আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গণভোট এবং আইন করে হরতাল নিষিদ্ধ করা হোক

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় হরতালকে গণতান্ত্রিক অধিকার হিসেবেই মানা হয়, এই উক্তিটির চর্চা আমরা সব সময়ই করে থাকি। দাবি দাওয়া-আলোচনা ও সমঝোতার মধ্য দিয়ে আদায় না হলে সর্বশেষ পন্থা হিসেবে চূড়ান্ত পর্যায়ে এই পন্থাটিকে ব্যবহার করা হয় প্রতিপক্ষকে বাধ্য করার জন্যে। স্ট্রাইক বা বিভিন্ন নামে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এই পন্থাটি আজও প্রচলিত। তবে তা সভ্য সমাজে শান্তিপূর্ণ ও অহিংস উপায়ে পালন করাই একটি স্বীকৃত সভ্য পন্থা।

এই সভ্য পন্থা হিসেবেই পশ্চিম পাকিস্তানের নিপীড়ক শাসক-শোষক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা পূর্বকালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিক দলের আহ্বানে অসংখ্য হরতাল পালন করেছে। যা ছিল অহিংস এবং শাস্তিপূর্ণ। এর ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক। এতে সাড়া দিয়ে পূর্ব বাংলার গোটা জনগোষ্ঠী স্বতঃস্ফূর্তভাবে ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে পালন করে অহিংস হরতাল। তখন মানুষের কল্পনায়ও ছিল না প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোন সহিংসতার কথা।

দুর্ভাগ্য হলো পরাধীন দেশে বিজাতীয় শত্রুর বিরুদ্ধে আমরা যা করিনি তা আজ ঘটেছে স্বাধীন বাংলাদেশে। তা আবার নিজ দেশের জনগোষ্ঠীর মধ্যেই! ৭১’র পরাজিত শক্তির দানবরূপে আবির্ভূত হওয়ার পর পাল্টে দিয়েছে হরতালের সংজ্ঞা। হরতাল মানেই দানবীয় তা-ব, অগ্নিসংযোগ, বীভৎস হত্যা-খুন, নির্বিচার ধ্বংসযজ্ঞ ও ব্যভিচারী নৈরাজ্য সৃষ্টি। করে আতঙ্কের তৈরি করে মানুষের চেতনা শক্তিকে বিপর্যস্ত করা। হরতালের নামে এখন যা ঘটছে তা যেন মানব সভ্যতার ইতিহাসের নিষ্ঠুর ঘটনাকেও অতিক্রম করে যাচ্ছে।

সেই আতঙ্কে নিরুপায়ভাবে ঘরবন্দী হয়ে বসে থাকা মানুষের অসহায়ত্বকেই রাজনৈতিক দলগুলো বলছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জনগণ হরতাল পালন করেছে। মহাজোট সরকারের আমলে বিএনপি ও জামায়াতের ডাকে সংঘটিত হরতালের চিত্র দেখলে বর্বরতার যে চিত্র দেখা যায়, কোন সভ্য দেশে এর নজির নেই। হরতালকারীরা বর্বরতার চরম মাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে। তাদের শিকার হতে হয়েছে কিশোর মুনিরকে। গান পাউডার দিয়ে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে তার বাবার সামনে।

কোন মানব সন্তান কি এমন পৈশাচিক কাজ করতে পারে? অথচ এসব পশুরাই একের পর এক নির্বিঘেœ ঘটিয়ে চলছে এমন নারকীয় কা-। নিজেদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করা কখনই একটি সভ্য দেশের কোন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি হিসেবে হতে পারে না। একগুঁয়েমি আর অযৌক্তিক দাবি আদায় করতে বিএনপি-জামায়াত ও জামায়াতের ক্যাডার বাহিনী (শিবির) আজ আতঙ্কবাদীদের আচরণ করছে। ৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী এবং তার এ দেশীয় দোসর জামায়াত, রাজাকার-আল বদর, আল শামসসহ অন্যরা যে পৈশাচিকতা এ দেশে চালিয়েছিল ঠিক একই নারকীয় তা-ব আজ হরতালের নামে চালানো হচ্ছে দেশে। তাদের একমাত্র লক্ষ্য আওয়ামী লীগ বা স্বাধীনতার পক্ষশক্তিকে যে কোন মূল্যে ক্ষমতাচ্যুত করা।

