অদ্ভুত পৃথিবী
ব্রহ্মপুত্র নদী বা ব্রহ্মপুত্র নদ এশিয়া মহাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। সংস্কৃত ভাষায় ব্রহ্মপুত্রের অর্থ হচ্ছে "ব্রহ্মার পুত্র। ব্রহ্মপুত্রের উৎপত্তি হিমালয় পর্বতমালার কৈলাস শৃঙ্গের নিকট জিমা ইয়ংজং হিমবাহে,যা তিব্বতের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। সাং পো নামে তিব্বতে পুর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে এটি অরুণাচল প্রদেশে ভারতে প্রবেশ করে যখন এর নাম হয়ে যায় সিয়ং। তারপর আসামের উপর দিয়ে দিহং নামে বয়ে যাবার সময় এতে দিবং এবং লোহিত নামে আরো দুটি বড় নদী যোগ দেয় এবং তখন সমতলে এসে চওড়া হয়ে এর নাম হয় ব্রহ্মপুত্র।
তারপর এটি জামালপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মেশে। উৎপত্তিস্থল থেকে এর দৈর্ঘ্য ২৯০০ কিলোমিটার। ব্রহ্মপুত্রের প্রধান শাখা হচ্ছে যমুনা। এই নদী ৬৮০০০০ কিউসেক পানি সরবরাহ কর অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে ৬৮০০০০ ঘনফিট পানি সরবরাহ কর আমাদের বাংলাদেশে। এই পানি আমাদের অর্থনিতিকে করেছে শক্তিশালী, সস্তা করেছে পন্য উৎপাদন আর কৃষি কে করেছে সমৃদ্ধ।
কিন্তু আমাদের প্রতিবেশী দুই দেশ এই পানি ভাগাভাগী নিয়ে নেমেছে নতুন খেলায় ,চীন বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তৈরি করছে নতুন নতুন বাধ আবার এদিকে ভারত এই নদীর পানি তাদের মুল্ভুখন্ডে নিয়েযেতে শুরু করেছে মহাপরিকল্পনা। ভারত এই নদীর ৬৫ ভাগ পানি তাদের দক্ষিন-পূর্ব দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ৪৪টি নতুন ক্যানেল তৈরি করেছে। এই ক্যনেলগুলো আসাম থেকে বাংলাদেশের উত্তর সীমান্ত দিয়ে পানি বয়ে নিয়ে যাবে গঙ্গায় আর তার পর সেই পানিকে নিয়ে যাওয়া হবে মাহানদীতে এর পর এই পানি সরবরাহ করাহবে দক্ষিন ভারতের গোদাঊরিতে তার পর নিয়ে যাওয়া হবে চিদঙ্গে। সুতরাং বাংলাদেশ এই পানি পাবে মাত্র ২৩৮০০০ কিউসেক। খরা মৌসুমে এই পানি পাওয়ার সম্ভবনা কমে যাবে তাতে বাংলাদেশে বন্যাতো হবেইনা বর্ষা মৌসুমে খরা দেখা দিবে।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি ব্যাবস্থাপনার শিক্ষক ভিজা পরনজপি বলেন এতে বাংলাদেশের ৩ ভাগের দুই ভাগ এলাকা মরুভুমিতে পরিণত হবে। আমাদের পানি নিয়ে ভারতের এত চক্রান্ত কেন? কারন আমাদের দেশের মানূষের গড়ে প্রতিবছর পানি প্রাপ্যতা ৭৬৬৯ ঘন মিটার আর ভারতের মানুষের প্রাপ্যাতা ১৬১৮ ঘন মিটার। আমাদের দেশের মানুষ গড়ে প্রাতিবছর পানি ব্যাবহার করে ২২৪ ঘন লিটার আর ভারতের মানুষ প্রতিবছর পানিব্যাবহার করে ৬৪৪ ঘনলিটার। কোন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য চাই পানি কারন পানি ছাড়া আমাদের দেশের বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলো অচল হয়ে পরবে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। কোন পন্য উৎপাদনে কি পরিমান পানি লাগে তার একটু ধারনা নেওয়া যাক ১ টন ষ্টীল উৎপাদনে লাগে ২৩১৬২০ লিটার পানি , একটি গাড়ি তৈরিতে লাগে ১৪৪৬৩৩ লিটার পানি, ১ কেজি আলূ উৎপাদনে লাগে ১০০০ লিটার পানি, একটি সুতির সার্ট তৈরিতে লাগে ২৭০০ লিটার পানি ।
অতএব বুঝাযায় শুধুমাত্র আমাদের কৃষি উৎপাদনের জন্য কি পরিমান পানি লাগে । ২লাখ ৩৮ হাজার কিউসেক পানি কি আমাদের দেশের ১৬ কোটি জনতার কৃষি উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট ? অথচ আমার দেশের প্রধানমন্ত্রী বলে “বাংলাদেশের ক্ষতি হয় এমন কিছু ভারত করবে না” । ক্ষতি করার আর আছে কি? যা করার তাতো একের পর এক ভারত করেই চলছে তারপরেও কি ভাবে বলে ক্ষতি করবে না ভারত ? । যদি পানিই না থাকে তবে কি ভাবে আমরা শিল্পউৎপাদন করব? কি ভাবে হবে কৃষিকাজ? কিভাবে চলবে আমাদের অভ্যন্তরীন নৌযোগাযোগ ব্যাবস্থা। সুতরাং সৌচ্চার হন প্রতিবাদ করুন নিজের অধিকার বুঝেনিতে, ভবিষ্যৎ আপনার দিকে তাকিয়ে আছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।