আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চট্টগ্রামের পাঁচ উপজেলা নাশকতার স্বর্গরাজ্য

প্রশাসনের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রামের পাঁচ উপজেলা। হরতালের আগে ও পরে, কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবিসহ বিরোধী দলের নানান ইস্যুতে এ পাঁচ উপজেলা হয়ে ওঠে নাশকতা আর ধ্বংসযজ্ঞের স্বর্গরাজ্যে। গত সাত মাসে এসব উপজেলায় ভাঙচুর ও অগি্নসংযোগসহ ছোট-বড় নাশকতার ঘটনা ঘটেছে দেড় হাজারের ওপরে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও ছাড়িয়ে গেছে পাঁচশত কোটি টাকার ওপর। নাশকতা ঠেকাতে নানান উদ্যোগ নেওয়া হলেও বার বার ব্যর্থ হয় প্রশাসনের সব প্রচেষ্টা।

প্রশাসনের নতুন নতুন প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে ওই পাঁচ উপজেলায় তারা হয়ে উঠেছে অপ্রতিরোধ্য।

নাশকতা রোধে ব্যর্থতার কারণ উল্লেখ করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, 'ঘটনার পর দুর্বল মামলা দায়ের এবং আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বার বার উৎসাহিত হয়েছে। প্রশাসনিক ব্যর্থতাকে কাজে লাগিয়ে উপজেলাগুলোতে নাশকতা সৃষ্টিকারীরা হয়ে ওঠেছে প্রতিরোধ্য। এ ছাড়া নাশকতা সৃষ্টিকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ প্রশাসনের দহরম-মহরমের অসংখ্য অভিযোগও রয়েছে। এ ছাড়া নাশকতা সৃষ্টিকারীদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার ব্যর্থতা তো রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের।

তাই ওইসব উপজেলাগুলো হয়ে উঠেছে নাশকতামূলক কার্যক্রমের অভয়ারণ্য। ' চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবদুল মান্নান বলেন, নাশকতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড কঠিন হস্তে মোকাবিলা করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও মহাসড়ক আছে এমন উপজেলাগুলোকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। নাশকতা ঠেকাতে অতিরিক্ত ফোর্সও মোতায়েন করা হয়েছে।

'

জানা যায়, হরতাল, কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদ, মুক্তি দাবি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায়ের আগে ও পরে এবং বিরোধী দলের নানান কর্মসূচিতে চট্টগ্রামের পাঁচ উপজেলা নাশকতার ধ্বংসযজ্ঞের স্বর্গ হয়ে ওঠে। উপজেলাগুলো হচ্ছে_ সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া এবং বাঁশখালী। গত সাত মাসে এসব উপজেলায় গাড়ি ভাঙচুর ও অগি্নসংযোগ, সংখ্যালঘু-আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বাড়িতে অগি্নসংযোগ ও লুঠপাট, মন্দির ভাঙচুর, উপজেলা পরিষদ কার্যালয়-আদালত ভবনে অগি্নসংযোগ, পুলিশের ওপর হামলাসহ অসংখ্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর হয়েছে। তার মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শুধু সীতাকুণ্ড উপজেলা এলাকায় ভাঙচুর হয়েছে এক হাজারের ওপরে কাভার্ড ভ্যান, ট্রাক ও বাস পোড়ানো হয়েছে শতের ওপরে গাড়ি। এই উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আড়াইশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

এসময় জেলার সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলায় ব্যাপক ধ্বংসাত্দক কার্যক্রমে মেতে ওঠে জামায়াত-শিবির। তারা চট্টগ্রাম-কঙ্বাজার মহাসড়কে ব্যারিকেড দিয়ে টানা ছয় দিন সড়ক অবরোধ করে রাখে।

নাশকতা ঠেকানোর ব্যর্থতার কথা অস্বীকার করে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, 'নাশকতা ঠেকাতে পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা কঠোর পরিশ্রম করছে। প্রশাসনের তৎপরতার কারণে পরিস্থিতি আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে। '

 

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.