তাদের অস্তিত্ব ও রাজনীতিকে বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের মনের শেকড় থেকে উপড়ে ফেলা। যার প্রমাণ দেয় একুশে আগস্টের ঘটনাসহ অসংখ্য পৈশাচিক কর্মকাণ্ড। জামায়াত যুদ্ধাপরাধী ও সন্ত্রাসী দল হিসেবে প্রমাণিত। তারা আজ পর্যন্ত বাংলাদেশকে স্বীকার করেনি এবং তাদের কৃতকর্মের জন্যে তারা মোটেও অনুতপ্ত নয়। এই প্রেক্ষিতেই সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসে জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা আবুল আলা মওদুদীর পুত্র সৈয়দ হায়দার ফারুক মওদুদী বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, জামায়াত এ দেশে এখনও রাজনীতি করে কিভাবে? নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী হরতাল নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবনা উপস্থাপনের আগে আলোচনা করতে হয় বিএনপির স্বরূপ।

মুক্তিযুদ্ধে জিয়ার ভূমিকা থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বিএনপির স্বরূপ মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমানের নেতিবাচক ভূমিকা পালনের বিষয়টি বিভিন্ন সূত্রে দেশ বিদেশের নানা মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য তথ্য ও প্রমাণসহ উপস্থাপিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ২৯ মে ১৯৭১ তারিখে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা শাখার সেনা কর্মকর্তা কর্নেল বেগ জিয়াকে যে চিঠিটি লিখেছিলেন (গধলড়ৎ তরধঁৎ জধযসধহ, চধশ অৎসু, উধপপধ, ডব ধৎব যধঢ়ঢ়ু রিঃয ুড়ঁৎ লড়ন. ডব সঁংঃ ংধু মড়ড়ফ লড়ন. ণড়ঁ রিষষ মবঃ হবি লড়ন ংড়ড়হ. উড়হঃ ড়িৎৎু ধনড়ঁঃ ুড়ঁৎ ভধসরষু. ণড়ঁৎ রিভব ধহফ শরফং ধৎব ভরহব. ণড়ঁ যধাব ঃড় নব সড়ৎব পধৎবভঁষ ধনড়ঁঃ সধলড়ৎ ঔধষরষ) তার বাংলা তর্জমা হলো, মেজর জিয়াউর রহমান, তোমার কাজে আমরা সবাই খুশি। আমাদের অবশ্যই বলতে হবে তুমি ভাল কাজ করছ। খুব শীঘ্রই তুমি ভাল কাজ পাবে। তোমার পরিবার নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ো না।

তোমার স্ত্রী ও বাচ্চারা ভাল আছে। তোমাকে মেজর জলিল সম্পর্কে আরও সতর্ক থাকতে হবে। এই চিঠিই প্রমাণ করে জিয়া ছিলেন পাকিস্তানের গুপ্তচর। এ সময় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বঙ্গবন্ধুর হত্যা পরিকল্পনার নায়ক খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা, হাই কমান্ডের নির্দেশ অমান্য এবং কর্তব্যে অবহেলা করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জিয়ার ভূমিকা সন্দেহজনক প্রমাণিত হওয়ায় তাকে জেড (নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে সাজানো) ফোর্সের প্রধান হিসেবে জেনারেল ওসমানীর নির্দেশে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছিল। দেখা গেছে জিয়ার নেতৃত্বে প্রতিটি অপারেশনেই শত্রুপক্ষের কাছে পর্যুদস্ত হয়ে ফিরেছে মুক্তিসেনারা।

এমন বিশ্বাস ঘাতকতার প্রমাণ পেয়ে একবার উত্তেজিত অবস্থায় ওসমানী নিজের পিস্তল দিয়ে জিয়াকে গুলি করতে উদ্যত হয়েছিলেন। সে যাত্রায় জিয়া রক্ষা পান। সে আরেক কাহিনী। এ ঘটনার কথা শোনা যায় ওসমানীর এপিএস এর কাছ থেকে, যিনি এখনও জীবিত। এখানেই থেমে থাকেননি জিয়া।

