভিন্ন দড়জা-জানালায় লাথি দেয়।
ঘটনার বেশ কিছুক্ষণ পর র্যাবের একটি দল সেখানে গিয়ে নামিয়ে দেওয়া যাত্রীদের আবার লঞ্চে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
লঞ্চ মালিক টিপু এমপির দাবি যাত্রী নামিয়ে দেওয়ার সময় তিনি একাধিকবার পুলিশ কমিশনারকে ফোন করে বিষয়টি জানালেও তিনি প্রত্যেকবারই বলেছেন, দেখছি। কিন্তু পুলিশ কমিশনার কোনো ব্যবস্থাই নেননি বলে দাবি তার। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশে তার লঞ্চে হামলা চালানো হয়েছে এবং এভাবে চলতে থাকলে তিনি বরিশাল-৩ আসনের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, তিনি টিপু লঞ্চই চেনেন না। গতকাল রাতে বক্তব্য নেওয়ার সময় তিনি খুলনায় অবস্থান করছিলেন বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে পুলিশ কমিশনারকে তিনবার এবং উপ-কমিশনারকে (দক্ষিণ) দুবার মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও তারা কেউই ফোন ধরেননি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।