লাগাতার হরতাল দেশের আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে ধস নামিয়েছে। বন্দরগুলোতে আটকা পড়েছে লাখ লাখ টন পণ্যবাহী কনটেইনার। সময়মতো পণ্য জাহাজিকরণ এবং খালাস না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে। হরতালজনিত প্রতিবন্ধকতায় সবচেয়ে অসহায় অবস্থায় পড়েছেন পচনশীল পণ্যের আমদানিকারকরা। স্থল ও সামুদ্রিক বন্দরের ওপর যেসব শ্রমিকের জীবন-জীবিকা নির্ভরশীল, তারা উপার্জনহীন অবস্থার শিকার হচ্ছেন। সরকারের শত শত কোটি টাকার রাজস্ব আদায় অনিশ্চিত হয়ে ওঠায় এক্ষেত্রের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে কিনা সন্দেহ দেখা দিয়েছে। হরতালে পণ্য পরিবহন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় শুধু চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ২৭ হাজার কনটেইনার আটকা পড়েছে। এ বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা তিন হাজার কোটি টাকারও বেশি ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। হিমায়িত খাদ্য বা চিংড়ি রপ্তানি হয় মূলত মংলা বন্দর থেকে। হরতালে পণ্য পরিবহন বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ায় হিমাগারগুলোতে ৩০০ কোটি টাকার চিংড়ি আটকা পড়েছে। বেনাপোল স্থলবন্দরেও সৃষ্টি হয়েছে বিপর্যস্ত অবস্থা। আমদানি-রপ্তানি দুই বাণিজ্যেও দেখা দিয়েছে অশনি সংকেত। লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে ভারত ও ভুটান থেকে আসা ফলমূলে পচন ধরেছে। ভারত থেকে পণ্যবাহী ট্রাক স্থলবন্দরে প্রবেশ করলেও হরতালের কারণে তা স্থলবন্দর ছেড়ে কোনো গন্তব্যস্থলে পেঁৗছতে পারছে না। কোটি কোটি টাকার পণ্য পচে নষ্ট হওয়ায় ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। ব্যবসা-বাণিজ্য তথা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে দেশের আপামর মানুষের স্বার্থ জড়িত। অর্থনীতি মার খেলে সব কিছুতেই তার অপপ্রভাব পড়ে। সমঝোতার অভাবে রাজনৈতিক হানাহানি যেভাবে দানা বেঁধে উঠছে এবং দেশের অর্থনীতিকে গলা টিপে ধরার বিপদ সৃষ্টি করছে সে ব্যাপারে সতর্ক না হলে বিপর্যয় এড়ানো সত্যিকার অর্থে কঠিন হয়ে পড়বে। আমরা মনে করি দেশের স্বার্থে সরকার ও বিরোধী দলকে সংঘাতের বদলে সমঝোতার পথে এগুতে হবে। তাদের ভুলে ১৬ কোটি মানুষের এই জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা কাম্য হওয়া উচিত নয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।