স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও জেলখানায় জাতীয় চার নেতার হত্যাকা-ে নেপথ্যে থেকে হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্র ও নানা অনিয়মের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার মসনদে আরোহণ করে পরাজিত পাকিস্তানী অপশক্তির নীল নকশা অনুযায়ী সকল এজেন্ডা দ্রুত বাস্তবায়নে তৎপর হয়ে পড়েন ধূর্ত জিয়া। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারে অন্যান্য সদস্যদের খুনীদের বিচার বন্ধে ইনডেমনিটি আইন জারির মধ্য দিয়ে সংবিধান ক্ষত-বিক্ষত করে। শাস্তির বদলে খুনীদের পুরস্কৃত করা, দালাল আইনে আটক ও সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়ে আইনটি বাতিল করা হয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের টেপ, যুদ্ধাপরাধের সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং মুক্তিযুদ্ধের সকল দলিল দস্তাবেজ ও নমুনা ধ্বংস করা, পলিটিক্যাল পারটিজ রিভাইভ্যাল এ্যাক্ট বা পিপিআর অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে নিষিদ্ধ জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতি করার সুযোগ দেয়া, কুখ্যাত নরঘাতক গোলাম আযমকে পাকিস্তান থেকে ফিরিয়ে এনে তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব উপহার দেয়া এবং স্বাধীনতা বিরোধী কুষ্টিয়ার শাহ আজিজ, রংপুরের মশিউর রহমান যাদু মিয়া এবং যুদ্ধাপরাধী বগুড়ার আবদুল আলীমকে মন্ত্রী বানানোর মতো ঘটনাগুলো কি প্রমাণ করে না জিয়াউর রহমান এবং তার দল বিএনপি স্বাধীন বাংলাদেশের মূল চেতনার বিপক্ষে পাকিস্তানের এজেন্টের কাজ করেছে? জিয়াউর রহমান জাতির মূল চেতনার বিরুদ্ধে যে কাজগুলো করে গেছেন সেই একই কর্মসূচী নিয়ে চলছেন তার স্ত্রী খালেদা জিয়া। সেই হত্যার অপরাজনীতি, আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার লক্ষ্যে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, আহসান উল্লাহ মাস্টার ও এসএএমএস কিবরিয়া হত্যাসহ অসংখ্য হত্যাকা- ঘটানো, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি, জাতীয় শোক দিবস বাতিল এবং প্রতিবছর সেই দিনে বেগম জিয়ার বানোয়াট জন্মদিনের কেক কেটে পৈশাচিক উল্লাস প্রদর্শন, পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও অফিস আদালতে বঙ্গবন্ধুর ছবি টাঙ্গানো নিষিদ্ধ করা, একমাত্র এদেশের স্বাধীনতা বিরোধী বা শত্রু পক্ষ ছাড়া আর কেউ করতে পারে না।

এসবের পাশাপাশি আরো অনেক ঘটনাই প্রমাণ করে বিএনপি জামায়াতের মতোই এ দেশে একটি স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি। তারা এ দেশের শত্রু পক্ষ। তা না হলে গোটা জাতির তীব্র ঘৃণার মুখে থু থু ফেলে পাকিস্তানের আইএসআই-এর এজেন্ট সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে দলের স্থায়ী কমিটিতে স্থান ও উপদেষ্টা হিসেবে উচ্চতর পদে নিয়োগ দিয়ে এবং আলীম, মশিউর, শাহ আজিজ, নিজামী, মুজাহিদীর মতো যুদ্ধাপরাধীদের জেনে বুঝে, মন্ত্রী করা হবে কেন? কেন যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য তাদের নিয়ে রাজনীতি করতে হবে। কেনই বা তাদের প্রকাশ্য সমর্থন দিয়ে বিচার বানচালের হুমকি প্রদান এবং দেশে বিদেশে বিচারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে হবে? বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দু’জন যুদ্ধাপরাধীর সাজা এবং দলটির জন্মলগ্ন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আলোচিত অপরাজনীতি প্রমাণ করে এটি জামায়াতের মতোই একটি সন্ত্রাসী ও যুদ্ধাপরাধীর দল। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দর্শনের সঙ্গে এই দলটির কোনই সম্পর্ক নেই।

তাদের অতীত এবং বর্তমান কার্যকলাপ নীতি, আদর্শ ও ব্যভিচারী দর্শন তাই প্রমাণ করে। এদেরই হাতে বিনষ্ট হয়েছে রাষ্ট্রের পবিত্র সংবিধান, ধ্বংস হয়েছে ভোটাধিকার, নির্বাচন, প্রশাসন, গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক বিধি ব্যবস্থা ও এর সকল প্রতিষ্ঠান। এদের ভ্রষ্টাচারে ধর্ষিত হয়েছে মানবতা। কালিমালিপ্ত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইতিহাস। এই লুটেরা দুর্নীতিবাজদের হাতে ধ্বংস হয়েছে দেশের অর্থনীতি।

এরা বাঙালী জাতির ইতিহাসে তাদের ঘৃণ্য অপকর্ম দিয়ে সৃষ্টি করেছে একটি অনপনীয় কালো অধ্যায়। এটাই প্রমাণ করে গণতন্ত্রের মুখোশ পরে থাকা এই বিএনপি গণতন্ত্রের শত্রু, মানবতার শত্রু স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জাতশত্রু। তাই আবুল আলা মওদুদীর পুত্র সৈয়দ হায়দার ফারুক মওদুদীর মতোই বিস্ময় প্রকাশ করে বলতে হয় জামায়াতের মতো অপশক্তি বিএনপি কিভাবে রাজনীতি করে স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে? কোথায় আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা? কোথায় লুকিয়ে আছে দ্রোহের আগুনে গর্জে ওঠার মতো সাহসী মানুষ, যে বা যারা চিৎকার করে বলবে, জাগো বাহে কোনঠে সবাই। আর নয় দেরি, অপশক্তির বিরুদ্ধে দ্রোহের এখনই সময়। সুখের কথা মনের ভেতর দীর্ঘকাল জমে থাকা অব্যক্ত যাতনা আর দ্রোহের আগুনে ফেটে পড়েন একজন মুনতাসীর মামুন।

তীব্র ক্ষোভ আর ঘৃণার আগুনে জ্বলে পুড়েও এতকাল যে কথা গ্রেনেড বিস্ফোরণের মতো উচ্চারণ করতে পারেনি কেউ, সেই অতি ঘৃণ্য ও উপযুক্ত শব্দটি তিনি বীরের মতো সাহসী উচ্চারণে ব্যক্ত করে এদেরকে বলেছেন জারজ। এটা যেন শামসুর রাহমানের কবিতার স্বাধীনতা শব্দটির মতোই রাতারাতি প্রিয় হওয়া একটি উৎকৃষ্ট ঘৃণ্য শব্দ ব্যঞ্জন। যেমনটি সৃষ্টি করে গেছেন হুমায়ূন আহমেদ ‘তুই রাজাকার’ অভিধা। অথচ সেই জারজদেরকেই এখনও পোষা হচ্ছে দুধ-কলা দিয়ে। তাদের করা হয়েছে দলতন্ত্রের সহযাত্রী।

জানানো হচ্ছে ঘরে ডেকে এনে রান্না করে খাওয়ানোর আমন্ত্রণ! কেন? কিসের এত দুর্বলতা? প্রতিটি ক্ষেত্রে অপশক্তির কাছে এই দুর্বলতা ও নমনীয়তার আতিশয্য দেখিয়েই নিজেদের অবস্থানকেই আমরা করে তুলেছি দুর্বলতর। তাই পশুশক্তি ও জারজরা হয়ে উঠেছে ভয়ঙ্কর মূর্তিমান আতঙ্ক। এই আতঙ্কের কাছে কখনই পরাভূত হতে পারে না রাষ্ট্র, সমাজ ও সভ্যতা। ঘুরে দাঁড়াতেই হবে দানব বধ করে। হরতালের মতো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচী দিয়ে যারা আজ পৈশাচিক খেলায় মেতে উঠেছেন, তাদের সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করতে হবে।

হরতালের নামে যা হচ্ছে, তা রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। জামায়াত-বিএনপি সেই রাষ্ট্রদ্রোহেরই কাজ করছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। এদের প্রতিরোধ করার যেন কেউ নেই। যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এদের প্রতিরোধ ও প্রতিহত করার ক্ষেত্রে মরিয়া থাকার কথা, বাস্তব তার উল্টো। এই জারজদের হাতেই মার খাচ্ছে পুলিশ ও বিজিবির সশস্ত্র সদস্যরা।

কি অদ্ভুত! যা আগে কখনও ঘটতে দেখা যায়নি। রাষ্ট্র ও জনগণকে রক্ষাকারী শক্তির ওপর দুর্বৃত্তের দুঃসাহসিক আঘাত। এটা কি একটা রাষ্ট্রশক্তিকে উপড়ে ফেলার মতো রাষ্ট্রদ্রোহ নয়? হরতাল এখন জাতীয় জীবনে ক্ষতি ছাড়া কোন ইতিবাচক ফল বয়ে আনছে না। তাই সরকারের উচিত সম্মিলিতভাবে হরতাল প্রতিরোধের জন্য সর্বস্তরের মানুষকে রাস্তায় নামার আহ্বান জানানো। আমার বিশ্বাস এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দিবে ছাত্র শিক্ষক ও অভিভাবকসহ সর্বস্তরের জনগণ।

এখনই সময় হরতালের নিষিদ্ধে গণভোট অনুষ্ঠান এবং একটি আইন পাস করার। আইন অমান্যকারীদের জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা রাখতে হবে এতে। বাাংলাদেশে এসব জারজ পশুশক্তির অপরাজনীতির কবর দিতে কাজটি দ্রুতই সম্পন্ন করা উচিত। এতে করে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার এর অনড় ও ঋজু স্তম্ভকে একটি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড়াবে। তখন যে কেউই মুখের ফুৎকারে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রকে উপড়ে ফেলার সাহস পাবে না।

এই কাজটি করতে হবে আওয়ামী লীগ সরকারকেই। যে দলটি দেশকে স্বাধীনতা, ভোটাধিকার, সুষ্ঠু নির্বাচন, মানবাধিকার উপহার দিয়ে সর্বস্তরে গণতন্ত্রকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার কাজে নিমগ্ন হয়েছে, তার হাতেই ভাসবে জাতির কল্যাণের তরী। সুত্র

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.